পাঠ ৫
পৃথিবীর জন্য ঈশ্বরের উদ্দেশ্য কী?
১. কেন ঈশ্বর পৃথিবী সৃষ্টি করেছিলেন?
যিহোবা নারী ও পুরুষকে পৃথিবী দিয়েছিলেন। এটা আমাদের গৃহ। তাই, প্রথম মানব দম্পতি আদম ও হবাকে স্বর্গে বংশ বিস্তার করার জন্য সৃষ্টি করা হয়নি, কারণ ঈশ্বর স্বর্গে বসবাস করার জন্য ইতিমধ্যেই স্বর্গদূতদের সৃষ্টি করেছিলেন। (ইয়োব ৩৮:৪, ৭) এর পরিবর্তে, ঈশ্বর প্রথম মানুষকে নিয়ে এদন উদ্যান নামে এক চমৎকার পরমদেশে রেখেছিলেন। (আদিপুস্তক ২:১৫-১৭) যিহোবা তাকে এবং তার ভাবী বংশধরদেরকে পৃথিবীতে অনন্তকাল জীবন উপভোগ করার প্রত্যাশা দিয়েছিলেন।—পড়ুন, গীতসংহিতা ৩৭:২৯; ১১৫:১৬.
প্রথমে, শুধু এদন উদ্যানই পরমদেশ ছিল। প্রথম মানব দম্পতির তাদের বংশধর দিয়ে পৃথিবী পরিপূর্ণ করার কথা ছিল। পরিশেষে, তাদের পুরো পৃথিবীকে বশীভূত করার এবং এটাকে এক পরমদেশ করে তোলার কথা ছিল। (আদিপুস্তক ১:২৮) পৃথিবী কখনো ধ্বংস হবে না। এটি সবসময়ই মানবজাতির গৃহ হিসেবে থাকবে।—পড়ুন, গীতসংহিতা ১০৪:৫.
কেন ঈশ্বর পৃথিবী সৃষ্টি করেছিলেন? শিরোনামের ভিডিওটা দেখুন।
২. কেন পৃথিবী এখন পরমদেশ নয়?
আদম ও হবা ঈশ্বরের অবাধ্য হয়েছিল, তাই যিহোবা তাদেরকে সেই উদ্যান থেকে বের করে দিয়েছিলেন। পরমদেশ হারিয়ে গিয়েছিল আর কোনো মানুষই সেটাকে পুনর্স্থাপিত করতে পারেনি। বাইবেল বলে: “পৃথিবী দুর্জ্জনের হস্তে সমর্পিত হইয়াছে।”—ইয়োব ৯:২৪.—পড়ুন, আদিপুস্তক ৩:২৩, ২৪.
যিহোবা কি মানবজাতির জন্য তাঁর আদি উদ্দেশ্য পরিপূর্ণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন? না! তিনি হলেন সর্বশক্তিমান। তিনি ব্যর্থ হতে পারেন না। (যিশাইয় ৪৫:১৮) তিনি মানবজাতিকে আবারও সেই পর্যায়ে নিয়ে যাবেন, যেমনটা তিনি চেয়েছিলেন।—পড়ুন, গীতসংহিতা ৩৭:১১, ৩৪.
৩. পরমদেশ কীভাবে পুনর্স্থাপিত হবে?
পৃথিবীতে সেই সময়ে পরমদেশ পুনর্স্থাপিত হবে, যখন যিশু ঈশ্বরের রাজা হিসেবে শাসন করবেন। আরমাগিদোন নামে এক যুদ্ধে যিশু ঈশ্বরের দূতদেরকে, সেই সমস্ত ব্যক্তিদের ধ্বংস করে দেওয়ায় নেতৃত্ব দেবেন, যারা ঈশ্বরের বিরোধিতা করে। এরপর, যিশু ১,০০০ বছরের জন্য শয়তানকে বন্দি করে রাখবেন। ঈশ্বরের লোকেরা ধ্বংস থেকে রক্ষা পাবে, কারণ যিশু তাদেরকে পরিচালনা দেবেন এবং সুরক্ষা করবেন। তারা পৃথিবীতে পরমদেশে অনন্তজীবন উপভোগ করবে।—পড়ুন, প্রকাশিত বাক্য ২০:১-৩; ২১:৩, ৪.
৪. কখন দুঃখকষ্ট শেষ হবে?
কখন ঈশ্বর পৃথিবী থেকে মন্দতা দূর করে দেবেন? যিশু একটা “চিহ্ন” দিয়েছিলেন, যা নির্দেশ করবে যে, কখন শেষ নিকটে। বর্তমান জগতের পরিস্থিতি মানবজাতির অস্তিত্বের জন্য হুমকি স্বরূপ ও সেইসঙ্গে এগুলো দেখায় যে, আমরা এখন ‘যুগান্তে’ বাস করছি।—পড়ুন, মথি ২৪:৩, ৭-১৪, ২১, ২২.
স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে ১,০০০ বছর শাসনের সময় যিশু সমস্ত দুঃখকষ্টের শেষ নিয়ে আসবেন। (যিশাইয় ৯:৬, ৭; ১১:৯) রাজা হিসেবে দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি যিশু একজন মহাযাজক হিসেবে কাজ করবেন এবং সেইসমস্ত ব্যক্তিদের পাপ দূর করে দেবেন, যারা ঈশ্বরকে ভালোবাসে। এভাবে, যিশুর মাধ্যমে ঈশ্বর অসুস্থতা, বার্ধক্য এবং মৃত্যু দূর করে দেবেন।—পড়ুন, যিশাইয় ২৫:৮; ৩৩:২৪.
৫. কারা ভাবী পরমদেশে বাস করবে?
যে-লোকেরা ঈশ্বরের বাধ্য, তারা পরমদেশে বাস করবে। (১ যোহন ২:১৭) যিশু, নম্র লোকেদের খুঁজে বের করার এবং তারা কীভাবে ঈশ্বরের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠতে পারে, সেই বিষয়ে শিক্ষা দেওয়ার জন্য তাঁর অনুসারীদেরকে পাঠিয়েছিলেন। বর্তমানে, যিহোবা পৃথিবীতে ভাবী পরমদেশে জীবন উপভোগ করার জন্য লক্ষ লক্ষ লোককে প্রস্তুত করছেন। (সফনিয় ২:৩) যিহোবার সাক্ষিদের কিংডম হলে, লোকেরা আরও উত্তম স্বামী ও পিতা এবং আরও উত্তম স্ত্রী ও মা হওয়ার জন্য শিক্ষা লাভ করে থাকে। সন্তান ও বাবা-মায়েরা একত্রে উপাসনা করে এবং সুসমাচার থেকে কীভাবে উপকার লাভ করতে পারে, সেই সম্বন্ধে শিক্ষা পেয়ে থাকে।—পড়ুন, মীখা ৪:১-৪.