আপনার সাথির সঙ্গে ভাববিনিময় করার অপরিহার্য বিষয়গুলো
আপনার সাথির সঙ্গে ভাববিনিময় করার অপরিহার্য বিষয়গুলো
‘আমার তা বলা উচিত হয়নি।’ ‘আমি আমার কথা স্পষ্টভাবে বোঝাতে পারিনি।’ আপনার সাথির সঙ্গে ভাববিনিময় করতে চেষ্টা করার পর, আপনার কি কখনো এইরকম মনে হয়েছে? ভাববিনিময় হচ্ছে এমন এক দক্ষতা, যেটাতে ক্রমান্বয়ে উন্নতি করে যেতে হবে। যেকোনো দক্ষতার ক্ষেত্রে যেমনটা হয়ে থাকে, কিছু লোক হয়তো বেশ সহজেই সেটাকে আয়ত্ত করতে পারে, আবার অন্যদের বেশ কঠিন লাগতে পারে। এমনকি আপনি যদি দ্বিতীয় দলের লোকও হয়ে থাকেন, তবুও আপনার চিন্তাভাবনাকে এক শান্ত মেজাজে প্রকাশ করতে ও কার্যকারীভাবে ভাববিনিময় করতে শেখা আপনার পক্ষে সম্ভব।
মাঝে মাঝে, লোকেরা তাদের সাথিদের সঙ্গে যেরকম ব্যবহার যাকোব ১:১৯) এই পরামর্শ পুরুষ ও নারী উভয়ের প্রতিই প্রযোজ্য এবং তা দেখায় যে, ভাববিনিময়ের সঙ্গে শুধুমাত্র কথা বলার চেয়েও আরও বেশি কিছু জড়িত। দুজন ব্যক্তি হয়তো অনেক সময় ধরে একে অন্যের সঙ্গে কথা বলতে পারে কিন্তু তারা যদি একে অন্যের কথা না-ই শোনে, তা হলে কী? সম্ভবত সেখানে কোনো সত্যিকারের ভাববিনিময় হবে না। উপরোক্ত শাস্ত্রপদ থেকে যেমন দেখা যায়, সফল ভাববিনিময়ের এক প্রধান অংশই হচ্ছে শোনার দক্ষতা।
করে, সেই ব্যাপারে সংস্কৃতি প্রভাব ফেলে থাকে। ‘পুরুষত্ব জাহির করার জন্য’ পুরুষদের হয়তো এইরকম বলা হয়, ‘আপনাদের বেশি কথা বলা উচিত নয়।’ বাচাল পুরুষদের হয়তো ফালতু ব্যক্তি হিসেবে ছোট করে দেখা হয়ে থাকে। কিন্তু, বাইবেল বলে: “তোমাদের প্রত্যেক জন শ্রবণে সত্বর, কথনে ধীর . . . হউক।” (বাক্যবিহীন ভাববিনিময় করা
কিছু সমাজে স্ত্রীদের কাছ থেকে আশা করা হয় যে, তারা কোনো মতামত প্রকাশ করবে না। স্বামীরা পরিবারের বিষয়গুলো নিয়ে কোনোরকম মাথা ঘামাবে না। এইরকম এক অবস্থায় স্বামী ও স্ত্রী বুঝে উঠতে পারে না যে, কোনো নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে তাদের সাথি আসলে কী চায়। কিছু স্ত্রী তাদের স্বামীর চাহিদাগুলো বুঝে ফেলার ব্যাপারে খুবই পটু এবং সেগুলো পূরণ করার জন্য তাড়াতাড়ি কাজ করে থাকে। এইরকম ক্ষেত্রগুলোতে কোনোরকম কথাবার্তা ছাড়াই স্বামী-স্ত্রী এক ধরনের ভাববিনিময় করছে। কিন্তু, সাধারণত এই ধরনের ভাববিনিময় হচ্ছে একতরফা। যদিও স্ত্রী হয়তো বুঝে নিতে শেখেন যে, তার স্বামী কী ভাবছেন বা তার অনুভূতি কী কিন্তু স্বামীর কাছ থেকে খুব কমই আশা করা হয় যে, তিনিও একই দক্ষতা গড়ে তুলবেন এবং তার স্ত্রীর অনুভূতি বুঝতে পারবেন।
এটা ঠিক যে, কিছু সংস্কৃতিতে পুরুষরা নারীদের আবেগগত চাহিদাগুলো লক্ষ করে থাকে এবং সেগুলো মেটানোর চেষ্টা করে। কিন্তু, এইরকম সংস্কৃতিতেও আরও ভালভাবে ভাববিনিময় করা হলে অনেক দম্পতি উপকৃত হবে।
ভাববিনিময় অতীব গুরুত্বপূর্ণ
খোলাখুলি ভাববিনিময় ভুল বোঝাবুঝি ও ভুল ধারণা রোধ করতে পারে। ইস্রায়েলীয়দের ইতিহাসের শুরুর দিকে, রূবেণ, গাদ ও মনঃশির অর্ধ বংশ, যারা যর্দন নদীর পূর্বপারে বাস করত, তারা যর্দন নদীর তীরে “এক যজ্ঞবেদি” নির্মাণ করেছিল, “সেই বেদি দেখিতে বৃহৎ।” অন্য বংশগুলো তাদের এই কাজ দেখে তাদেরকে ভুল বুঝেছিল। যর্দন নদীর অপর পারে বসবাসরত তাদের ভাইয়েরা ধর্মভ্রষ্টতার কাজ করেছে ভেবে পশ্চিম পারের বংশগুলো “বিদ্রোহীদের” সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি নিয়েছিল। কিন্তু, যুদ্ধে যাওয়ার আগে তারা পূর্ব পারের বংশগুলোর সঙ্গে ভাববিনিময় করার জন্য এক প্রতিনিধি দলকে পাঠিয়েছিল। কত বিজ্ঞতাপূর্ণ এক পদক্ষেপ! তারা বুঝতে পেরেছিল যে, সেই বেদি অবৈধ হোমবলি বা বলিদানগুলো করার জন্য ছিল না। বরং, পূর্ব পারের বংশগুলোর মধ্যে এই ভীতি জন্মেছিল যে, ভবিষ্যতে অন্যান্য বংশ তাদের বলবে: “সদাপ্রভুতে তোমাদের কোন অধিকার নাই।” এই বেদি এক সাক্ষি হবে যে, তারাও যিহোবার উপাসক ছিল। (যিহোশূয়ের পুস্তক ২২:১০-২৯) তারা সেই বেদির নাম রেখেছিল এদ (ইব্রীয় ভাষায় যেটার অর্থ হচ্ছে সাক্ষি) কারণ এটা তাদের জন্য এক সাক্ষি হিসেবে কাজ করেছিল যে, যিহোবাই ছিলেন সত্য ঈশ্বর।—যিহোশূয়ের পুস্তক ২২:৩৪.
অন্য বংশগুলোকে বিশ্বাস করানোর জন্য তাদের ব্যাখ্যা যথেষ্ট ছিল আর এর ফলে তারা দুই বংশ ও অর্ধ বংশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে তাদের মত পালটেছিল। হ্যাঁ, খোলাখুলি ভাববিনিময় সশস্ত্র যুদ্ধকে নিবৃত্ত করেছিল। পরবর্তী সময়ে, ইস্রায়েল যখন তাদের রূপক স্বামী, যিহোবা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল, তখন তিনি তাদের বলেছিলেন যে, তিনি করুণা দেখিয়ে ‘তাহাদের চিত্ততোষক কথা কহিবেন।’ (হোশেয় ২:১৪) বিবাহিত লোকেদের জন্য কত চমৎকার এক উদাহরণ! হ্যাঁ, আপনার সাথির হৃদয়ে পৌঁছানোর চেষ্টা করুন, যাতে তিনি আপনার অনুভূতি বুঝতে পারেন। বিশেষ করে সেই সময়ে এটা গুরুত্বপূর্ণ, যখন এতে গভীর আবেগ জড়িত থাকে। “কেউ কেউ বলে থাকে, কথা বলতে পয়সা লাগে না,” প্যাটি মিহালিক নামে যুক্তরাষ্ট্রের একজন সাংবাদিক বলেন, “কিন্তু, তবুও কথা অমূল্য হতে পারে। আর যদিও কারো কারো জন্য হয়তো অনুভূতি প্রকাশ করা কঠিন কিন্তু এর ফলাফল ব্যাঙ্কে সঞ্চিত অর্থের চেয়েও অনেক গুণ বেশি লাভ নিয়ে আসতে পারে।”
ভাববিনিময়ের দক্ষতায় উন্নতি করে চলা
‘শুরু থেকেই আমাদের বিয়ে নড়বড়ে ছিল,’ কেউ কেউ হয়তো দাবি করতে পারে। ‘এই বিয়েকে কোনোভাবেই টিকিয়ে রাখা যাবে না,’ অন্যেরা হয়তো এই উপসংহারে আসতে পারে। তারা হয়তো মনে করতে পারে যে, বিয়ের পর তাদের ভাববিনিময়ের দক্ষতায় উন্নতি করা অসম্ভব। কিন্তু, সেই লোকেদের
কথা চিন্তা করুন, যেখানে আত্মীয়রা বিয়ে ঠিক করে থাকে। এইরকম সংস্কৃতির অনেকে বিয়ের পরে তাদের ভাববিনিময়ের উত্তম অভ্যাস গড়ে তোলে।পূর্বদেশের এক দম্পতি অভিভাবকদের ঠিক করে দেওয়া বিয়ের মাধ্যমে এক হয়েছিল। বরের জন্য কনে ঠিক করতে একজন মধ্যস্থতাকারীকে এক দূর দেশে যাত্রা করতে বলা হয়েছিল। তারপরেও, সেই বিবাহিত দম্পতি, যারা প্রায় ৪,০০০ বছর আগে বেঁচে ছিল, তারা ভাববিনিময়ে অসাধারণ দক্ষতা দেখিয়েছিল। ইস্হাকের সঙ্গে সেই মধ্যস্থতাকারী ও হবু বধূর ক্ষেত্রে বা মাঠে দেখা হয়েছিল। মধ্যস্থতাকারী “ইস্হাককে আপনার কৃত সমস্ত কর্ম্মের বিবরণ কহিলেন।” এই বিয়ে সম্বন্ধে বাইবেলের বিবরণ বলে চলে: “তখন ইস্হাক রিবিকাকে গ্রহণ করিয়া সারা মাতার তাম্বুতে লইয়া গিয়া তাঁহাকে বিবাহ করিলেন, এবং তাঁহাকে প্রেম করিলেন।”—আদিপুস্তক ২৪:৬২-৬৭.
লক্ষ করুন যে, ইস্হাক প্রথমে বিবরণ শুনেছিলেন এবং “তখন” বা এরপর রিবিকাকে তার স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। সেই মধ্যস্থতাকারী ছিলেন একজন নির্ভরযোগ্য দাস, যিনি যিহোবা ঈশ্বরের প্রতি উৎসর্গীকৃত ছিলেন, যাঁকে ইস্হাক উপাসনা করতেন। এই ব্যক্তির ওপর নির্ভর করার উত্তম কারণ ইস্হাকের ছিল। এরপর ইস্হাক রিবিকাকে “প্রেম করিলেন,” যাকে তিনি বিয়ে করেছিলেন।
ইস্হাক ও রিবিকা কি উত্তম ভাববিনিময়ের দক্ষতায় উন্নতি করে চলেছিল? তাদের ছেলে এষৌ যখন দুজন হিত্তীয় কন্যাকে বিয়ে করেছিলেন, তখন এক গুরুতর পারিবারিক সমস্যার উদ্ভব হয়েছিল। রিবিকা ইস্হাককে “কহিলেন”: “এই হিত্তীয়দের কন্যাদের বিষয় আমার প্রাণে ঘৃণা হইতেছে; যদি যাকোবও [তাহাদের ছোট ছেলেও] ইহাদের মত কোন হিত্তীয় কন্যাকে, . . . বিবাহ করে, তবে প্রাণধারণে আমার কি লাভ?” (আদিপুস্তক ২৬:৩৪; ২৭:৪৬) এটা পরিষ্কার যে, তার চিন্তার বিষয় তিনি সুস্পষ্টভাবে খুলে বলেছিলেন।
এষৌর যমজ ভাই যাকোবকে ইস্হাক বলেছিলেন, তিনি যেন কনান দেশের কোনো মেয়েকে বিয়ে না করেন। (আদিপুস্তক ২৮:১, ২) রিবিকা তার বক্তব্য তুলে ধরেছিলেন। এই দম্পতি পরিবারের অতি স্পর্শকাতর একটা বিষয় নিয়ে সফলভাবে ভাববিনিময় করেছিল আর আজকে আমাদের জন্য তা এক উত্তম উদাহরণ স্থাপন করেছে। কিন্তু কী হবে, যদি সাথিরা একমত হতে না পারে? কী করা যেতে পারে?
কোনো মতভেদের মুখোমুখি হলে
আপনার ও আপনার সাথির মধ্যে যদি প্রচণ্ড মতভেদ হয়, তা হলে সাথির সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দেবেন না। তা করলে একেবারে স্পষ্ট বোঝা যাবে যে: আপনি সুখী নন আর আপনি আপনার সাথিকেও সুখী দেখতে চান না। তা সত্ত্বেও, আপনার সাথি হয়তো আপনার ইচ্ছা ও অনুভূতিকে পুরোপুরি বুঝতে না-ও পারে।
আপনাকে ও আপনার সাথিকে হয়তো বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করতে হবে। বিষয়টা যদি স্পর্শকাতর হয়ে থাকে, তা হলে শান্ত থাকা হয়তো সহজ না-ও হতে পারে। ইস্হাকের বাবামা অব্রাহাম ও সারা একবার এইরকম সংকটময় এক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিল। সারা বন্ধ্যা ছিলেন বলে তিনি সেই সময়কার রীতি অনুযায়ী, উপপত্নীর মাধ্যমে বংশধর উৎপন্ন করার জন্য অব্রাহামকে তার দাসী হাগারকে দিয়েছিলেন। হাগার অব্রাহামের জন্য ইশ্মায়েল নামে এক ছেলের জন্ম দিয়েছিলেন। কিন্তু, পরে সারা নিজে গর্ভবতী হয়েছিলেন এবং তিনি অব্রাহামের জন্য ইস্হাক নামে এক ছেলের জন্ম দিয়েছিলেন। ইস্হাক যখন স্তনপান ত্যাগ করেছিলেন, তখন সারা লক্ষ করেছিলেন যে, ইশ্মায়েল তার ছেলেকে পরিহাস করছিলেন। তাই সারা তার ছেলের বিপদের আশঙ্কায় অব্রাহামকে অনুরোধ করেছিলেন যেন তিনি এই দাসী ও ইশ্মায়েলকে তাড়িয়ে দেন। হ্যাঁ, সারা তার অনুভূতি সরাসরি প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু, তিনি যা করতে বলেছিলেন তা শুনে অব্রাহাম খুবই অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন।
সেই মতভেদের কীভাবে মীমাংসা হয়েছিল? বাইবেলের বিবরণ বলে: “ঈশ্বর অব্রাহামকে কহিলেন, ঐ বালকের বিষয়ে ও তোমার ঐ দাসীর বিষয়ে অসন্তুষ্ট হইও না; সারা তোমাকে যাহা বলিতেছে, তাহার সেই কথা শুন; কেননা ইস্হাকেই তোমার বংশ আখ্যাত হইবে।” অব্রাহাম যিহোবা ঈশ্বরের নির্দেশনা শুনেছিলেন এবং সেই অনুযায়ী কাজ করেছিলেন।—আদিপুস্তক ১৬:১-৪; ২১:১-১৪.
আপনি হয়তো বলতে পারেন, ‘সত্যিই, ঈশ্বর যদি স্বর্গ থেকে আমাদের সঙ্গে কথা বলতেন, তা হলে আমরা সহজেই একমত হতে পারতাম!’ এটা আমাদের বৈবাহিক দ্বন্দ্বগুলোকে সমাধান করার আরেকটা অপরিহার্য বিষয় সম্বন্ধে জানায়। বিবাহিত দম্পতিরা ঈশ্বরের কথা শুনতে পারে। কীভাবে? একসঙ্গে ঈশ্বরের বাক্য পড়ে এবং এর কথাগুলোকে ঈশ্বরের নির্দেশনা হিসেবে গ্রহণ করে।—১ থিষলনীকীয় ২:১৩.
তীত ২:৩-৫) আমরা সকলেই তার মন্তব্য থেকে উপকৃত হতে পারি। আপনার সাথির সঙ্গে নিয়মিত ঈশ্বরের বাক্য পড়ুন। এর মাধ্যমে আপনার দৈনন্দিন আচরণ কেমন হবে, সেই বিষয়ে আপনি ঈশ্বরের কথাগুলো “শুনিতে” পাবেন। (যিশাইয় ৩০:২১) কিন্তু, এই ব্যাপারে এক সাবধানবাণী: আপনার সাথিকে চড় মারার মতো করে বাইবেলকে ব্যবহার করবেন না, অর্থাৎ যখন-তখন সেই শাস্ত্রপদগুলো দেখাতে থাকবেন না, যেগুলো আপনার সঙ্গী প্রয়োগ করতে ব্যর্থ হচ্ছেন বলে আপনার মনে হয়। এর পরিবর্তে, দেখার চেষ্টা করুন যে কীভাবে আপনারা দুজনেই যা পড়েন, তা পালন করতে পারেন।
একজন অভিজ্ঞ খ্রিস্টান স্ত্রী বলেছিলেন: “একজন যুবতী স্ত্রী যখন বেশ কয়েক বার তার বিবাহিত জীবনের ব্যাপারে আমার কাছে পরামর্শ চাইতে আসে, আমি তাকে জিজ্ঞেস করি যে, সে ও তার স্বামী একসঙ্গে বাইবেল পড়ে কি না। যাদের বিবাহিত জীবনে অনেক সমস্যা রয়েছে, তাদের অধিকাংশেরই এই অভ্যাসটা নেই।” (আপনি যদি কোনো কঠিন সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করছেন, তা হলে ওয়াচ টাওয়ার পাবলিকেশনস্ ইনডেক্স * থেকে আপনার নির্দিষ্ট চিন্তার বিষয়টা পরীক্ষা করে দেখুন না কেন? সম্ভবত আপনি বয়স্ক বাবামার যত্ন নিচ্ছেন আর সেটা আপনার বিবাহিত জীবনে চাপ সৃষ্টি করছে। আপনার সাথির কী করা উচিত বা কী করা উচিত নয়, সেই বিষয়ে তর্ক না করে একসঙ্গে বসে ইনডেক্স পরীক্ষা করে দেখুন না কেন? প্রথমে, প্রধান শিরোনাম “বাবামা” খুঁজে দেখুন। আপনি হয়তো “বয়স্ক বাবামাদের যত্ন নেওয়া” এই ধরনের উপশিরোনামগুলোর নীচে দেওয়া রেফারেন্সগুলো খুঁজে দেখতে চাইবেন। যিহোবার সাক্ষিদের প্রকাশনাগুলো থেকে এর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত প্রবন্ধগুলো একসঙ্গে পড়ুন। আপনি হয়তো দেখে অবাক হয়ে যাবেন যে, আপনি ও আপনার সাথি বাইবেলভিত্তিক তথ্য থেকে কতখানি উপকৃত হতে পারেন, যা অনেক আন্তরিক খ্রিস্টানকে সাহায্য করেছে।
সেই রেফারেন্সগুলো পরীক্ষা করা ও বিষয়বস্তুগুলো একসঙ্গে পড়া আপনাকে আপনার সমস্যা সম্বন্ধে এক স্পষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি লাভ করতে সাহায্য করবে। আপনি শাস্ত্রীয় উদ্ধৃতি ও উল্লেখগুলো খুঁজে পাবেন, যেগুলো আপনাকে ঈশ্বরের চিন্তাধারা সম্বন্ধে জানাবে। বাইবেল থেকে সেগুলো খুঁজে দেখুন ও একসঙ্গে পড়ুন। হ্যাঁ, আপনি যে-সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হচ্ছেন, সেগুলোর বিষয়ে ঈশ্বর কী বলেন, তা আপনি শুনতে পাবেন!
ভাববিনিময়ের পথ খোলা রাখুন
আপনি কি কখনো এমন একটা দরজা খোলার চেষ্টা করেছেন, যেটাকে কিছু সময়ের জন্য ব্যবহার করা হয়নি? মরচে-ধরা কব্জাগুলো হয়তো ক্যাঁচ ক্যাঁচ শব্দ করে আস্তে আস্তে খোলে। কিন্তু সেই দরজাকে যদি নিয়মিত ব্যবহার করা হতো এবং এর কব্জাগুলোতে ভালভাবে তেল লাগানো হতো, তা হলে কী? সেটা খোলা নিশ্চয়ই সহজ হতো। ভাববিনিময়ের দরজার বেলায়ও একই বিষয় সত্য। আপনি যদি ভাববিনিময় করাকে অভ্যাসে পরিণত করেন এবং ভাববিনিময়ের দরজার কব্জাগুলোকে খ্রিস্টীয় প্রেমের দ্বারা মসৃণ করে তোলেন, তা হলে আপনি আরও সহজে আপনার মনের কথা প্রকাশ করতে পারবেন, এমনকি তখনও যখন কোনো গুরুতর মতভেদ হয়ে থাকে।
কোনো না কোনোভাবে আপনাকে শুরু করতে হবে। যদিও ভাববিনিময় করতে প্রথম প্রথম অনেক প্রচেষ্টার প্রয়োজন হতে পারে কিন্তু তবুও তা করে যান। তা হলেই, ধীরে ধীরে আপনি আপনার সাথির সঙ্গে এক ভাল সম্পর্ক উপভোগ করতে পারবেন এবং এর ফলে তাকে চিরকাল ধরে বুঝতে পারবেন।
[পাদটীকা]
^ যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত।
[৭ পৃষ্ঠার চিত্র]
মতভেদের মুখোমুখি হলে, আপনি কি ঈশ্বরের নির্দেশনার অনুসন্ধান করবেন?