শমূয়েলের দ্বিতীয় পুস্তক ১৬:১-২৩

১৬  দায়ূদ যখন পর্বতের চূড়া থেকে একটু এগিয়ে গেলেন, তখন মফীবোশতের সেবক সীবঃ তার সঙ্গে দেখা করতে এল। সীবঃ তার সঙ্গে দুটো গাধা নিয়ে এসেছিল আর সেগুলোর উপর ২০০টা রুটি, কিশমিশের ১০০টা তাল,* গ্রীষ্ম কালের ফলের* তৈরি ১০০টা তাল* এবং দ্রাক্ষারসে* ভরা একটা বড়ো পাত্র ছিল। ২  রাজা সীবঃকে জিজ্ঞেস করলেন: “তুমি কেন এসব এনেছ?” সীবঃ বলল: “এই পশুগুলো রাজার পরিবারের লোকদের জন্য, যাতে তারা এগুলোতে চড়ে যেতে পারে। রুটি এবং গ্রীষ্ম কালের ফলগুলো রাজার যুবকদের খাওয়ার জন্য। আর যদি কেউ প্রান্তরে যেতে যেতে ক্লান্ত হয়ে পড়ে, তা হলে তার জন্য দ্রাক্ষারস* রইল।” ৩  পরে, রাজা তাকে জিজ্ঞেস করলেন: “তোমার প্রভুর ছেলে* কোথায়?” সীবঃ বলল: “তিনি জেরুসালেমেই রয়েছেন কারণ তিনি বললেন, ‘আজ ইজরায়েলের পরিবার আমাকে আমার বাবার রাজ্য ফিরিয়ে দেবে।’” ৪  তখন রাজা সীবঃকে বললেন: “দেখো! মফীবোশতের যা-কিছু রয়েছে, সেই সবই আমি তোমাকে দিলাম।” সীবঃ বলল: “আমি আপনার সামনে মাথা নত করছি। হে আমার প্রভু মহারাজ, আপনি যেন সবসময় আমার প্রতি অনুগ্রহ দেখান।” ৫  রাজা দায়ূদ যখন বহুরীমে এসে পৌঁছোলেন, তখন শিমিয়ি নামে শৌলের পরিবারের একজন পুরুষ বের হয়ে এল। সে গেরার ছেলে ছিল। সে দায়ূদের দিকে এগিয়ে আসতে আসতে চিৎকার করে তাকে অভিশাপ দিতে লাগল। ৬  সে রাজা দায়ূদ, তার সমস্ত সেবক এবং তার সঙ্গে আসা লোকদের দিকে ও সেইসঙ্গে তার ডান দিকে এবং বাঁ-দিকে থাকা বীরযোদ্ধাদের দিকে পাথর ছুড়তে লাগল। ৭  শিমিয়ি এই বলে দায়ূদকে অভিশাপ দিতে লাগল: “চলে যা এখান থেকে, বেরিয়ে যা! তুই খুনি! তুই অপদার্থ! ৮  তুই শৌলের পরিবারকে খুন করেছিস, তার রাজ্য কেড়ে নিয়ে নিজে রাজা হয়েছিস। এইজন্য যিহোবা আজ তোর কাছ থেকে তাদের সবার রক্তের প্রতিশোধ নিচ্ছেন আর যিহোবা তোর ছেলে অবশালোমের হাতে রাজ্য সমর্পণ করে দিয়েছেন। তুই খুনি, এইজন্যই তোর উপর এই দুর্দশা এসেছে!” ৯  তখন সরূয়ার ছেলে অবীশয় রাজাকে বললেন: “এর এত দুঃসাহস যে, এ আমার প্রভু মহারাজকে অভিশাপ দিচ্ছে? এ তো একটা মরা কুকুর। আপনি আমাকে আদেশ দিন, আমি গিয়ে ওর মাথা কেটে ফেলব।” ১০  কিন্তু রাজা বললেন: “সরূয়ার ছেলেরা, তোমরা এই বিষয়ে জড়াচ্ছ কেন? ও অভিশাপ দিচ্ছে, দিতে দাও কারণ যিহোবাই যখন ওকে বলেছেন, ‘দায়ূদকে অভিশাপ দাও!’ তখন কে ওকে থামাতে পারবে?” ১১  তারপর, দায়ূদ অবীশয় এবং তার সমস্ত সেবককে বললেন: “আমার ছেলে, আমার নিজের ছেলে যখন আমাকে মারার জন্য উঠে-পড়ে লেগেছে, তখন বিন্যামীন বংশের এই লোকটার বিষয়ে আমি কী আর বলব! ও আমাকে অভিশাপ দিচ্ছে, দিতে দাও কারণ যিহোবাই ওকে এমনটা করতে বলেছেন! ১২  হয়তো যিহোবা আমার দুঃখ দেখবেন আর আজ আমাকে যে-অভিশাপ দেওয়া হচ্ছে, সেটার পরিবর্তে যিহোবা আমার মঙ্গল করবেন।” ১৩  এই কথা বলার পর দায়ূদ এবং তার লোকেরা এগিয়ে চললেন। শিমিয়ি সেই পর্বতের উপর দায়ূদের সঙ্গে সঙ্গে হাঁটতে থাকল আর চিৎকার করে তাকে অভিশাপ দিতে থাকল আর তার এবং তার লোকদের দিকে পাথর এবং অনেক ধুলো ছুড়তে থাকল। ১৪  অবশেষে, দায়ূদ এবং সমস্ত লোক যখন নির্ধারিত জায়গায় পৌঁছোলেন, তখন তারা একেবারে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন আর তাই তারা সেখানে বিশ্রাম করলেন। ১৫  এদিকে, অবশালোম এবং ইজরায়েলের সমস্ত লোক জেরুসালেমে পৌঁছোল। অবশালোমের সঙ্গে অহীথোফলও ছিল। ১৬  যখন দায়ূদের বন্ধু* অর্কীয় হূশয় অবশালোমের কাছে এলেন, তখন তিনি অবশালোমকে বললেন: “রাজা দীর্ঘজীবী হোন! রাজা দীর্ঘজীবী হোন!” ১৭  অবশালোম হূশয়কে বলল: “তুমি তোমার বন্ধুর সঙ্গে কেন গেলে না? এই ছিল তোমার আনুগত্য?”* ১৮  হূশয় অবশালোমকে বললেন: “আমি তো তারই পক্ষ নেব, যাকে যিহোবা, এই লোকেরা এবং ইজরায়েলের সমস্ত লোক বেছে নিয়েছেন। আমি তার সঙ্গেই থাকব। ১৯  আমি আরেক বার বলছি, আমার বন্ধুর ছেলের সেবা করা আমার কর্তব্য। যেভাবে আমি আপনার বাবার সেবা করেছিলাম, সেভাবেই আমি আপনার সেবা করব।” ২০  তখন অবশালোম অহীথোফলকে বলল: “আমাকে পরামর্শ দাও। এখন আমাদের কী করা উচিত?” ২১  অহীথোফল বলল: “তুমি তোমার বাবার সেই উপপত্নীদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করো, যাদের তিনি রাজপ্রাসাদের দেখাশোনা করার জন্য রেখে গিয়েছেন। তখন পুরো ইজরায়েল জানতে পারবে যে, তুমি তোমার বাবার অপমান করেছ আর এতে তোমার সমর্থকদের সাহস বেড়ে যাবে।” ২২  এইজন্য ছাদের উপর একটা তাঁবু খাটানো হল আর অবশালোম সেখানে পুরো ইজরায়েলের সামনে তার বাবার উপপত্নীদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করল। ২৩  ওই সময়ে অহীথোফলের পরামর্শকে সত্য ঈশ্বরের বাক্য হিসেবে মনে করা হত। দায়ূদ ও অবশালোম, দু-জনেই অহীথোফলের প্রত্যেকটা পরামর্শকে খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করতেন।

পাদটীকাগুলো

সম্ভবত, অনেক কিশমিশ চেপে তৈরি করা চাক।
বিশেষত ডুমুর আর সম্ভবত খেজুরও।
অনেক ফল চেপে তৈরি করা চাক।
বা “ওয়াইনে।”
বা “ওয়াইন।”
বা “নাতি।”
বা “আস্থাভাজন।”
বা “অটল প্রেম?”