যিশাইয় ৪৫:১-২৫

৪৫  যিহোবা, যিনি তাঁর অভিষিক্ত ব্যক্তি কোরসের ডান হাত ধরেছেন,যেন জাতিগুলোকে তার অধীনে আনতে পারেন,রাজাদের শক্তি কেড়ে নিতে* পারেন,তার সামনে দরজাগুলো খুলে দিতে পারেন,যাতে নগরের দরজাগুলো বন্ধ না থাকে,সেই ঈশ্বর তাকে এই কথা বলেন:  ২  “আমি তোমার আগে আগে যাব,আমি পাহাড়গুলোকে সমান করে দেব। আমি তামার দরজাগুলো ভেঙে টুকরো টুকরো করে দেবআর লোহার হুড়কোগুলো কেটে ফেলব।  ৩  আমি তোমাকে অন্ধকারে রাখা ধনসম্পদ দেবআর গোপন জায়গায় রাখা গুপ্তধন দেব,যাতে তুমি জানতে পার যে, আমি যিহোবা,ইজরায়েলের ঈশ্বর আর আমি তোমার নাম ধরে তোমাকে ডাকি।  ৪  আমার দাস যাকোব এবং ইজরায়েল, যাকে আমি বেছে নিয়েছি,তার জন্য আমি তোমার নাম ধরে তোমাকে ডাকছি। যদিও তুমি আমাকে জানতে না, তারপরও আমি তোমার নাম সম্মানের যোগ্য করে তুলব।  ৫  আমি যিহোবা, আমি ছাড়া আর কেউ নেই। আমি ছাড়া আর কোনো ঈশ্বর নেই। যদিও তুমি আমাকে জানতে না, তারপরও আমি তোমাকে শক্তিশালী করব,*  ৬  যাতে পূর্ব দিক থেকে পশ্চিম দিক* পর্যন্তলোকেরা জানতে পারে যে,আমি ছাড়া আর কেউ নেই। আমি যিহোবা, আমি ছাড়া আর কেউ নেই।  ৭  আমি আলো তৈরি করি এবং অন্ধকার সৃষ্টি করি,আমি শান্তি নিয়ে আসি এবং বিপর্যয় সৃষ্টি করি,আমি যিহোবা, আমিই এই সমস্ত কিছু করছি।  ৮  হে আকাশ, উপর থেকে বৃষ্টিপাত করো,মেঘগুলো যেন ন্যায়বিচার ঢেলে দেয়। পৃথিবী যেন খুলে যায় এবং সেটাতে যেন পরিত্রাণ ও ন্যায়বিচারের বীজ অঙ্কুরিত হয়এবং পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে। আমি যিহোবা, আমিই এই সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেছি।”  ৯  ধিক সেই ব্যক্তিকে, যে নিজের নির্মাতার সঙ্গে* ঝগড়া করেকারণ সে মাটির পাত্রের ভাঙা টুকরো মাত্র,যেটা অন্যান্য ভাঙা টুকরোর সঙ্গে মাটিতে পড়ে রয়েছে! মাটি কি কুমোরকে* বলবে: “তুমি কী তৈরি করছ?” কিংবা তোমার তৈরি করা কাজ কি বলবে: “তোমার হাত নেই”?* ১০  ধিক সেই ব্যক্তিকে, যে একজন বাবাকে বলে: “তুমি কীসের জন্ম দিয়েছ?” আর একজন মাকে বলে: “তুমি কীসের জন্ম দিচ্ছ?”* ১১  যিহোবা, যিনি ইজরায়েলের পবিত্র ঈশ্বর এবং যিনি তাকে গঠন করেছেন, তিনি এই কথা বলেন: “তুমি কি আমাকে ভবিষ্যতের বিষয়গুলো সম্বন্ধে প্রশ্ন জিজ্ঞেস করবেএবং আমি আমার ছেলেদের এবং আমার হাতের কাজের বিষয়ে কী করব, সেই বিষয়ে আমাকে আদেশ দেবে? ১২  আমি পৃথিবী তৈরি করেছি এবং সেটাতে মানুষকে সৃষ্টি করেছি। আমি আমার নিজের হাত দিয়ে আকাশ বিছিয়েছি,আমি সেটার সমস্ত সেনাবাহিনীকে আদেশ দিই।” ১৩  স্বর্গীয় বাহিনীর শাসক যিহোবা বলেন:“যেহেতু আমি ন্যায়পরায়ণ, তাই আমি একজন ব্যক্তিকে উঠিয়েছি আর আমি তার সমস্ত পথ সোজা করব। সে-ই আমার নগর নির্মাণ করবে আর কোনোরকম মূল্য কিংবা ঘুষ না নিয়েই বন্দিত্বে থাকা আমার লোকদের মুক্ত করবে।” ১৪  যিহোবা এই কথা বলেন: “মিশরের লাভ,* ইথিওপিয়ার জিনিসপত্র* এবং লম্বা-চওড়া সবায়ীয়েরাতোমার কাছে আসবে এবং তোমার হয়ে যাবে। তারা শিকলপরা অবস্থায় তোমার পিছন পিছন হাঁটবে। তারা আসবে এবং তোমার কাছে মাথা নত করবে। তারা শ্রদ্ধা সহকারে তোমাকে বলবে, ‘ঈশ্বর নিশ্চিতভাবেই তোমার সঙ্গে রয়েছেন,তিনি ছাড়া আর কোনো ঈশ্বর নেই, আর কেউ নেই।’” ১৫  হে ইজরায়েলের ঈশ্বর, হে ত্রাণকর্তা,সত্যিই তুমি এমন এক ঈশ্বর, যিনি নিজেকে গোপন করে রাখেন। ১৬  যারা প্রতিমা তৈরি করে, তাদের সবাইকে লজ্জিত ও অসম্মানিত করা হবে,তারা সবাই অপমানিত হয়ে চলে যাবে। ১৭  কিন্তু, হে ইজরায়েল, যিহোবা তোমাকে রক্ষা করবেন এবং তোমাকে চিরস্থায়ী পরিত্রাণ দেবেন। অনন্তকাল ধরে তোমাদের কখনো লজ্জিত কিংবা অপমানিত করা হবে না। ১৮  কারণ যিহোবা, যিনি আকাশের সৃষ্টিকর্তা, যিনি সত্য ঈশ্বর,যিনি পৃথিবীকে গঠন করেছেন, নির্মাণ করেছেন এবং দৃঢ়ভাবে স্থাপন করেছেন,যিনি সেটাকে বিনা কারণে* সৃষ্টি না করে বরং বাসস্থান হিসেবে তৈরি করেছেন,তিনি এই কথা বলেন: “আমি যিহোবা, আমি ছাড়া আর কেউ নেই। ১৯  আমি কোনো গোপন জায়গায়, অন্ধকারের দেশে কথা বলিনি,আমি যাকোবের বংশকে বলিনি,‘তোমরা আমার অনুসন্ধান করো, কিন্তু কোনো লাভ নেই।’ আমি যিহোবা, আমি ন্যায্য কথা বলি এবং সততার বিষয়গুলো ঘোষণা করি। ২০  বিভিন্ন জাতি থেকে মুক্ত হওয়া লোকেরা, তোমরা একত্রিত হয়ে এসো। তোমরা একসঙ্গে এসো। যারা খোদাই-করা মূর্তিগুলো বয়ে বেড়ায়, তারা কিছুই জানে না,তারা এমন দেবতার কাছে প্রার্থনা করে, যে তাদের রক্ষা করতে পারে না। ২১  তোমাদের মামলা পেশ করো, নিজেদের হয়ে কথা বলো। তোমরা একতাবদ্ধভাবে একসঙ্গে পরামর্শ করো। কে অনেক আগে এই বিষয়ে ভবিষ্যদ্‌বাণী করেছিলএবং অনেক আগে থেকেই এটা ঘোষণা করেছিল? আমি যিহোবাই কি করিনি? আমি ছাড়া আর কোনো ঈশ্বর নেই,আমি ছাড়া আর কোনো ন্যায়পরায়ণ ঈশ্বর এবং ত্রাণকর্তা নেই। ২২  হে পৃথিবীর সমস্ত প্রান্ত, আমার দিকে ঘোরো আর রক্ষা পাওকারণ আমিই ঈশ্বর, আমি ছাড়া আর কেউ নেই। ২৩  আমি নিজের নামে দিব্য করেছি,আমার মুখ থেকে যে-কথা বের হয়েছে, তা সত্যআর তা ফিরে আসবে না: প্রত্যেকেই আমার সামনে হাঁটু পাতবেআর প্রতিটা জিভ অনুগত থাকার দিব্য করবে ২৪  আর বলবে, ‘যিহোবা সবসময় যা সঠিক, তা-ই করেন এবং তিনি শক্তিশালী। যারা তাঁর উপর রেগে রয়েছে, তারা সবাই লজ্জিত হয়ে তাঁর কাছে আসবে। ২৫  ইজরায়েলের সমস্ত বংশ দেখতে পাবে যে, তারা যিহোবার সেবা করে সঠিক কাজই করেছেআর তারা তাঁর বিষয়ে গর্ব করবে।’”

পাদটীকাগুলো

বা “রাজাদের কোমরবন্ধনী খুলে ফেলতে।”
আক্ষ., “তোমার কোমরবন্ধনী শক্ত করে বাঁধব।”
বা “সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত।”
বা “যে যিনি তাকে গঠন করেছেন, তাঁর সঙ্গে।”
বা “যিনি তাকে গঠন করেছেন, তাঁকে।”
বা সম্ভবত, “কিংবা মাটি কি বলবে: ‘তোমার তৈরি করা এই জিনিসের হাতল নেই’?”
বা “তুমি কীসের জন্য প্রসববেদনা ভোগ করছ?”
বা সম্ভবত, “মজুরেরা।”
বা সম্ভবত, “বণিকেরা।”
বা সম্ভবত, “সেটাকে খালি থাকার জন্য।”