সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

তিনি যা শিখেছিলেন, সেটাকে ভালবেসেছিলেন

তিনি যা শিখেছিলেন, সেটাকে ভালবেসেছিলেন

তিনি যা শিখেছিলেন, সেটাকে ভালবেসেছিলেন

অল্প কিছুদিন আগে একজন মহিলার লেখা একটা চিঠি পাওয়া গিয়েছিল, যেটা তিনি ২০০৪ সালের মে মাসে ক্যান্সারে তার মৃত্যুর ঠিক আগে লিখেছিলেন। তিনি সেই চিঠিটা লেখা শেষ করতে পারেননি, স্পষ্টতই এর কারণ ছিল যে, হঠাৎ করে তার শরীর খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, পরে যারা সেই চিঠিটা পেয়েছিল, যেটা কারো উদ্দেশে পাঠানো হয়নি, সেটা পড়ে তারা তাদের চোখের জল আটকে রাখতে পারেনি আর ঈশ্বরের প্রতি তাদের বিশ্বাস দৃঢ় হয়েছিল।

সেই চিঠির লেখিকা সুজান বর্ণনা করেন যে, তিনি যখন ১৪ বছর বয়সি এক কিশোরী, তখন যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাটে যিহোবার সাক্ষিদের একজন খ্রিস্টান প্রাচীনকে প্রথম টেলিফোন করেছিলেন। তিনি তার কিশোর বয়সে যে-পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন, তা চিঠিতে বর্ণনা করেছিলেন। গত বছরের শেষের দিকে সুজানের মা সেই মর্মস্পর্শী চিঠিটা পেয়েছিলেন এবং নিউ ইয়র্কে যিহোবার সাক্ষিদের প্রধান কার্যালয়ে সেটার একটা কপি পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।

সুজান লিখেছিলেন যে, তিনি ১৯৭৩ সালে টেলিফোন ডাইরেক্‌টারি থেকে কানেকটিকাটের একজন প্রাচীনের ফোন নম্বর পেয়েছিলেন। “সেই বছর, ১৪ বছর বয়সে,” তিনি ব্যাখ্যা করেন, “প্রহরীদুর্গ এবং সচেতন থাক! পত্রিকা পড়ে আমি নিশ্চিত হয়েছিলাম যে, এটাই সত্য। যিহোবার সাক্ষিদের কারোর সঙ্গে কখনো দেখা না হওয়ায় আমি টেলিফোন ডাইরেক্‌টারিতে তাদের নম্বর খুঁজেছিলাম এবং সেই নম্বরটা বেছে নিয়েছিলাম, যে-নম্বরের প্রথম তিনটে সংখ্যা আমার নম্বরের সঙ্গে মেলে। ভাই জেনরিক যখন ফোন তুলেছিলেন, তখন তিনি এটা শুনে খুবই অবাক হয়ে গিয়েছিলেন যে, আমার কখনো কোনো সাক্ষির সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়নি।” *

এক জটিল সমস্যা

সুজান তার চিঠিতে ব্যাখ্যা করেছিলেন যে, তার বয়স যখন দশ বছর ছিল, তখন তাকে তার ছোট মাসির সঙ্গে কানেকটিকাটে থাকার জন্য পাঠানো হয়েছিল। সেখানে অল্প কিছুদিন থাকার কথা ছিল কিন্তু কিছুদিন পর সুজান তার মাকে, যিনি ফ্লোরিডাতে থাকতেন তাকে বলেছিলেন যে, তিনি তার মাসির সঙ্গেই থাকতে চান। সুজান চিঠিতে লিখেছিলেন যে, তার পরিস্থিতি অনেকটা ‘স্টকহোম সিনড্রোমের’ মতো ছিল, ‘যেখানে একজন ব্যক্তি তার অত্যাচারীদের প্রতি সহানুভূতি অনুভব করতে শুরু করেন।’ * তার সঙ্গে প্রচণ্ড খারাপ ব্যবহার করা হতো।

সুজান লিখেছিলেন, ‘আমার মাসি ও তার সঙ্গী আমার সঙ্গে খুবই খারাপ ব্যবহার করত। এ ছাড়া, হাতেগোনা অল্প কিছু বাইরের লোক বাড়িতে আসত। আমাকে যখন স্কুলে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, তখন আমাকে দুপুরের খাবার বা ভাল পোশাক দেওয়া হয়নি, যদিও মা আমার ভরণপোষণের জন্য বেশ অনেক টাকা পাঠাতেন। আমার শুধু এক জোড়া অন্তর্বাস ছিল, যেখানে আমার মাসির দুই মেয়ের সবকিছুই ছিল, যারা আমার চেয়ে কয়েক বছরের ছোট ছিল।’ সুজান এই কথাগুলো উল্লেখ করেছিলেন এটা স্পষ্ট করতে যে, কেন তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে, তার মাসি বাইবেল সম্বন্ধে শেখার বিষয়ে তার আগ্রহ সম্বন্ধে জানতে পারলে তিনি সমস্যায় পড়বেন।

বাইবেলের জ্ঞানে সুজান যেভাবে বৃদ্ধি পান

“ভাই জেনরিক আমাকে একজন পরিপক্ব খ্রিস্টান বোন লরার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন,” সুজান লিখেছিলেন, “আর তিনি আমার বাইবেলের বহু প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য বেশ অনেকটা সময় ব্যয় করেছিলেন, প্রায়ই আমরা একটা লন্ড্রির দোকানে মিলিত হতাম।” সুজান ব্যাখ্যা করেছিলেন যে, তিনি সেই সময় পর্যন্ত কখনো নিজের থেকে কোনো সিদ্ধান্ত নেননি কিন্তু এই আলোচনাগুলো করার এবং যে সত্য অনন্ত জীবনে লইয়া যায় বইয়ের মতো বাইবেলভিত্তিক সাহিত্য পড়ার পর, তিনি নিজে একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

“সেদিন ছিল শুক্রবার রাত,” সুজান বলে চলেছিলেন, “যেদিন আমি আমার মাসিকে বলেছিলাম যে, আমি সাক্ষিদের সঙ্গে আলোচনা করি। এই কথা শুনে তিনি আমাকে ঘুমাতে না দিয়ে সারারাত রান্নাঘরের মাঝখানে দাঁড় করিয়ে রেখেছিলেন। এই ঘটনার পর, আমি একজন সাক্ষি হওয়ার জন্য আরও বেশি সংকল্পবদ্ধ হয়ে উঠেছিলাম।”

সেই সময় থেকে ভাই জেনরিক সুজানকে বাইবেল বুঝতে সাহায্য করার জন্য অনেক সাহিত্য সরবরাহ করতেন। “যিহোবার সাক্ষিদের বর্ষপুস্তক ১৯৭৪ (ইংরেজি) বইয়ের কথা এখনও আমার মনে উজ্জ্বল হয়ে আছে,” সুজান লিখেছিলেন, “কারণ এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে ও যুদ্ধ চলাকালে নাৎসি শাসন আমলে জার্মানির সাক্ষিরা যেভাবে তাড়না সহ্য করেছিল সেটা সম্বন্ধে বলেছিল। . . . সেই সময়ই আমি সেই প্রাচীন ভাইকে রাজ্যের গানগুলো রেকর্ড করে দিতে বলেছিলাম, যাতে আমি সেগুলো শিখতে পারি। এক বছরের মধ্যে আমি ১৯৬৬ সালের ‘আপন আপন অন্তঃকরণে গান ও বাদ্য করুন’ (ইংরেজি) গান বইয়ের পর পর ১১৯টা গান গাইতে পারতাম।”

“এর মধ্যে ভাই জেনরিক বাইবেলের বক্তৃতা, নাটক ও সম্মেলনের কার্যক্রমগুলোর টেপও আমাকে দিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি এক নির্দিষ্ট টেলিফোন পোলের কাছে ১০নং. রুটে সেগুলো রেখে যেতেন আর আমি সেখান থেকে সেগুলো তুলে নিতাম। . . . এরপর আমার এই পরিস্থিতি আমাকে খুবই হতাশ করে তুলছিল কারণ আমি আমার যথাসাধ্য উন্নতি করছিলাম ঠিকই কিন্তু একটা সভাতেও যোগ দিতে পারছিলাম না। আমি এতটাই হতাশ হয়ে পড়েছিলাম যে, আমি যেন আর সহ্য করতে পারছিলাম না।”

সুজান বলেছিলেন যে, পরবর্তী কয়েক বছর খুবই কষ্টকর ছিল। তিনি মাত্র যে-দুজন সাক্ষিকে চিনতেন, তাদের সঙ্গে সব রকমের যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। কিন্তু এরপর তিনি বলেছিলেন যে, “গানগুলো শেখা আমার জন্য এক ‘অভিশাপ’ হয়ে উঠেছিল।” কেন? “কারণ একটা গানের কথা আমার মনে পড়ত, যেমন ‘যাঃ এর সৈন্যরা চায় না আরাম।’ আমি জানতাম যে, গানের ওই কথাগুলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন জার্মানির কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে থাকার সময় একজন সাক্ষি রচনা করেছিলেন আর এটা আমার অস্বস্তিকে আরও বাড়িয়ে তুলেছিল। আমার নিজেকে একজন কাপুরুষের মতো মনে হয়েছিল এবং ভেবেছিলাম যে, যিহোবা আমাকে পরিত্যাগ করেছেন।” *

অবশেষে স্বাধীনতা

“আমার ১৮তম জন্মদিন ছিল আমার জীবনের সন্ধিক্ষণ। অনেক বছর ধরে কোনো সাক্ষিই আমাদের ঘরে আসেনি কারণ আমাদের ঘর ‘যাবেন না’ এই তালিকার অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিন্তু সেদিন আরেকটা মণ্ডলী থেকে একজন আমাদের ঘরে এসেছিলেন এবং আমি তার সঙ্গে কথা বলতে পেরেছিলাম কারণ সেই সময়ে বাড়িতে কেউ ছিল না। আমার মনে আছে সেটাই ছিল প্রথম যখন আমি এক শনিবারে বাড়িতে একা ছিলাম। এই ঘটনাকে আমি এটারই এক প্রমাণ হিসেবে ধরেছিলাম যে, যিহোবা আমাকে পরিত্যাগ করেননি। তাই আমি ভাই জেনরিককে ফোন করেছিলাম, যাকে আমি শুরুতে ফোন করি আর তাকে বলেছিলাম যে, আমি বাড়ি ছাড়তে তৈরি আছি এবং এই বিষয়ে তার কোনোরকম পরামর্শ আছে কি না, তা জিজ্ঞেস করেছিলাম। শেষ পর্যন্ত আমাকে সেখান থেকে বের হয়ে আসতে সাহায্য করা হয়েছিল।”

সুজান ১৯৭৭ সালের এপ্রিল মাসে আরেকটা জায়গায় চলে গিয়েছিলেন। তার চিঠিতে আরও বলা ছিল: “পরের বছর আমি শেষ পর্যন্ত সমস্ত সভা ও সম্মেলনে যোগ দিতে সক্ষম হয়েছিলাম ও আমি পরিচর্যায় যোগ দিতে শুরু করেছিলাম। আমি আমার মায়ের সঙ্গে আবার যোগাযোগ করেছিলাম। তিনি ভাবতেও পারেননি যে, ওই বছরগুলোতে আমার সঙ্গে কত খারাপ ব্যবহারই না করা হয়েছে আর এই কথা শুনে তিনি প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছিলেন। তিনি সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছিলেন আর নিশ্চিত হয়েছিলেন যে, আমার প্রয়োজনীয় সবকিছু আমি পেয়েছি কি না। অল্প কয়েক বছর আগে মা আলাস্কাতে চলে গিয়েছিলেন। যেহেতু তিনি বাইবেলের সত্যের প্রতি অনেক আগ্রহ দেখিয়েছিলেন, তাই আমি তার সঙ্গে থাকার জন্য ১৯৭৮ সালে আলাস্কায় চলে গিয়েছিলাম। তিনি শেষ পর্যন্ত সাক্ষি হয়েছিলেন এবং এখনো বিশ্বস্ত রয়েছেন।

“আমি সভাগুলোতে যোগ দিতে শুরু করার পর, ভাই জেনরিক দলগতভাবে নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিনে যিহোবার সাক্ষিদের বিশ্ব প্রধান কার্যালয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন আর আমাকে সেই দলে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। সেটা ছিল সবচেয়ে স্থায়ী উপহার, যা এই পর্যন্ত আমাকে কেউ দেয়নি কারণ এটা আমার মধ্যে যিহোবার সংগঠনের প্রতি সারা জীবনের জন্য উপলব্ধিবোধ জাগিয়ে তুলেছিল। হ্যাঁ, আমার জীবনের গল্প এটুকুই। সংক্ষেপেই লিখলাম কারণ আমি চিঠিটা সময়মতো শেষ করতে চাই।”

ওপরে বলা কথাগুলো আসলে সাড়ে ছয় পৃষ্ঠার এক চিঠির কিছু উদ্ধৃত অংশ মাত্র। সুজানের চিঠির শেষের দিকে তিনি বলেছিলেন: “গত মাসে হাসপাতালে আমার অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে গিয়েছিল আর আমি মনে করেছিলাম যে, আমি আর বেশি দিন বাঁচব না . . . আমি যিহোবার কাছে প্রার্থনা করেছিলাম যে, মাত্র আরও দুসপ্তাহের জন্য আমার স্বাস্থ্য ভাল থাকলে আমি কয়েকটা কাজ সেরে ফেলব। . . . আমি আর বেশি দিন বাঁচব বলে মনে হচ্ছে না কিন্তু আমাকে স্বীকার করতেই হবে যে, সত্যে থাকার এই বছরগুলো খুবই চমৎকার, সর্বোত্তম জীবন, যেমনটা কেউ কখনো আশাই করবে না।”

সেই চিঠির শেষে কোনো সৌজন্যমূলক সম্ভাষণ বা স্বাক্ষর ছিল না অথবা এমনকি সেই চিঠিটা কাউকে কখনো পাঠানোও হয়নি। যারা এটা পেয়েছিল, তারা জানত না যে, কাকে দেওয়া উচিত। কিন্তু আগে যেমন উল্লেখ করা হয়েছে, সেই চিঠিটা শেষ পর্যন্ত সুজানের মাকে পাঠানো হয়েছিল।

সুজানের সম্বন্ধে আরও কিছু জানা

১৯৭৯ সালের ১৪ই এপ্রিল সুজানের বাপ্তিস্মের পর, তার মা ফ্লোরিডাতে ফিরে এসেছিলেন। সুজান আলাস্কায় থেকে গিয়েছিলেন কারণ তিনি নর্থ পোল মণ্ডলীর ভাইবোনদের সঙ্গে খুবই ঘনিষ্ঠ হয়ে গিয়েছিলেন। এর অল্প কিছুদিন পরই তিনি একজন অগ্রগামী হিসেবে পূর্ণসময়ের পরিচর্যা শুরু করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত তিনি ফ্লোরিডাতে চলে এসেছিলেন এবং ১৯৯১ সালে একজন খ্রিস্টান প্রাচীন ও একজন সহঅগ্রগামী পরিচারককে বিয়ে করেছিলেন, যিনি সুজান মারা যাওয়ার অল্প কিছু সময় পর মারা গিয়েছেন।

সুজান ও তার স্বামী সকলেরই প্রিয় দম্পতি ছিল, যারা সুজান অসুস্থ না হওয়া পর্যন্ত একসঙ্গে পূর্ণসময়ের পরিচর্যা করে গিয়েছিল আর এরপর তাদের জন্য তা চালিয়ে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। সব মিলিয়ে সুজান ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে পূর্ণসময়ের পরিচর্যা উপভোগ করেছিলেন। তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সভাটা নর্থ পোল মণ্ডলী টেলিফোনের সংযোগের মাধ্যমে শুনেছিল।

সুজানের চিঠি আমাদেরকে, যারা যিহোবাকে সেবা করে ও যাদের পুনরুত্থানের চমৎকার আশা রয়েছে, তারা যে-আধ্যাত্মিক আশীর্বাদগুলো উপভোগ করে থাকে, সেগুলো আরও বেশি করে উপলব্ধি করতে সাহায্য করে। (প্রেরিত ২৪:১৫) সুজানের অভিজ্ঞতা এই বিষয়টাকেও স্পষ্ট করে যে, ঈশ্বর সেই সমস্ত লোকের নিকটবর্তী, যারা তাঁর নিকটবর্তী হয়!—যাকোব ৪:৭, ৮. (g ১২/০৬)

[পাদটীকাগুলো]

^ ভাই জেনরিক ও তার স্ত্রী ১৯৯৩ সালে এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় মারা যায়।

^ ১৯৯৯ সালের ২২শে ডিসেম্বরের সচেতন থাক! (ইংরেজি) পত্রিকার ৭ পৃষ্ঠা দেখুন।

^ যিহোবার উদ্দেশে প্রশংসা গীত গাও (ইংরেজি), গান সংখ্যা ২৯, “সাক্ষিরা এগিয়ে চলুন!”

[২৩ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]

“সত্যে থাকার এই বছরগুলো খুবই চমৎকার, সর্বোত্তম জীবন, যেমনটা কেউ কখনো আশাই করবে না”

[২১ পৃষ্ঠার চিত্র]

সুজানের বয়স যখন দশ বছর

[২৩ পৃষ্ঠার চিত্র]

সুজান তার স্বামী জেমস সিমোরের সঙ্গে