সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

ঈশ্বরের প্রশংসা করার জন্য একতাবদ্ধভাবে নির্মাণ কাজ করা

ঈশ্বরের প্রশংসা করার জন্য একতাবদ্ধভাবে নির্মাণ কাজ করা

ঈশ্বরের প্রশংসা করার জন্য একতাবদ্ধভাবে নির্মাণ কাজ করা

 সলোমন দ্বীপপুঞ্জের একটা দ্বীপে লোকেরা যিহোবার সাক্ষিদের একটা নতুন কিংডম হল লক্ষ করছিল। একজন ভদ্রমহিলা বলেছিলেন: “আমাদের গির্জার অর্থ তহবিলের জন্য অনেকভাবে অর্থ সংগ্রহ করা হয়। আমরা আমাদের সদস্যদের অর্থ দান করতে বলি কিন্তু তবুও একটা নতুন গির্জা নির্মাণ করার জন্য আমাদের যথেষ্ট তহবিল নেই। আপনারা সাক্ষিরা কীভাবে আপনাদের অর্থ পান?” যে-সাক্ষির সঙ্গে তিনি কথা বলছিলেন, সেই সাক্ষি উত্তর দিয়েছিলেন: “আমরা বিশ্বব্যাপী এক পরিবার হিসেবে যিহোবার উপাসনা করি। সারা পৃথিবীতে আমাদের মণ্ডলী এবং আমাদের ভাইবোনেরা নতুন কিংডম হলের জন্য প্রয়োজনীয় বিষয় দান করেছে। যিহোবা আমাদেরকে সমস্ত বিষয়ে একতাবদ্ধ হতে শিখিয়েছেন।”

আপনি যিহোবার সাক্ষিদের সমস্ত কাজকর্মে একতা দেখতে পাবেন, যার অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে হাজার হাজার কিংডম হল নির্মাণ করা। এই প্রকল্পগুলোর কাজ সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে এই ধরনের একতা নতুন কিছু নয়। হাজার হাজার বছর ধরে, ঈশ্বরের লোকেদের মধ্যে এই একতা বিদ্যমান। কেন তা বলা যেতে পারে?

আবাস ও মন্দির নির্মাণ করা

৩,৫০০ বছরেরও বেশি সময় আগে, ইস্রায়েল জাতি সম্বন্ধে যিহোবা মোশিকে বলেছিলেন: “তাহারা আমার নিমিত্তে এক ধর্ম্মধাম নির্ম্মাণ করুক।” (যাত্রাপুস্তক ২৫:৮) এই নির্মাণ প্রকল্পের নকশা সম্বন্ধে যিহোবা আরও বলেছিলেন: “আবাসের ও তাহার সকল দ্রব্যের যে আদর্শ আমি তোমাকে দেখাই, তদনুসারে তোমরা সকলই করিবে।” (যাত্রাপুস্তক ২৫:৯) এরপর যিহোবা ধর্মধামের কাঠামো, আসবাবপত্রাদি ও আনুষঙ্গিক সামগ্রীর জন্য পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ জুগিয়েছিলেন। (যাত্রাপুস্তক ২৫:১০–২৭:১৯) এই ‘আবাস’ অথবা তাঁবু সমস্ত ইস্রায়েলের জন্য সত্য উপাসনার কেন্দ্র হওয়ার কথা ছিল।

এই প্রকল্পে কতজন লোক কাজ করেছিল তা আমরা জানি না কিন্তু সমর্থন করার জন্য সমস্ত ইস্রায়েলীয়কে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। মোশি তাদের বলেছিলেন: “তোমরা সদাপ্রভুর নিমিত্তে আপনাদের নিকট হইতে উপহার লও; যে কেহ মনে ইচ্ছুক, সে সদাপ্রভুর উপহারস্বরূপ এই সকল দ্রব্য আনিবে।” (যাত্রাপুস্তক ৩৫:৪-৯) ইস্রায়েলীয়রা কীভাবে সাড়া দিয়েছিল? যাত্রাপুস্তক ৩৬:৩ পদ বলে: “তাহাতে তাঁহারা পবিত্র স্থানের কার্য্যের উপাদান সম্পন্ন করণার্থে ইস্রায়েল-সন্তানগণের আনীত সমস্ত উপহার মোশির নিকট হইতে গ্রহণ করিলেন। আর লোকেরা তখনও প্রতি-প্রভাতে তাঁহার নিকটে ইচ্ছাপূর্ব্বক আরও দ্রব্য আনিতেছিল।”

শীঘ্রই প্রচুর পরিমাণ দানকৃত দ্রব্য স্তূপীকৃত হয় আর লোকেরা আরও দ্রব্য আনতেই থাকে। যে-কারিগররা কাজ করছিল তারা শেষ পর্যন্ত মোশিকে বলেছিল: “সদাপ্রভু যাহা যাহা রচনা করিতে আজ্ঞা করিয়াছিলেন, লোকেরা সেই রচনাকার্য্যের জন্য অতিরিক্ত অধিক বস্তু আনিতেছে।” তাই মোশি আজ্ঞা করেছিলেন: “পুরুষ কিম্বা স্ত্রীলোক পবিত্র স্থানের জন্য আর উপহার প্রস্তুত না করুক।” ফল কী হয়েছিল? “সকল কর্ম্ম করণার্থে তাহাদের যথেষ্ট, এমন কি, প্রয়োজনের অতিরিক্ত দ্রব্য প্রস্তুত ছিল।”—যাত্রাপুস্তক ৩৬:৪-৭.

ইস্রায়েলীয়দের উদারতার কারণে, এক বছরের মধ্যে আবাস নির্মাণ শেষ হয়েছিল। (যাত্রাপুস্তক ১৯:১; ৪০:১, ২) সত্য উপাসনাকে সমর্থন করার দ্বারা ঈশ্বরের লোকেরা যিহোবাকে সম্মান করেছিল। (হিতোপদেশ ৩:৯) পরে, তারা আরও বৃহৎ এক নির্মাণ প্রকল্প হাতে নিয়েছিল। আর আবারও একবার, যারা ইচ্ছুক ছিল তারা সকলে এই প্রকল্পে অংশ নিতে পারত, তা তাদের নির্মাণ কাজের দক্ষতা থাকুক বা না-ই থাকুক।

আবাস নির্মাণের প্রায় পাঁচশো বছর পর, ইস্রায়েলীয়রা যিরূশালেমে মন্দির নির্মাণ করতে শুরু করেছিল। (১ রাজাবলি ৬:১) এটা পাথর ও কাঠের তৈরি এক প্রতাপান্বিত এবং স্থায়ী কাঠামো হবে। (১ রাজাবলি ৫:১৭, ১৮) যিহোবা দায়ূদকে “আত্মার দ্বারা” মন্দির নির্মাণের আদর্শ বা নকশা দিয়েছিলেন। (১ বংশাবলি ২৮:১১-১৯) কিন্তু তিনি দায়ূদের ছেলে শলোমনকে নির্মাণ কাজে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য বেছে নিয়েছিলেন। (১ বংশাবলি ২২:৬-১০) দায়ূদ এই প্রকল্পে সর্বান্তঃকরণে সমর্থন জুগিয়েছিলেন। তিনি পাথর, কড়িকাঠ এবং অন্যান্য সামগ্রী সংগ্রহ করেছিলেন আর প্রচুর পরিমাণে তার নিজস্ব সোনা ও রুপো দান করেছিলেন। এ ছাড়া, তিনি তার সহইস্রায়েলীয়দেরকেও একথা জিজ্ঞেস করে তাদেরকে উদার হওয়ার জন্য উৎসাহিত করেছিলেন: “অদ্য কে সদাপ্রভুর উদ্দেশে আপনার হস্তপূরণ জন্য ইচ্ছাপূর্ব্বক দান করে?” লোকেরা তার কথায় কীভাবে সাড়া দিয়েছিল?—১ বংশাবলি ২৯:১-৫.

শলোমন যে-সময়ে মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু করেছিলেন সেই সময়ের মধ্যে, তার কাছে হাজার হাজার টন সোনা ও রুপো মজুত ছিল। পিতল ও লোহা এত বেশি মজুত ছিল যে, তা অপরিমেয় ছিল। (১ বংশাবলি ২২:১৪-১৬) যিহোবার সাহায্যে এবং ইস্রায়েলীয়দের সকলের সমর্থনে, মাত্র সাড়ে সাত বছরের মধ্যে প্রকল্পটি শেষ হয়েছিল।—১ রাজাবলি ৬:১, ৩৭, ৩৮.

“ঈশ্বরের গৃহ”

আবাস ও মন্দির উভয়কেই “ঈশ্বরের গৃহ” বলা হতো। (বিচারকর্ত্তৃগণের বিবরণ ১৮:৩১; ২ বংশাবলি ২৪:৭) যিহোবার কখনো আশ্রয়ের জন্য গৃহের প্রয়োজন নেই। (যিশাইয় ৬৬:১) তিনি মানুষের উপকারের জন্য সেই কাঠামোগুলো নির্মাণ করিয়েছিলেন। বস্তুতপক্ষে, মন্দির উদ্বোধনের সময়ে, শলোমন জিজ্ঞেস করেছিলেন: “ঈশ্বর কি সত্য সত্যই পৃথিবীতে বাস করিবেন? দেখ, স্বর্গ ও স্বর্গের স্ব তোমাকে ধারণ করিতে পারে না, তবে আমার নির্ম্মিত এই গৃহ কি পারিবে?”—১ রাজাবলি ৮:২৭.

যিহোবা তাঁর ভাববাদী যিশাইয়ের মাধ্যমে বলেছিলেন: “আমার গৃহ সর্ব্বজাতির প্রার্থনা-গৃহ বলিয়া আখ্যাত হইবে।” (যিশাইয় ৫৬:৭) মন্দিরে যে-বলিগুলো উৎসর্গ এবং প্রার্থনাগুলো নিবেদন করা ও সেইসঙ্গে যে-আচার-অনুষ্ঠানগুলো অনুষ্ঠিত হতো, সেগুলো ঈশ্বর-ভীরু লোকদেরকে—যিহুদি ও ন-যিহুদিদেরকে—সত্যময় ঈশ্বরের নিকটবর্তী হওয়ার সুযোগ করে দিত। তাঁর গৃহে উপাসনা করার দ্বারা তারা যিহোবার বন্ধুত্ব ও সুরক্ষা লাভ করেছিল। মন্দির উৎসর্গীকরণের সময়, শলোমন যে-প্রার্থনা করেছিলেন তা এই সত্যকে তুলে ধরে। ঈশ্বরের উদ্দেশে তার মর্মস্পর্শী অভিব্যক্তিগুলো আপনি ১ রাজাবলি ৮:২২-৫৩ এবং ২ বংশাবলি ৬:১২-৪২ পদে পড়তে পারেন।

সত্যময় ঈশ্বরের সেই প্রাচীন গৃহটি অনেক বছর আগে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে কিন্তু ঈশ্বরের বাক্য এমন একটা সময়ের কথা উল্লেখ করে, যখন সমস্ত জাতির লোকেরা যিহোবার উপাসনা করার জন্য আরও মহান এক আধ্যাত্মিক মন্দিরে একত্রিত হবে। (যিশাইয় ২:২) ঈশ্বরের একজাত পুত্রের এক সিদ্ধ বলি, যা মন্দিরে পশু বলি দ্বারা পূর্বে চিত্রিত হতো, তা যিহোবার সান্নিধ্যে আসার উপায় হবে। (যোহন ১৪:৬; ইব্রীয় ৭:২৭; ৯:১২) যিহোবার সাক্ষিরা এখন সেই উৎকৃষ্ট উপায়ে ঈশ্বরের উপাসনা করছে এবং তারা আরও অনেককে একইভাবে তা করতে সাহায্য করছে।

আধুনিক নির্মাণ প্রকল্পগুলো

পৃথিবীব্যাপী যিহোবার সাক্ষিরা সত্যময় ঈশ্বরের সেবা করে। তারা এক “বলবান্‌ জাতি” গড়ে তোলে, যার জনসংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। (যিশাইয় ৬০:২২) যিহোবার সাক্ষিদের সভার মুখ্য স্থান হচ্ছে কিংডম হল। * এইরকম হাজার হাজার কিংডম হল ব্যবহৃত হচ্ছে আর আরও হাজার হাজার কিংডম হলের প্রয়োজন আছে।

প্রয়োজনীয় কিংডম হলগুলো নির্মাণ করার জন্য যিহোবার সাক্ষিরা “স্বেচ্ছায় দত্ত উপহার” হয়। (গীতসংহিতা ১১০:৩) কিন্তু, স্থানীয় সাক্ষিদের প্রায়ই নির্মাণ কাজের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতাগুলোর অভাব থাকে আর প্রচুর বৃদ্ধি হচ্ছে এমন কিছু অঞ্চল চরম দরিদ্রতা ভোগ করে। এই প্রতিবন্ধকতাগুলোকে কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করার জন্য ১৯৯৯ সালে যিহোবার সাক্ষিদের পরিচালক গোষ্ঠী কিংডম হল নির্মাণের এক কার্যক্রম প্রবর্তন করেছিল। এই কার্যক্রমের মাধ্যমে, যে-সাক্ষিরা নির্মাণ কাজের ব্যাপারে দক্ষ তারা কিংডম হলগুলো নির্মাণ করার জন্য ভাইবোনদের প্রশিক্ষণ দিতে দূরবর্তী স্থানগুলোতে গিয়েছে। সেই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ভাইবোনেরা পরে সেই অঞ্চলে নির্মাণ কাজ চালিয়ে গিয়েছে। এই বিশেষ প্রচেষ্টার ফল কী হয়েছে?

২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে, সীমিত সম্পদ রয়েছে এমন দেশগুলোতে যিহোবার সাক্ষিরা ১৩,০০০রেরও বেশি নতুন কিংডম হল নির্মিত হতে দেখেছে। নতুন কিংডম হলগুলো ব্যবহার করছে এমন কয়েক জনের মন্তব্য পড়ুন।

“মণ্ডলীতে গড় উপস্থিতির সংখ্যা ছিল ১৬০ জন। নতুন কিংডম হল নির্মিত হওয়ার পর, প্রথম সভায় উপস্থিতির সংখ্যা ২০০-তে পৌঁছেছিল। এখন ছয় মাস পর, উপস্থিতির সংখ্যা হয়েছে ২৩০ জন। সাধারণ অথচ কার্যকারী এই বিল্ডিংগুলোর ওপর যিহোবার আশীর্বাদ স্পষ্ট প্রতীয়মান।”—ইকুয়েডরের একজন সীমা অধ্যক্ষ।

“বেশ কয়েক বছর ধরে লোকেরা আমাদের জিজ্ঞেস করে এসেছে, ‘আপনাদের প্রকাশনাগুলোতে যে-কিংডম হলগুলোর ছবি আমরা দেখি, আপনাদের কবে সেইরকম একটা কিংডম হল হবে?” শেষ পর্যন্ত যিহোবার সাহায্যে আমরা উপাসনার এক সুন্দর স্থান পেয়েছি। আমরা একজন ভাইয়ের দোকানে সভাগুলো করতাম আর সেখানে গড় উপস্থিতির সংখ্যা ছিল ৩০ জন। নতুন কিংডম হলে, প্রথম সভায় ১১০ জন উপস্থিত ছিল।”—উগান্ডার একটা মণ্ডলী।

“দুজন নিয়মিত অগ্রগামী বোন জানায় যে, কিংডম হল নির্মিত হওয়ার পর থেকে এলাকায় কাজ করা আরও বেশি উপভোগ্য হয়ে উঠেছে। ঘরে ঘরে পরিচর্যায় ও সেইসঙ্গে রীতিবহির্ভূত সাক্ষ্যদানের সময়ে লোকেরা আরও বেশি শুনতে ইচ্ছুক হচ্ছে। এই বোনেরা এখন ১৭টা বাইবেল অধ্যয়ন পরিচালনা করে আর এই বাইবেল ছাত্র-ছাত্রীদের অনেকেই সভাগুলোতে উপস্থিত থাকে।”—সলোমন দ্বীপপুঞ্জের শাখা অফিস।

“একজন পাস্টর যিনি কাছাকাছি বাস করেন, তিনি বলেন যে, নতুন কিংডম হলটি সমগ্র এলাকার মর্যাদা বৃদ্ধি করে আর তাই স্থানীয় অধিবাসীরা এর জন্য গর্ববোধ করে। এই পথ দিয়ে হেঁটে যাওয়া অনেকেই হলের সৌন্দর্য সম্বন্ধে মন্তব্য করে। এটা ভাইবোনদেরকে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য অপূর্ব সুযোগ করে দেয়। অনেক অনেক লোক আমাদের বিশ্বব্যাপী ভ্রাতৃসমাজ সম্বন্ধে জানতে চায়। বেশ কিছু বছর ধরে যারা সভাগুলোতে যোগদান করেনি তাদের অনেকেই পুনরায় নিয়মিতভাবে মেলামেশা করতে অনুপ্রাণিত হয়েছে।”—মায়ানমার শাখা অফিস।

“এক বোন একজন আগ্রহী ভদ্রলোককে তার এলাকায় এক নির্মাণস্থলে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। ভদ্রলোকটি পরে বলেছিলেন: ‘আমি ভেবেছিলাম যে, কর্মীরা আমাকে ভিতরে ঢুকতে দেবে না। আমি খুব অবাক হয়েছিলাম যে, সাক্ষিরা আমাকে সদয়ভাবে অভ্যর্থনা জানিয়েছিল। পুরুষ ও নারীরা সময় নষ্ট না করে কঠোর পরিশ্রম করছিল। তাদের মধ্যে মিল ও উত্তম মনোভাব ছিল।’ ভদ্রলোকটি বাইবেল অধ্যয়ন করতে রাজি হয়েছিলেন এবং সভাগুলোতে যোগদান করতে শুরু করেছিলেন। পরে তিনি বলেছিলেন: ‘আমার চিন্তাধারা পালটে গিয়েছে। আমি যে-ঈশ্বরকে এখন খুঁজে পেয়েছি, তাঁকে পরিত্যাগ করব না।’”—কলম্বিয়ার শাখা অফিস।

আমাদের সমর্থন গুরুত্বপূর্ণ

কিংডম হলগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে আমাদের পবিত্র সেবার এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বিশ্বব্যাপী যিহোবার সাক্ষিরা যেভাবে এই কাজে সমর্থন জোগায়—আর্থিক ও অন্যান্যভাবে—তা সত্যই প্রশংসনীয়। কিন্তু আমাদের মনে রাখা উচিত যে, আমাদের পবিত্র সেবার অন্যান্য দিকও অতীব গুরুত্বপূর্ণ। মাঝে মাঝে, খ্রিস্টানরা প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হয় আর তাদের আমাদের কাছ থেকে সাহায্যের প্রয়োজন হয়। পবিত্র সেবাকে সমর্থন করার ক্ষেত্রে বাইবেল সাহিত্যাদির প্রকাশ এক মুখ্য ভূমিকা পালন করে। সঠিক প্রবণতাসম্পন্ন একজন ব্যক্তিকে দিয়ে আসা বাইবেলভিত্তিক একটি পত্রিকা অথবা বইয়ের যে-ক্ষমতা রয়েছে, আমাদের অধিকাংশেরই তা দেখার সুযোগ হয়েছে। অধিকন্তু, মিশনারি এবং বিশেষ পূর্ণসময়ের পরিচর্যায় জড়িত অন্যান্য ভাইবোনকে সমর্থন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এইরকম আত্মত্যাগী খ্রিস্টানরা এই শেষকালে প্রচার কাজ সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

যারা মন্দির নির্মাণ কাজে দান করেছিল তারা অতিশয় আনন্দিত হয়েছিল। (১ বংশাবলি ২৯:৯) একইভাবে আজকেও, সত্য উপাসনায় দান দিয়ে সমর্থন জোগানো আমাদের সুখী করে। (প্রেরিত ২০:৩৫, NW) আমরাও সুখী হই যখন আমরা কিংডম হল তহবিলের জন্য নির্ধারিত বাক্সে দান দিই এবং শিক্ষামূলক কাজের জন্য দান করি আর এর মাধ্যমে রাজ্যের সুসমাচার প্রচারের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত অন্যান্য প্রকল্পে সমর্থন জোগাই। এক চমৎকার উপায়ে, যিহোবার সাক্ষিরা আজকে সত্য উপাসনায় একতাবদ্ধ। সেই উপাসনাকে সমর্থন করার মাধ্যমে যে-সুখ আসে, আমরা সকলে যেন সেটার দ্বারা পূর্ণ হই!

[পাদটীকা]

^ “কিংডম হল” কথাটার উৎপত্তি কোথা থেকে তা জানার জন্য যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত যিহোবার সাক্ষিরা—ঈশ্বরের রাজ্যের ঘোষণাকারী (ইংরেজি) বইয়ের ৩১৯ পৃষ্ঠা দেখুন।

[২০, ২১ পৃষ্ঠার বাক্স/চিত্র]

কেউ কেউ যে-উপায়গুলোতে দান করে থাকে

শিক্ষামূলক কাজের জন্য দান

অনেকে “শিক্ষামূলক কাজের জন্য দান—মথি ২৪:১৪” লেখা দানবাক্সে দেওয়ার জন্য একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ আলাদা করে রাখে।

প্রত্যেক মাসে, মণ্ডলীগুলো এই অর্থ যিহোবার সাক্ষিদের সেই শাখা অফিসে পাঠিয়ে দেয়, যে-অফিস তাদের নিজের দেশের জন্য কাজ করে থাকে। স্বেচ্ছাকৃত দান হিসেবে দেওয়া অর্থও সরাসরি এই অফিসগুলোতে পাঠানো হয়ে থাকে। শাখা অফিসগুলোর ঠিকানা এই পত্রিকার ২ পৃষ্ঠায় পাওয়া যেতে পারে। চেকগুলো “ওয়াচ টাওয়ার”-কে প্রদানযোগ্য হিসেবে পাঠানো উচিত। এ ছাড়া, অলংকার অথবা অন্য কোনো মূল্যবান জিনিসও দান করা যেতে পারে। এই ধরনের দানের সঙ্গে একটা ছোট চিঠিতে উল্লেখ করে দেওয়া উচিত যে, এই দানগুলো এক শর্তহীন উপহার হিসেবে পাঠানো হয়েছে।

দাতব্য পরিকল্পনা

শিক্ষামূলক কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য উপহার হিসেবে শর্তহীন অর্থ পাঠানো ছাড়াও, দান করার অন্যান্য উপায় রয়েছে। এগুলোর অন্তর্ভুক্ত:

বিমা: কোনো জীবন বিমা প্রকল্পের অথবা অবসর গ্রহণ/পেনশন পরিকল্পনার স্বত্বভোগী হিসেবে ওয়াচ টাওয়ার এর নাম দেওয়া যেতে পারে।

ব্যাঙ্ক আ্যকাউন্ট: ব্যাঙ্ক আ্যকাউন্ট, ডিপোজিটের সার্টিফিকেট অথবা ব্যক্তির অবসর গ্রহণকালীন আ্যকাউন্টগুলো স্থানীয় ব্যাঙ্কের নিয়ম অনুসারে, ওয়াচ টাওয়ার এর ট্রাস্টে দেওয়া যেতে পারে অথবা ব্যক্তির মৃত্যুর পর ওয়াচ টাওয়ার-কে প্রদানযোগ্য হিসেবে দেওয়া যেতে পারে।

স্টক ও বন্ড: স্টক ও বন্ডগুলোকে শর্তহীন উপহার হিসেবে ওয়াচ টাওয়ার-কে দান করা যেতে পারে।

স্থাবর সম্পত্তি: বিক্রয়যোগ্য স্থাবর সম্পত্তি হয় এক শর্তহীন উপহার হিসেবে দান করা যেতে পারে অথবা আবাসিক সম্পত্তির ক্ষেত্রে দাতার জন্য জীবনস্বত্বরূপে সংরক্ষণ করে তা প্রদান করা যেতে পারে, এই শর্তে যে, তিনি তার জীবনকালে সেখানে বসবাস করতে পারবেন। কোনো স্থাবর সম্পত্তি দেওয়ার জন্য দলিলের ব্যবস্থা করার আগে আপনার দেশের শাখা অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

বার্ষিক বৃত্তি উপহার: বার্ষিক বৃত্তি উপহার হল একটা ব্যবস্থা যেটার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি ওয়াচটাওয়ার কর্পোরেশনকে অর্থ অথবা সম্পত্তির মালিকানাসূচক দলিলগুলো হস্তান্তর করেন। এটার বিনিময়ে, দাতা অথবা দাতার দ্বারা নিযুক্ত কোনো ব্যক্তি জীবনভর প্রতি বছর এক নির্দিষ্ট বার্ষিক বৃত্তির অর্থ লাভ করেন। যে-বছর থেকে বার্ষিক বৃত্তি উপহার ব্যবস্থা চালু হয়, সেই সময় থেকে দাতা আয়করের ক্ষেত্রেও ছাড় পেয়ে থাকেন।

উইল ও ট্রাস্ট: সম্পত্তি অথবা অর্থ আইনসম্মতভাবে সম্পন্ন উইলের সাহায্যে ওয়াচ টাওয়ার-কে হস্তান্তর করা যেতে পারে অথবা ট্রাস্ট চুক্তির স্বত্বভোগী হিসেবে ওয়াচ টাওয়ার এর নাম দেওয়া যেতে পারে। কিছু দেশে, কোনো ট্রাস্টের দ্বারা একটা ধর্মীয় সংগঠন উপকৃত হলে সেটা কর দেওয়ার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কিছু সুযোগসুবিধা দিতে পারে যদিও ভারতে এটা প্রযোজ্য নয়।।

“দাতব্য পরিকল্পনা” শব্দটা যেমন ইঙ্গিত করে যে, এই ধরনের দানগুলো করার জন্য সাধারণত দাতার আগে থেকেই পরিকল্পনা করা দরকার। যে-ব্যক্তিরা কোনো ধরনের দাতব্য পরিকল্পনার মাধ্যমে যিহোবার সাক্ষিদের শিক্ষামূলক কাজে সাহায্য করতে চায়, তাদের সহযোগিতা করার জন্য ইংরেজি ও স্প্যানিশ ভাষায় একটা ব্রোশার প্রস্তুত করা হয়েছে, যেটির শিরোনাম হল চ্যারিটেবেল প্ল্যানিং টু বেনিফিট কিংডম সার্ভিস ওয়ার্ল্ডওয়াইড। * এই ব্রোশারটি উপহারগুলো দেওয়ার বিভিন্ন উপায় সম্বন্ধে তথ্য জোগানোর জন্য লিখিত হয়েছে, যেগুলো হয় এখনই বা মৃত্যুর পর উইলের মাধ্যমে দেওয়া যেতে পারে। ব্রোশারটি পড়া এবং তাদের নিজস্ব আইনগত অথবা কর উপদেষ্টাদের সঙ্গে পরামর্শ করার পর, অনেকেই পৃথিবীব্যাপী যিহোবার সাক্ষিদের কাজকে সমর্থন করার জন্য সাহায্য করতে সমর্থ হয়েছে আর তা করার ফলে কর দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের সুবিধাগুলো বৃদ্ধি করেছে।

আরও তথ্য জানার জন্য, নীচে দেওয়া ঠিকানায় অথবা আপনার দেশের জন্য যিহোবার সাক্ষিদের যে-অফিস কাজ করছে, সেখানে চিঠি লিখে অথবা টেলিফোনে যিহোবার সাক্ষিদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।

Jehovah’s Witnesses,

Post Box ৬৪৪০,

Yelahanka,

Bangalore ৫৬০ ০৬৪,

Karnataka.

Telephone: (০৮০) ২৮৪৬৮০৭২

[পাদটীকা]

^ ভারতে পাওয়া যাচ্ছে না

[১৮ পৃষ্ঠার চিত্র]

আমাদের একতাবদ্ধ প্রচেষ্টা বিশ্বব্যাপী সুন্দর কিংডম হলগুলো নির্মাণ করাকে সম্ভবপর করে

[১৮ পৃষ্ঠার চিত্র]

ঘানায় নতুন কিংডম হল