এটা আমাদের উপাসনার স্থান
“তোমার গৃহনিমিত্তক উদ্যোগ আমাকে গ্রাস করিবে।”—যোহন ২:১৭.
১, ২. (ক) অতীতে যিহোবার দাসেরা কোথায় তাঁর উপাসনা করেছে? (খ) যিরূশালেমে অবস্থিত যিহোবার মন্দির সম্বন্ধে যিশুর কেমন অনুভূতি ছিল? (গ) এই প্রবন্ধে আমরা কী আলোচনা করব?
অতীত কাল থেকে ঈশ্বরের দাসেরা সবসময় সত্য উপাসনার জন্য স্থান প্রস্তুত করেছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, হেবল যখন যিহোবার কাছে বলি উৎসর্গ করেছিলেন, তখন তিনি হয়তো একটা যজ্ঞবেদি নির্মাণ করেছিলেন। (আদি. ৪:৩, ৪) নোহ, অব্রাহাম, ইস্হাক, যাকোব এবং মোশিও যজ্ঞবেদি নির্মাণ করেছিলেন। (আদি. ৮:২০; ১২:৭; ২৬:২৫; ৩৫:১; যাত্রা. ১৭:১৫) পরবর্তী সময়ে, যিহোবা ইস্রায়েলীয়দের একটা আবাস নির্মাণ করতে বলেছিলেন। (যাত্রা. ২৫:৮) তারপর, তিনি তাদের একটা মন্দির নির্মাণ করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছিলেন। (১ রাজা. ৮:২৭, ২৯) বাবিলের নির্বাসন থেকে ফিরে আসার পর, ঈশ্বরের লোকেরা নিয়মিতভাবে বিভিন্ন সমাজগৃহে মিলিত হতো। (মার্ক ৬:২; যোহন ১৮:২০; প্রেরিত ১৫:২১) আর প্রাথমিক খ্রিস্টানরা ভাই-বোনদের বাড়িতে মিলিত হতো। (প্রেরিত ১২:১২; ১ করি. ১৬:১৯) বর্তমানে, বিশ্বজুড়ে যিহোবার লোকেরা হাজার হাজার কিংডম হলে মিলিত হয়, যেখানে তারা যিহোবা সম্বন্ধে শিক্ষালাভ করে এবং তাঁর উপাসনা করে।
২ যিরূশালেমে অবস্থিত যিহোবার মন্দিরের প্রতি যিশুর গভীর সম্মান ছিল। মন্দিরের জন্য যিশুর প্রেম দেখে তাঁর শিষ্যরা গীতরচকের এই কথাগুলো মনে করতে পেরেছিলেন: “তোমার গৃহনিমিত্তক উদ্যোগ আমাকে গ্রাস করিয়াছে।” (গীত. ৬৯:৯; যোহন ২:১৭) যিরূশালেমের মন্দিরকে যে-অর্থে “সদাপ্রভুর গৃহ” বলা হতো, একটা কিংডম হল ঠিক তা নয়। (২ বংশা. ৫:১৩, ১৪; ৩৩:৪) তা সত্ত্বেও, আমাদের উপাসনার স্থানের প্রতি আমাদের গভীর সম্মান থাকা উচিত। এই প্রবন্ধে আমরা বাইবেলের সেই নীতিগুলো আলোচনা করব, যেগুলো আমাদের শিক্ষা দেয়, কিংডম হলে থাকার সময় আমাদের কেমন আচরণ করা উচিত, কীভাবে আমাদের এই কিংডম হলের যত্ন নেওয়া উচিত এবং কীভাবে আমরা এই হলের খরচ মেটাতে সাহায্য করতে পারি। *
আমরা আমাদের সভাগুলোর প্রতি সম্মান দেখাই
৩-৫. কিংডম হলে কী হয় আর আমাদের সভাগুলোর বিষয়ে আমাদের কেমন অনুভূতি থাকা উচিত?
৩ একটা কিংডম হল হচ্ছে সেই প্রধান স্থান, যেখানে লোকেরা যিহোবার উপাসনা করার জন্য মিলিত হতে পারে। সভাগুলো হচ্ছে ঈশ্বরের কাছ থেকে এক দান আর এই সভাগুলো তাঁর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে শক্তিশালী করে। তাঁর সংগঠন সভাগুলোর মাধ্যমে আমাদের প্রয়োজনীয় উৎসাহ ও নির্দেশনা প্রদান করে। প্রতি সপ্তাহে “প্রভুর [ঈশ্বরের] মেজ” থেকে খাদ্য গ্রহণ করার জন্য যিহোবা ও তাঁর পুত্রের কাছ থেকে আমন্ত্রণ পাওয়া সম্মানের ব্যাপার। (১ করি. ১০:২১) এই আমন্ত্রণ কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা আমরা কখনো ভুলে যাব না।
৪ যিহোবা আমাদের স্পষ্টভাবে একটা বিষয় জানান আর তা হল, তিনি চান যেন আমরা তাঁকে উপাসনা করার জন্য এবং পরস্পরকে উৎসাহিত করার জন্য সভাতে উপস্থিত থাকি। (পড়ুন, ইব্রীয় ১০:২৪, ২৫.) আমরা যেহেতু যিহোবাকে সম্মান করি, তাই আমরা কখনো অত্যন্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সভা বাদ দেব না। আমরা যখন সভার জন্য প্রস্তুতি নিই এবং তাতে অংশ নেওয়ার জন্য আগ্রহ সহকারে অপেক্ষা করি, তখন আমরা আমাদের সভাগুলোর জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি।—গীত. ২২:২২.
৫ আমরা সভাগুলোতে যেভাবে আচরণ করি এবং যেভাবে আমাদের কিংডম হলের যত্ন নিই, সেটা প্রকাশ করে, আমরা যিহোবাকে কতটা সম্মান করি। আমরা চাই যেন আমাদের আচরণ যিহোবার নামের প্রশংসা নিয়ে আসে, যে-নামটা সাধারণত আমাদের কিংডম হলের সাইনবোর্ডে দেখা যায়।—তুলনা করুন, ১ রাজা. ৮:১৭.
৬. যারা আমাদের কিংডম হল দেখেছে এবং সভাতে এসেছে, তারা কী বলেছে? (শুরুতে দেওয়া ছবিটা দেখুন।)
৬ আমরা যখন আমাদের কিংডম হলের প্রতি সম্মান দেখাই, তখন অন্য লোকেরা তা লক্ষ করে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, তুরস্কের একজন ব্যক্তি বলেছিলেন: “কিংডম হলের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সুশৃঙ্খলা দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। সেখানে লোকেরা পরিপাটি পোশাক-আশাক পরে ছিল, তাদের মুখে হাসি ছিল আর তারা আমাকে আন্তরিকভাবে অভ্যর্থনা জানিয়েছিল। এগুলো আমাকে মুগ্ধ করেছিল।” এরপর সেই ব্যক্তি প্রত্যেকটা সভাতে আসতে শুরু করেছিলেন এবং অল্পসময়ের মধ্যেই বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন। ইন্দোনেশিয়ার একটা শহরে, ভাইয়েরা তাদের নতুন কিংডম হল দেখার জন্য তাদের প্রতিবেশীদের, শহরের মেয়রকে এবং অন্যান্য কর্মকর্তাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। মেয়র সেই বিল্ডিংয়ের নির্মাণকাজের গুণগত মান, এটার নকশা এবং অপূর্ব বাগান দেখে অভিভূত হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন: “এই হলের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা প্রমাণ দেয়, আপনারা সত্যিই ঈশ্বরকে বিশ্বাস করেন।”
৭, ৮. আমরা যখন কিংডম হলে থাকি, তখন আমরা কীভাবে যিহোবার প্রতি আমাদের সম্মান প্রকাশ করি?
৭ যিহোবাই আমাদেরকে সভাগুলোতে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান এবং তিনি সেখানে আমাদের বেশভূষা ও আচরণ লক্ষ করেন। তাই আমরা এই ক্ষেত্রগুলোতে চরমে যাওয়া এড়িয়ে চলি। অন্যদিকে, আমরা কথাবার্তা ও আচরণের ক্ষেত্রে অতিমাত্রায় নিয়মনিষ্ঠ নই, আবার এখানে আমরা একেবারে ঘরোয়া ও হালকা পরিবেশেও থাকি না। এটা ঠিক যে, যিহোবা চান যেন আমরা কিংডম হলে স্বচ্ছন্দবোধ করি আর সেইসঙ্গে আমরা যাদের আমন্ত্রণ জানাই, তারাও স্বচ্ছন্দবোধ করে। তবে আমরা কোনোভাবেই আমাদের সভার প্রতি অসম্মান দেখাতে চাই না। এই কারণে আমরা অপরিপাটি কিংবা ক্যাজুয়াল বা ঘরোয়া পোশাক-আশাক পরি না। এ ছাড়া, আমরা এই ব্যাপারে সতর্ক থাকি, যেন আমরা সভার সময় টেক্সট উপ. ৩:১.
মেসেজ না পাঠাই, অন্যদের সঙ্গে কথা না বলি অথবা খাওয়া-দাওয়া না করি। আর বাবা-মায়েদের তাদের সন্তানদের শিক্ষা দেওয়া উচিত, যেন তারা কিংডম হলে দৌড়াদৌড়ি অথবা খেলাধুলা না করে।—৮ যিশু যখন ঈশ্বরের মন্দিরে লোকেদের ব্যাবসা করতে দেখেছিলেন, তখন তিনি রেগে গিয়েছিলেন এবং তাদের বের করে দিয়েছিলেন। (যোহন ২:১৩-১৭) আমাদের কিংডম হলে আমরা যিহোবার উপাসনা করি এবং তাঁর সম্বন্ধে শিক্ষালাভ করি। তাই এখানে থাকার সময়, কোনো ব্যাবসায়িক কাজ করা উপযুক্ত নয়।—তুলনা করুন, নহিমিয় ১৩:৭, ৮.
আমরা কিংডম হল নির্মাণে সাহায্য করি
৯, ১০. (ক) যিহোবার লোকেদের কিংডম হল নির্মাণকাজ কীভাবে পরিচালিত হয় আর এর ফল কী হয়েছে? (খ) যে-মণ্ডলীগুলোর নিজেদের কিংডম হলের নির্মাণখরচ বহন করার সাধ্য নেই, সেই মণ্ডলীগুলোকে যিহোবার সংগঠন কীভাবে সাহায্য করে?
৯ বিশ্বজুড়ে যিহোবার লোকেরা কিংডম হল নির্মাণ করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করে। স্বেচ্ছাসেবকরা সেগুলোর নকশা, নির্মাণ ও পুনর্সংস্কার করে থাকে। ফল স্বরূপ, বিগত ১৫ বছরে আমরা বিশ্বজুড়ে ২৮,০০০টা সুন্দর কিংডম হল নির্মাণ করেছি অর্থাৎ আমরা গড়ে প্রতিদিন প্রায় ৫টা করে কিংডম হল নির্মাণ করেছি।
১০ যেখানে প্রয়োজন সেখানে কিংডম হল নির্মাণে সাহায্য করার জন্য যিহোবার সংগঠন স্বেচ্ছাসেবকদের নিযুক্ত করে এবং সংগঠন যে-দান পায়, তা ব্যবহার করে। আমরা বাইবেলের এই নীতি অনুসরণ করি, যাদের বেশি রয়েছে, তারা সেই ব্যক্তিদের সাহায্য করতে পারে, যাদের যথেষ্ট নেই। (পড়ুন, ২ করিন্থীয় ৮:১৩-১৫.) এর ফল কী হয়েছে? এমন অনেক মণ্ডলীর জন্য কিংডম হল নির্মাণ করা হয়েছে, যে-মণ্ডলীগুলোর হলের নির্মাণখরচ বহন করার সাধ্য ছিল না।
১১. একটা মণ্ডলীর ভাইয়েরা তাদের নতুন কিংডম হল সম্বন্ধে কী বলেছিলেন আর তা শুনে আপনার কেমন লাগে?
১১ কস্টা রিকার একটা মণ্ডলী থেকে ভাইয়েরা লিখেছিলেন: “আমরা যখন আমাদের কিংডম হলের সামনে দাঁড়াই, তখন আমাদের মনে হয় যেন স্বপ্ন দেখছি! আমরা বিশ্বাসই করতে পারি না। আমাদের এই অপূর্ব হলের সম্পূর্ণ নির্মাণকাজ মাত্র আট দিনে করা হয়েছিল! যিহোবার আশীর্বাদ, তাঁর সংগঠনের ব্যবস্থাপনা এবং আমাদের প্রিয় ভাই-বোনদের সহযোগিতার ফলেই তা সম্ভবপর হয়েছিল। উপাসনার এই স্থান সত্যিই এক অমূল্য উপহার অর্থাৎ একটা রত্নের মতো, যা যিহোবা আমাদের দিয়েছেন। এই হল পেয়ে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত।” যিহোবা আমাদের ভাই-বোনদের জন্য যা-কিছু করেছেন, সেটার জন্য তারা যখন তাঁকে ধন্যবাদ জানায়, তখন আমরাও সত্যিকার অর্থে আনন্দিত হই। আর এভাবে সারা পৃথিবীতে ভাই-বোনেরা নিজেদের একটা কিংডম হল পেতে পারে, এটা জেনেও আমরা আনন্দিত হই। এটা স্পষ্ট যে, কিংডম হল নির্মাণকাজে যিহোবার আশীর্বাদ রয়েছে কারণ সেগুলোর নির্মাণ শেষ হওয়ার পর পরই, আগের চেয়ে বেশি লোক যিহোবা সম্বন্ধে শেখার জন্য সভাতে যোগ দিতে শুরু করে।—গীত. ১২৭:১.
১২. কীভাবে আপনি কিংডম হল নির্মাণে সাহায্য করতে পারেন?
১২ কীভাবে আপনি কিংডম হল নির্মাণে সাহায্য করতে পারেন? আপনি হয়তো স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যাত্রা. ২৫:২; ২ করি. ৯:৭.
সেই কাজে সাহায্য করতে পারেন। আর আমরা সবাই কিংডম হল নির্মাণের জন্য অর্থ দান করতে পারি। এই কাজে সমর্থন করার জন্য আমরা যখন যথাসাধ্য করি, তখন আমরা দান করার আনন্দ লাভ করি আর এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, আমরা যিহোবার প্রশংসা করি। আমরা বাইবেলের সময়ে ঈশ্বরের লোকেদের উদাহরণ অনুকরণ করি, যারা তাদের উপাসনার স্থান নির্মাণের জন্য দান করার ব্যাপারে আগ্রহী ছিল।—আমরা আমাদের কিংডম হল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখি
১৩, ১৪. বাইবেল থেকে আমরা কী জানতে পারি, যা দেখায়, আমাদের কিংডম হলকে অবশ্যই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি রাখতে হবে?
১৩ যিহোবা হলেন একজন শুচি এবং পবিত্র ঈশ্বর। তিনি হলেন একজন সুশৃঙ্খল ঈশ্বর। তাই আমাদের কিংডম হলকে অবশ্যই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি রাখতে হবে। (পড়ুন, ১ করিন্থীয় ১৪:৩৩, ৪০.) আর আমরা যদি যিহোবার মতো শুচি ও পবিত্র হতে চাই, তাহলে আমাদের উপাসনা, চিন্তাভাবনা এবং কাজকে শুচি রাখার পাশাপাশি আমাদের দেহকেও শুচি রাখতে হবে।—প্রকা. ১৯:৮.
১৪ আমরা যখন আমাদের কিংডম হল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি রাখি, তখন আমরা সন্তুষ্ট মন নিয়ে আমাদের সভাগুলোতে লোকেদের আমন্ত্রণ জানাতে পারি। আর এর ফলে লোকেরা দেখতে পাবে, আমরা এক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন নতুন জগৎ সম্বন্ধে যা প্রচার করি, তা আমরা সত্যিই কাজে লাগাই। তারা এটাও বুঝতে পারবে, আমরা একজন পবিত্র ও শুচি ঈশ্বরের সেবা করি, যিনি এই পৃথিবীকে এক অপূর্ব পরমদেশে পরিণত করবেন।—যিশা. ৬:১-৩; প্রকা. ১১:১৮.
১৫, ১৬. (ক) কেন কিংডম হল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা সবসময় সহজ নয় কিন্তু কেন আমাদের তা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে? (খ) আপনাদের কিংডম হলের পরিষ্কার কাজ কীভাবে সংগঠিত করা হয় আর আমাদের সকলের কোন বিশেষ সুযোগ রয়েছে?
১৫ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সম্বন্ধে লোকেদের ভিন্ন
ভিন্ন মতামত রয়েছে। কেন? এর কারণ হতে পারে, তারা যে-পরিবেশে মানুষ হয়েছে, সেই পরিবেশ। এ ছাড়া, কেউ কেউ ধুলোবালিপূর্ণ এলাকায় বাস করে, আবার কেউ কেউ এমন জায়গায় বাস করে, যেখানে নোংরা এবং কাঁচা রাস্তাঘাট রয়েছে। অন্যদের কাছে যথেষ্ট জল অথবা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার সামগ্রী নেই। কিন্তু, আমরা যেখানেই বাস করি না কেন আর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সম্বন্ধে আমাদের এলাকার লোকেরা যা-ই মনে করুক না কেন, আমাদের কিংডম হলকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি রাখা উচিত। এটা হচ্ছে সেই স্থান, যেখানে আমরা যিহোবার উপাসনা করি।—দ্বিতীয়. ২৩:১৪.১৬ আমরা যদি আমাদের কিংডম হলকে যথাসম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চাই, তাহলে আমাদের সংগঠিত উপায়ে কাজ করতে হবে। প্রাচীনরা মণ্ডলীর পরিষ্কার কাজের জন্য একটা তালিকা তৈরি করেন এবং মণ্ডলীতে সবসময় যথেষ্ট পরিমাণে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার সামগ্রী ও সরঞ্জাম রয়েছে কি না, সেই বিষয়টা খেয়াল রাখেন। এ ছাড়া, কোনো পরিষ্কার কাজ করার সময় কোনো কিছু যেন বাদ পড়ে না যায়, সেই বিষয়টাও প্রাচীনরা দেখাশোনা করেন। কিছু কাজ হয়তো প্রতিটা সভার পরে করতে হয়, আবার অন্যগুলো হয়তো মাঝে মাঝে করতে হয়। আমাদের কিংডম হল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজে অংশ নেওয়ার বিশেষ সুযোগ আমাদের সকলের রয়েছে।
আমরা আমাদের কিংডম হলের যত্ন নিয়ে থাকি
১৭, ১৮. (ক) অতীতে যিহোবার লোকেরা যেভাবে মন্দিরের যত্ন নিত, তা থেকে আমরা কী শিখতে পারি? (খ) কেন আমাদের কিংডম হলের যত্ন নিতে হবে?
১৭ এ ছাড়া, আমরা প্রয়োজনীয় যেকোনো মেরামত কাজ করি আর এভাবে আমাদের কিংডম হলকে সবসময় উত্তম অবস্থায় রাখি। অতীতে যিহোবার দাসেরা একই বিষয় করত। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, যিহূদার রাজা যিহোয়াশের রাজত্বকালে লোকেরা মন্দিরের জন্য অর্থ দান করেছিল। সেই রাজা যাজকদের আদেশ দিয়েছিলেন, যেন তারা এই অর্থ দিয়ে মন্দিরের যেকোনো ভগ্ন স্থান মেরামত করেন। (২ রাজা. ১২:৪, ৫) এ ছাড়া, এই ঘটনার ২০০ বছরেরও বেশি সময় পর, রাজা যোশিয় মন্দির মেরামত করার জন্য মন্দিরের দান ব্যবহার করেছিলেন।—পড়ুন, ২ বংশাবলি ৩৪:৯-১১.
১৮ কোনো কোনো শাখা কমিটি এটা লক্ষ করেছে, তাদের দেশের লোকেরা বিল্ডিং অথবা যন্ত্রপাতি উত্তম অবস্থায় রাখে না। এর কারণ হতে পারে, কীভাবে মেরামত কাজ করতে হয়, তা এসব দেশের খুব অল্প লোকই জানে। অথবা মেরামত কাজের জন্য তাদের কাছে হয়তো যথেষ্ট অর্থ থাকে না। কিন্তু, আমরা যদি আমাদের কিংডম হলের প্রয়োজনীয় মেরামত কাজ না করি, তাহলে আমাদের হলের অবস্থা খারাপ হতে শুরু করবে আর লোকেরা তা দেখতে পাবে। এই কিংডম হল তাদের কাছে উত্তম সাক্ষ্য দেবে না। অন্যদিকে, আমরা যখন আমাদের কিংডম হলের যত্ন নেওয়ার জন্য যথাসাধ্য করি, তখন আমরা যিহোবার প্রশংসা নিয়ে আসি এবং আমাদের ভাই-বোনদের কাছ থেকে পাওয়া দান উপযুক্তভাবে ব্যবহার করে খরচ বাঁচিয়ে থাকি।
১৯. আপনারা যেখানে যিহোবার উপাসনা করেন, সেই স্থানের প্রতি সম্মান দেখানোর জন্য আপনারা কী করতে পারেন?
১৯ কিংডম হল হচ্ছে এমন একটা স্থান, যেটা যিহোবার উদ্দেশে উৎসর্গ করা হয়। এটা কোনো ব্যক্তির অথবা কোনো মণ্ডলীর সম্পত্তি নয়। এই প্রবন্ধে আমরা যেমন আলোচনা করেছি, আমরা যে-স্থানে ঈশ্বরের উপাসনা করি, সেই স্থানের প্রতি সঠিক মনোভাব বজায় রাখার জন্য বাইবেলের বিভিন্ন নীতি আমাদের সাহায্য করবে। আমরা যেহেতু যিহোবাকে সম্মান করি, তাই আমরা আমাদের সভাগুলোর প্রতি আর সেইসঙ্গে আমাদের কিংডম হলের প্রতি সম্মান দেখিয়ে থাকি। আমরা কিংডম হল তৈরি করার জন্য দান দিয়ে আনন্দিত হই এবং সেগুলোর যত্ন নেওয়ার ও সেগুলোকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য কঠোর পরিশ্রম করি। যিশুর মতো আমরাও সেই স্থানের জন্য আমাদের উদ্যোগ ও সম্মান দেখিয়ে থাকি, যে-স্থানে আমরা যিহোবার উপাসনা করি।—যোহন ২:১৭.
^ অনু. 2 এই প্রবন্ধে কিংডম হল সম্বন্ধে আলোচনা করা হয়েছে। তবে আমরা যা আলোচনা করব, সেগুলো সম্মেলন হল ও সেইসঙ্গে যিহোবার উপাসনার জন্য ব্যবহৃত অন্যান্য স্থানের প্রতিও প্রযোজ্য।