গল্প ৯০
কুয়োর ধারে এক মহিলার সঙ্গে
যিশু শমরিয়ায় একটা কুয়োর ধারে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য থেমেছেন। তাঁর শিষ্যরা কিছু খাবার কেনার জন্য নগরের ভিতরে গিয়েছে। যিশু যে-মহিলার সঙ্গে কথা বলছেন, তিনি জল নেওয়ার জন্য এখানে এসেছেন। যিশু তাকে বলেন: ‘আমাকে একটু জল দাও।’
এই কথা শুনে সেই মহিলা অনেক অবাক হয়ে যায়। তুমি কি জান, কেন? এর কারণ হল যিশু একজন যিহুদি এবং এই মহিলা একজন শমরীয়। আর বেশিরভাগ যিহুদি শমরীয়দের পছন্দ করে না। তারা এমনকী তাদের সঙ্গে কথাও বলে না! কিন্তু, যিশু সব ধরনের লোকেদের ভালোবাসেন। তাই তিনি বলেন: ‘তুমি যদি জানতে যে, কে তোমার কাছে জল চাইছে, তাহলে তুমিই উলটো তাঁর কাছে জল চাইতে আর তিনি তোমাকে জীবনজল দিতেন।’
‘মহাশয়,’ সেই মহিলাটি বলে ওঠে, ‘এই কুয়োটা অনেক গভীর আর আপনার কাছে কোনো বালতিও নেই। কোথা থেকে আপনি এই জীবনজল পাবেন?’
‘তুমি যদি এই কুয়োর জল খাও, তবে তোমার আবারও তৃষ্ণা পাবে,’ যিশু বলেন। ‘কিন্তু আমি যে-জল দেব, তা একজন ব্যক্তিকে অনন্তজীবন দান করতে পারে।’
‘মহাশয়,’ মহিলাটি বলে, ‘আমাকে সেই জল দিন! তাহলে আমার আর কখনোই তৃষ্ণা পাবে না। আর জল নেওয়ার জন্য আমাকে আর কখনোই এখানে আসতে হবে না।’
মহিলাটি মনে করে যে, যিশু সত্যিকারের জলের কথা বলছেন। কিন্তু আসলে তিনি ঈশ্বর এবং তাঁর রাজ্য সম্বন্ধীয় সত্যের বিষয়ে কথা বলছিলেন। এই সত্য জীবনজলের মতো। এটা একজন ব্যক্তিকে অনন্তজীবন দান করতে পারে।
যিশু এবারে সেই মহিলাকে বলেন: ‘যাও, তোমার স্বামীকে ডেকে নিয়ে এখানে ফিরে এসো।’
‘আমার তো কোনো স্বামী নেই,’ মহিলাটি উত্তর দেয়।
‘তুমি ঠিকই বলেছ,’ যিশু বলেন। ‘কারণ ইতিমধ্যে তোমার পাঁচ জন স্বামী ছিল আর এখন তুমি যার সঙ্গে বসবাস করছ, সে তোমার স্বামী নয়।’
মহিলাটি অবাক হয়ে যান কারণ এই সমস্ত কথাই সত্য। কীভাবে যিশু তা জানতে পেরেছেন? হ্যাঁ, এর কারণ হল যিশু ঈশ্বরের দ্বারা প্রেরিত সেই প্রতিজ্ঞাত ব্যক্তি আর ঈশ্বর তাঁকে এইসব তথ্য জানিয়েছেন। ঠিক সেই সময় যিশুর শিষ্যরা ফিরে আসে আর যিশুকে একজন শমরীয় মহিলার সঙ্গে কথা বলতে দেখে তারা অবাক হয়ে যায়।
এখান থেকে আমরা কী শিখতে পারি? এটা আমাদের দেখায় যে, যিশু সমস্ত জাতির লোকেদের প্রতি দয়া দেখান। আর আমাদেরও তা করা উচিত। আমাদের এইরকম মনে করা উচিত নয় যে, কোনো নির্দিষ্ট জাতির লোকেরা খারাপ। যিশু চান যেন সমস্ত ধরনের লোক সেই সত্য জানতে পারে, যা তাদেরকে অনন্তজীবনের দিকে পরিচালিত করে। আমাদেরও লোকেদের সাহায্য করতে চাওয়া উচিত, যেন লোকেরা সত্য শিখতে পারে।