বিচারকর্তৃগণের বিবরণ ৫:১-৩১

 সেই দিন দবোরা অবীনোয়মের ছেলে বারকের সঙ্গে এই গান গাইলেন:  ২  “যিহোবার প্রশংসা করো! ইজরায়েলীয়েরা স্বেচ্ছায় যুদ্ধ করতে এল,তারা তাদের অঙ্গীকার* পূরণ করল।  ৩  রাজারা শোনো! শাসকেরা কান দাও! আমি যিহোবার জন্য গাইব,ইজরায়েলের ঈশ্বর যিহোবার প্রশংসায় গাইব।*  ৪  হে যিহোবা, তুমি যখন সেয়ীর থেকে বের হলে,ইদোমের এলাকা হয়ে গেলে,তখন মাটি কেঁপে উঠল, আকাশের দরজা খুলে গেলআর মেঘ থেকে মুষলধারে বৃষ্টি নেমে এল।  ৫  যিহোবার সামনে পর্বতগুলো গলে গেল,*হ্যাঁ, ইজরায়েলের ঈশ্বর যিহোবার সামনে সীনয় পর্বতও গলে গেল।  ৬  অনাতের ছেলে শম্‌গরের দিনে,যায়েলের দিনে, রাস্তাগুলো জনশূন্য হয়ে পড়ল,পথিকেরা অন্য রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে লাগল।  ৭  ইজরায়েলে গ্রামের-পর-গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল। তারপর, আমি দবোরা তাদের সাহায্য করার জন্য উঠে দাঁড়ালাম,আমি মায়ের মতো তাদের যত্ন নিলাম।  ৮  তারা নিজেদের জন্য নতুন নতুন দেবতা বেছে নিল। তখন নগরের দরজাগুলোর কাছে যুদ্ধ হল,৪০,০০০ জন ইজরায়েলীয়ের মধ্যে কারো কাছেইঢাল বা বর্শা, কিছুই ছিল না।  ৯  আমি পূর্ণ হৃদয়ে ইজরায়েলের সেনাপতিদের সঙ্গে রয়েছি,যারা তাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য লোকদের সঙ্গে এগিয়ে এল। যিহোবার প্রশংসা করো! ১০  তোমরা যারা খয়েরি রঙের গাধার পিঠে বসে থাক,উচ্চমানের আসনে বসে থাক,যারা রাস্তায় চলাফেরা কর,তোমরা সবাই মনোযোগ দাও! ১১  কুয়োর কাছে যারা পশুদের জন্য জল তোলে, তারা নিজেদের মধ্যে কথা বলছিল,তারা যিহোবার ভালো ভালো কাজের প্রশংসা করছিল,তাঁর লোকদের ভালো ভালো কাজের প্রশংসা করছিল,সেই লোকদের প্রশংসা করছিল, যারা ইজরায়েলের গ্রামগুলোতে বাস করে। তখন যিহোবার লোকেরা নগরের দরজাগুলোর কাছে গেল। ১২  জেগে ওঠো দবোরা! জেগে ওঠো! তুমি জেগে উঠে একটা গান গাও! হে অবীনোয়মের ছেলে বারক! তুমি তাড়াতাড়ি ওঠো আর তোমার বন্দিদের নিয়ে যাও। ১৩  অবশিষ্ট লোকেরা অধ্যক্ষদের কাছে এল,যিহোবার লোকেরা বীরযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আমার কাছে এল। ১৪  যারা উপত্যকায়* নামল, তারা ইফ্রয়িমের লোক। হে বিন্যামীন, তারা তোমার লোকদের সঙ্গে তোমার পিছন পিছন আসছে। মাখীর থেকে সেনাপতিরা এলআর সবূলূন থেকে সেই ব্যক্তিরা এল, যাদের কাছে সেনাবাহিনীর নিয়োগকর্তার দণ্ড থাকে।* ১৫  ইষাখরের অধ্যক্ষেরা দবোরার সঙ্গে ছিল। ইষাখর তো ছিলই, বারকও দবোরার সঙ্গে ছিল। বারক পায়ে হেঁটে উপত্যকায়* গেল,কিন্তু রূবেণের পরিবারের হৃদয় দ্বিধার মধ্যে রইল। ১৬  তুমি* দুই বোঝার* মাঝেই বসে রইলে,মেষপালকদের বাঁশির সুরেই ডুবে রইলে,রূবেণের পরিবারের হৃদয় কেবল দ্বিধাগ্রস্ত রইল। ১৭  গিলিয়দ জর্ডনের ওপারেই থাকলআর দানও জাহাজ ছেড়ে এল না। আশের সমুদ্রের ধারে হাত গুটিয়ে বসে রইল, নিজের বন্দরগুলো থেকে সে একটুও নড়ল না। ১৮  কিন্তু, সবূলূন জীবনের ঝুঁকি নিল,পর্বতে নপ্তালিও জীবনের ঝুঁকি নিল। ১৯  রাজারা এসে যুদ্ধ করল,মগিদ্দোর ঝরনার পাশে তানকেকনানের রাজারা যুদ্ধ করল। কিন্তু, তারা কোনো রুপো লুট করে নিতে পারল না। ২০  তারারা আকাশ থেকে যুদ্ধ করল,তারা নিজেদের কক্ষপথে ঘুরতে ঘুরতে সীষরার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করল। ২১  কীশোন নদী শত্রুদের ভাসিয়ে নিয়ে গেল,সেই প্রাচীন নদী, কীশোন নদী। আমি বীরযোদ্ধাদের পায়ের তলায় পিষে দিলাম। ২২  ধাবমান ঘোড়ার খুরের আঘাতে মাটি কেঁপে উঠল,তার শক্তিশালী ঘোড়াগুলো খুব জোরে দৌড়োচ্ছিল। ২৩  যিহোবার স্বর্গদূত বললেন, ‘মেরোসকে অভিশাপ দাও,সেখানকার লোকদের অভিশাপ দাও। কারণ তারা যিহোবার সাহায্য করতে এল না,তাদের বীরযোদ্ধারা যিহোবার সাহায্য করতে এল না।’ ২৪  কেনীয় হেবরের স্ত্রী যায়েল মহিলাদের মধ্যে ধন্য,তাঁবুতে বসবাসকারী সমস্ত মহিলার মধ্যে তিনি ধন্য। ২৫  সীষরা জল চাইল আর তিনি তাকে দুধ দিলেন,একটা বড়ো পাত্রে তিনি তাকে ঘন দুধ খেতে দিলেন। ২৬  তিনি হাত বাড়িয়ে তাঁবুর গোঁজ নিলেন,ডান হাত দিয়ে তিনি শ্রমিকের হাতুড়ি তুললেনআর সীষরার মাথায় এত জোরে মারলেন যে, তার মাথা ফেটে গেল,তিনি তার মাথা এফোঁড়-ওফোঁড় করে দিলেন। ২৭  সে তার পায়ে লুটিয়ে পড়ল,সে পড়ার পর আর উঠল না। হ্যাঁ, সে তার পায়েই লুটিয়ে পড়লআর সে সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করল। ২৮  জানালায় একজন মহিলা পথ চেয়ে বসে ছিল,হ্যাঁ, সীষরার মা জানালা থেকে উঁকি মেরে দেখছিল,‘ওর রথ আসতে এত দেরি হচ্ছে কেন? কেন এখনও ওর ঘোড়ার খুরের শব্দ পাচ্ছি না?’ ২৯  রাজপ্রাসাদের বিজ্ঞ মহিলারা তাকে বললআর সেও মনে মনে ভাবল, ৩০  ‘ওরা নিশ্চয়ই লুট করা জিনিস ভাগাভাগি করছে,প্রত্যেক যোদ্ধাকে নিশ্চয়ই একটি কিংবা দু-টি করে মেয়ে দেওয়া হচ্ছে। সীষরাকে রঙিন পোশাক দেওয়া হচ্ছে, হ্যাঁ, লুট করা রঙিন পোশাক। প্রত্যেক লুটকারী নিশ্চয়ই গলায় পরার জন্য রঙিন সুতোর কাজ করা পোশাক পাচ্ছে,হ্যাঁ, তারা দুটো দুটো করে পোশাক পাচ্ছে।’ ৩১  হে যিহোবা, তোমার সমস্ত শত্রু যেন এভাবেই বিনষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু, যারা তোমাকে ভালবাসে, উঠতে থাকা সূর্যের মতোই তাদের মহিমা যেন বাড়তে থাকে।” এরপর, দেশে ৪০ বছর পর্যন্ত শান্তি রইল।

পাদটীকাগুলো

আক্ষ., “তারা তাদের চুল খোলা রেখেছে।” এটা এই বিষয়টার চিহ্ন যে, তারা কোনো অঙ্গীকার করেছে।
বা “বাদ্যযন্ত্র বাজাব।”
বা সম্ভবত, “কেঁপে উঠল।”
বা “নীচু সমভূমিতে।”
বা সম্ভবত, “সেই ব্যক্তিরা এল, যারা নথি রাখার সামগ্রী সামলায়।”
বা “নীচু সমভূমিতে।”
অর্থাৎ রূবেণ।
অর্থাৎ ভার বহনকারী পশুর পিঠে রাখা বোঝা।