সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

অধ্যয়ন প্রবন্ধ ২১

প্রকাশিত বাক্যে আমাদের ভবিষ্যতের জন্য আশা

প্রকাশিত বাক্যে আমাদের ভবিষ্যতের জন্য আশা

“আমেন! প্রভু যিশু, এসো।”—প্রকা. ২২:২০.

গান ৫৪ আমাদের বিশ্বাস থাকা প্রয়োজন

সারাংশ a

১. বর্তমানে সমস্ত লোককে কোন জরুরি সিদ্ধান্ত নিতে হবে?

 বর্তমানে সমস্ত লোককে একটা জরুরি সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তারা কি নিখিলবিশ্বের প্রভু যিহোবাকে সমর্থন করবে, না কি তাঁর শত্রু শয়তানকে সমর্থন করবে? তারা দু-নৌকায় পা দিয়ে থাকতে পারে না। বর্তমানে তারা যে-সিদ্ধান্ত নেবে, সেটা নির্ধারণ করবে, তাদের ভবিষ্যৎ কেমন হবে। (মথি ২৫:৩১-৩৩, ৪৬) ‘মহাক্লেশের’ সময় যখন মানুষের বিচার হবে, তখন এটা নির্ধারণ করা হবে যে, কারা রক্ষা পাবে আর কাদের ধ্বংস করে দেওয়া হবে।—প্রকা. ৭:১৪; ১৪:৯-১১; যিহি. ৯:৪, ৬.

২. (ক) ইব্রীয় ১০:৩৫-৩৯ পদে আমাদের কী করার বিষয়ে উৎসাহিত করা হয়েছে? (খ) প্রকাশিত বাক্যের কথাগুলো মনে রাখলে আমরা কী করতে পারব?

ইব্রীয় ১০:৩৫-৩৯ পদ পড়ুন। আপনি যদি যিহোবার শাসনকে সমর্থন করার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন, তা হলে আপনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এখন আপনি হয়তো অন্যদের সাহায্য করতে চাইবেন, যাতে তারাও এই সিদ্ধান্ত নেয়। এরজন্য, আপনি প্রকাশিত বাক্য বইয়ে দেওয়া কথাগুলো মনে রাখতে পারেন। এই বইয়ে শুধু এটা বলা হয়নি যে, ঈশ্বরের শত্রুদের কী হবে বরং এও বলা হয়েছে, যারা যিহোবার প্রতি বিশ্বস্ত থাকবে, তারা কোন কোন আশীর্বাদ লাভ করবে। আপনি যদি এই কথাগুলো পড়েন এবং তা নিয়ে চিন্তা করেন, তা হলে সমস্যা এলে আপনি যিহোবার সেবা চালিয়ে যেতে পারবেন। এর পাশাপাশি, আপনি অন্যদেরও সাহায্য করতে পারবেন, যাতে তারা যিহোবাকে সেবা করার সিদ্ধান্ত নেয় আর এই সিদ্ধান্তে স্থির থাকে।

৩. এই প্রবন্ধে আমরা কোন প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করব?

এই প্রবন্ধে আমরা বিশেষ করে দুটো প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করব: (১) যে-লোকেরা যিহোবার শাসনকে সমর্থন করবে, তাদের কী হবে? (২) যে-লোকেরা গাঢ় লাল রঙের হিংস্র পশুকে সমর্থন করবে, তাদের কী হবে?

বিশ্বস্ত লোকদের জন্য পুরস্কার

৪. প্রেরিত যোহন স্বর্গে যিশুর সঙ্গে কাদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন?

একটা দর্শনে প্রেরিত যোহন লোকদের দুটো দল দেখেন, যারা যিহোবার শাসনকে সমর্থন করছে এবং যাদের অনন্তজীবন দেওয়া হবে। প্রথম দলে ১,৪৪,০০০ জন রয়েছে। (প্রকা. ৭:৪) তাদের পৃথিবী থেকে বাছাই করা হয়েছে, যাতে তারা স্বর্গে যায় এবং যিশুর সঙ্গে মিলে পৃথিবীর উপর শাসন করে। (প্রকা. ৫:৯, ১০; ১৪:৩, ৪) যোহন দেখেন যে, এই ১,৪৪,০০০ জন যিশুর সঙ্গে সিয়োন পর্বতের উপরে অর্থাৎ স্বর্গে দাঁড়িয়ে আছে।—প্রকা. ১৪:১.

৫. অবশিষ্ট অভিষিক্ত ব্যক্তিদের ভবিষ্যতে কী হবে?

এই ১,৪৪,০০০ জনের বাছাই প্রথম শতাব্দী থেকে শুরু হয়ে গিয়েছিল আর এখন পর্যন্ত তাদের মধ্যে অনেকেই স্বর্গে চলে গিয়েছে। (লূক ১২:৩২; রোমীয় ৮:১৭) যোহনকে বলা হয়েছিল, শেষকালে এই পৃথিবীতে তাদের মধ্যে শুধু “অবশিষ্ট” বেঁচে থাকবে। মহাক্লেশ শুরু হওয়ার আগে তাদের শেষ “সিলমোহর” দিয়ে চিহ্ন দেওয়া হবে। (প্রকা. ৭:২, ৩; ১২:১৭) এরপর, মহাক্লেশের সময় তাদের স্বর্গে নিয়ে যাওয়া হবে। এই ১,৪৪,০০০ জন স্বর্গে যিশুর সঙ্গে মিলে ঈশ্বরের রাজ্যে শাসন করবে।—মথি ২৪:৩১; প্রকা. ৫:৯, ১০.

৬-৭. (ক) অভিষিক্ত খ্রিস্টানদের দেখার পর যোহন কী দেখেছিলেন? (খ) আমাদের বেঁচে থাকার আশা স্বর্গে হোক কিংবা পৃথিবীতে, কেন আমরা সবাই প্রকাশিত বাক্য ৭ অধ্যায়ের ভবিষ্যদ্‌বাণী পরিপূর্ণ হতে দেখতে চাই?

স্বর্গে ১,৪৪,০০০ জনকে দেখার পর, যোহন ‘এক বিরাট জনতাকে’ দেখতে পান, যাদের গোনার সাধ্য কারো ছিল না। (প্রকা. ৭:৯, ১০) এই ‘বিরাট জনতার’ মধ্যে কোন লোকেরা রয়েছে? যোহন লিখেছিলেন: “এরা সেই লোক, যারা মহাক্লেশ পার হয়ে এসেছে এবং মেষশাবকের রক্তে নিজেদের পোশাক ধুয়ে সেগুলোকে সাদা করেছে।” (প্রকা. ৭:১৪) মহাক্লেশ থেকে রক্ষা পাওয়ার পর, এই ‘বিরাট জনতার’ লোকেরা পৃথিবীতে চিরকাল ধরে বেঁচে থাকবে আর প্রচুর আশীর্বাদ লাভ করবে।—গীত. ৩৭:৯-১১, ২৭-২৯; হিতো. ২:২১, ২২; প্রকা. ৭:১৬, ১৭.

কল্পনা করুন, যখন প্রকাশিত বাক্য ৭ অধ্যায়ের কথাগুলো পরিপূর্ণ হবে, তখন আমাদের কেমন লাগবে। সেই সময়টা কতই-না আনন্দদায়ক হবে! আমাদের বেঁচে থাকার আশা স্বর্গে হোক কিংবা পৃথিবীতে, সেই সময়ে আমরা সবাই অনেক আনন্দিত হব কারণ আমরা যিহোবার শাসনকে সমর্থন করেছিলাম। কিন্তু আসুন, আমরা দেখি যে, মহাক্লেশের সময় ঈশ্বরের শত্রুদের কী হবে।—মথি ২৪:২১.

বিরোধীদের পরিণতি

৮. কোন ঘটনা থেকে মহাক্লেশ শুরু হবে আর অনেক লোক কী করবে?

আগের প্রবন্ধে আমরা যেমনটা শিখেছিলাম, জগতের সরকারগুলো খুব শীঘ্র মহতী বাবিল অর্থাৎ পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে থাকা মিথ্যা ধর্মগুলোকে ধ্বংস করে দেবে। (প্রকা. ১৭:১৬, ১৭) এই ঘটনা থেকে মহাক্লেশ শুরু হবে। যখন সমস্ত ধর্ম ধ্বংস হয়ে যাবে, তখন কি অনেক লোক যিহোবার উপাসনা করতে চাইবে? না। প্রকাশিত বাক্য ৬ অধ্যায়ে লেখা আছে, তারা পর্বতের আড়ালে গিয়ে লুকোবে অর্থাৎ তারা সরকারগুলোর এবং বাণিজ্যিক জগতের উপর নির্ভর করবে। তারা ঈশ্বরের শাসনকে সমর্থন করবে না, এইজন্য যিহোবা তাদের বিরোধী হিসেবে দেখবেন।—লূক ১১:২৩; প্রকা. ৬:১৫-১৭.

৯. মহাক্লেশের সময় কেন যিহোবার লোকদের সবার চেয়ে আলাদা দেখাবে আর তাদের প্রতি কী হবে?

মহাক্লেশের সেই কঠিন সময়ে যিহোবার লোকদের সবার চেয়ে আলাদা দেখাবে। শুধু তারাই তাদের ঈশ্বর যিহোবার উপাসনা করবে এবং ‘হিংস্র পশুকে’ সমর্থন করবে না। (প্রকা. ১৩:১৪-১৭) এটা দেখে ঈশ্বরের বিরোধীরা রাগে ফেটে পড়বে আর অনেক জাতি মিলে ঈশ্বরের লোকদের উপর আক্রমণ করবে। বাইবেলে এটাকে মাগোগ দেশীয় গোগের আক্রমণ বলা হয়েছে।—যিহি. ৩৮:১৪-১৬.

১০. যখন যিহোবার লোকদের উপর আক্রমণ করা হবে, তখন তিনি কী করবেন? (প্রকাশিত বাক্য ১৯:১৯-২১)

১০ যখন যিহোবার লোকদের উপর আক্রমণ করা হবে, তখন এটা দেখে যিহোবার কেমন লাগবে? তিনি বলেন, “আমার ভীষণ ক্রোধ জ্বলে উঠবে।” (যিহি. ৩৮:১৮, বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারশন; যিহি. ৩৮:২১-২৩) প্রকাশিত বাক্য ১৯ অধ্যায়ে বলা হয়েছে যে, যিহোবা কী করবেন। যিহোবা তাঁর লোকদের রক্ষা করার এবং তাঁর শত্রুদের ধ্বংস করার জন্য তাঁর পুত্রকে পাঠাবেন। যিশুর সঙ্গে “স্বর্গীয়বাহিনী” অর্থাৎ বিশ্বস্ত স্বর্গদূতেরা এবং ১,৪৪,০০০ জন সহ-শাসকও থাকবে। (প্রকা. ১৭:১৪; ১৯:১১-১৫) এই যুদ্ধের ফলাফল কী হবে? যত লোক এবং সংগঠনগুলো যিহোবার বিরুদ্ধে যাবে, তাদের সবাইকে ধ্বংস করে দেওয়া হবে। —পড়ুন, প্রকাশিত বাক্য ১৯:১৯-২১.

যুদ্ধের পর, এক বিয়ে

১১. প্রকাশিত বাক্যের শেষের দিকে কোন বিশেষ ঘটনার বিষয়ে বলা হয়েছে?

১১ যখন ঈশ্বরের শত্রুরা ধ্বংস হয়ে যাবে, তখন পৃথিবীতে বিশ্বস্ত লোকেরা আনন্দ করবে। সেইসময় স্বর্গের পরিবেশ কেমন হবে? মহতী বাবিলের ধ্বংসের সময় স্বর্গে অনেক আনন্দ হয়েছিল, কিন্তু এখন এমন কিছু হবে, যেটার কারণে স্বর্গে আরও বেশি আনন্দ হবে। (প্রকা. ১৯:১-৩) প্রকাশিত বাক্য বইয়ের শেষের দিকে বলা হয়েছে, ‘মেষশাবকের বিয়ে’ হবে।—প্রকা. ১৯:৬-৯.

১২. প্রকাশিত বাক্য ২১:১, ২ পদ অনুযায়ী মেষশাবকের বিয়ে কখন হবে?

১২ মেষশাবকের বিয়ে কখন হবে? আরমাগিদোন যুদ্ধ শুরু হওয়ার ঠিক আগে ১,৪৪,০০০ জন ব্যক্তির সবাইকে স্বর্গে একত্রিত করা হবে। কিন্তু, এই বিয়ে তখনও হবে না। (পড়ুন, প্রকাশিত বাক্য ২১:১, ২.) আরমাগিদোন যুদ্ধে যখন সমস্ত শত্রু ধ্বংস হয়ে যাবে, তারপর মেষশাবকের বিয়ে হবে।—গীত. ৪৫:৩, ৪, ১৩-১৭.

১৩. মেষশাবকের বিয়ের অর্থ কী?

১৩ যখন একজন পুরুষ ও নারীর বিয়ে হয়, তখন তারা একতাবদ্ধ হয়ে যায়। একইভাবে, যখন মেষশাবকের বিয়ে হবে, তখন যিশু এবং তাঁর “কনে” অর্থাৎ ১,৪৪,০০০ জন একতাবদ্ধ হয়ে যাবে। এরপর, তারা একসঙ্গে ১,০০০ বছরের জন্য পৃথিবীর উপর শাসন করতে শুরু করবে।—প্রকা. ২০:৬.

এক অপূর্ব নগর এবং তা থেকে পাওয়া আশীর্বাদগুলো

প্রকাশিত বাক্য ২১ অধ্যায়ে বলা হয়েছে যে, নতুন জেরুসালেম “ঈশ্বর যেখানে থাকেন, সেই স্বর্গ থেকে নেমে আসছে।” এর অর্থ হল, হাজার বছরের রাজত্বের সময় এই নগর থেকে বাধ্য মানুষ প্রচুর আশীর্বাদ লাভ করবে (১৪-১৬ অনুচ্ছেদ দেখুন)

১৪-১৫. প্রকাশিত বাক্য ২১ অধ্যায়ে ১,৪৪,০০০ জনকে কীভাবে চিত্রিত করা হয়েছে? (প্রচ্ছদে দেওয়া ছবিটা দেখুন।)

১৪ প্রকাশিত বাক্য ২১ অধ্যায়ে ১,৪৪,০০০ জনকে এক অপূর্ব নগর হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে। সেই নগরের নাম হল “নতুন জেরুসালেম।” (প্রকা. ২১:২, ৯) এই নগরের ‘১২টা ভিত্তিপ্রস্তর’ আছে। এই ১২টা প্রস্তরের উপর ‘মেষশাবকের ১২ জন প্রেরিতের নাম’ লেখা রয়েছে। যোহন যখন দর্শনে এগুলো দেখেছিলেন, তখন তিনি একেবারে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। একটা প্রস্তরের উপর তার নিজের নাম লেখা ছিল! এটা দেখে তিনি অনেক আনন্দিত হয়েছিলেন।—প্রকা. ২১:১০-১৪; ইফি. ২:২০.

১৫ এই নগর অনেকটাই আলাদা। এর দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা সবই একই মাপের। নগরের প্রধান সড়ক খাঁটি সোনা দিয়ে তৈরি, এর ১২টা প্রবেশদ্বার মুক্তো দিয়ে তৈরি এবং এর ভিত্তি ও প্রাচীর মূল্যবান রত্ন দিয়ে সাজানো আছে। (প্রকা. ২১:১৫-২১) কিন্তু, সেই নগরে একটা জিনিস নেই। যোহন আরও বলেন: “আমি সেই নগরে কোনো মন্দির দেখতে পেলাম না, কারণ স্বয়ং সর্বশক্তিমান যিহোবা ঈশ্বর আর সেইসঙ্গে মেষশাবকও সেই নগরের মন্দির। আর সেই নগরে আলো দেওয়ার জন্য সূর্য কিংবা চাঁদের প্রয়োজন নেই, কারণ ঈশ্বরের প্রতাপ সেটাকে আলোকিত করে এবং মেষশাবক সেটার প্রদীপ।” (প্রকা. ২১:২২, ২৩) সমস্ত অভিষিক্ত খ্রিস্টান স্বর্গে যিহোবার সঙ্গে থাকবে, তাই তাদের কোনো মন্দিরের প্রয়োজন হবে না। (প্রকা. ২২:৩, ৪) এ ছাড়া, যিশু স্বর্গে মহাযাজক হয়ে গিয়েছেন আর তাঁর নেতৃত্বে সমস্ত অভিষিক্ত খ্রিস্টান যিহোবার পবিত্র সেবা করবে। (ইব্রীয় ৭:২৭) এই কারণগুলোর জন্য প্রকাশিত বাক্যে যিহোবা ও যিশুকে নতুন জেরুসালেমের মন্দির বলা হয়েছে

“নদী” এবং ‘গাছগুলো’ থেকে কারা উপকৃত হবে? (১৬-১৭ অনুচ্ছেদ দেখুন)

১৬. ঈশ্বরের রাজ্যের হাজার বছরের রাজত্বের সময় মানুষ কোন কোন আশীর্বাদ লাভ করবে?

১৬ যদিও নতুন জেরুসালেমের ভবিষ্যদ্‌বাণী বিশেষ করে অভিষিক্ত খ্রিস্টানদের বিষয়ে, তবে যে-লোকদের পৃথিবীতে বেঁচে থাকার আশা রয়েছে, তাদেরও এই ভবিষ্যদ্‌বাণীর উপর মনোযোগ দেওয়া উচিত। ঈশ্বরের রাজ্যের হাজার বছরের রাজত্বের সময় নতুন জেরুসালেমের কারণে পৃথিবীতে বসবাসকারী লোকেরা অনেক আশীর্বাদ লাভ করবে। যোহন এই আশীর্বাদগুলোকে “জীবনজলের এক নদী” হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি এও লিখেছেন, “নদীর দু-পাশেই জীবনবৃক্ষ রয়েছে,” যেটার পাতা ‘জাতিগুলোকে সুস্থ করে তুলবে।’ (প্রকা. ২২:১, ২) “নদী” এবং ‘গাছগুলো’ ঈশ্বরের এমন এক ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেটার মাধ্যমে মানুষ হাজার বছরের রাজত্ব চলাকালীন ধীরে ধীরে সিদ্ধতার দিকে এগিয়ে যাবে। সেইসময় কোনো অসুস্থতা, দুঃখকষ্ট কিছুই থাকবে না।—প্রকা. ২১:৩-৫.

১৭. হাজার বছরের রাজত্ব চলাকালীন কোন ধরনের লোকেরা আশীর্বাদগুলো লাভ করবে? (প্রকাশিত বাক্য ২০:১১-১৩)

১৭ হাজার বছরের রাজত্ব চলাকালীন কোন ধরনের লোকেরা এই আশীর্বাদগুলো লাভ করবে? সবচেয়ে প্রথমে বিরাট জনতার লোকেরা, যারা আরমাগিদোন থেকে রক্ষা পাবে। আর যদি নতুন জগতে তাদের সন্তান হয়, তা হলে তারাও এই আশীর্বাদগুলো লাভ করবে। এ ছাড়া, প্রকাশিত বাক্য ২০ অধ্যায়ে বলা আছে যে, মৃত ব্যক্তিদের পুনরুত্থিত করা হবে। (পড়ুন, প্রকাশিত বাক্য ২০:১১-১৩.) এর মধ্যে “ধার্মিক ও অধার্মিক” উভয় প্রকার লোক থাকবে। কিন্তু, এর অর্থ কি এই, সমস্ত মৃত ব্যক্তিকে পুনরুত্থিত করা হবে? না। “ধার্মিক” লোকদের অর্থ হল, যারা যিহোবার প্রতি বিশ্বস্ত ছিল এবং মারা গিয়েছিল। “অধার্মিক” লোকদের অর্থ হল, যারা যিহোবা সম্বন্ধে শেখার সুযোগ পায়নি। (প্রেরিত ২৪:১৫; যোহন ৫:২৮, ২৯) তবে, যে-লোকদের কাছে যিহোবার সেবা করার সুযোগ ছিল, কিন্তু তারা সেটা করেনি, তাদের দুষ্ট বলে গণ্য করা হবে আর তাদের পুনরুত্থিত করা হবে না।—মথি ২৫:৪৬; ২ থিষল. ১:৯; প্রকা. ১৭:৮; ২০:১৫.

চূড়ান্ত পরীক্ষা

১৮. হাজার বছরের শাসনের শেষের দিকে কী হবে?

১৮ হাজার বছরের শাসনের শেষের দিকে পৃথিবীতে বসবাসকারী সমস্ত মানুষ সিদ্ধ হয়ে যাবে। আদমের কাছ থেকে পাওয়া পাপ এবং সেটার প্রভাব পুরোপুরিভাবে দূর হয়ে যাবে। (রোমীয় ৫:১২) এভাবে মানুষ, যারা আগে পাপের কারণে বলতে গেলে মৃত ছিল, তারা ১,০০০ বছর শেষ হওয়া পর্যন্ত “জীবিত” হয়ে যাবে।—প্রকা. ২০:৫.

১৯. কেন চূড়ান্ত পরীক্ষা হবে?

১৯ হাজার বছর শেষ হওয়ার পর শয়তানকে অতল গহ্বর থেকে বের করা হবে আর সে পৃথিবীতে বসবাসকারী সমস্ত সিদ্ধ মানুষের উপর পরীক্ষা নিয়ে আসবে। (প্রকা. ২০:৭) শয়তান সিদ্ধ ব্যক্তি যিশুর উপরও পরীক্ষা নিয়ে এসেছিল। কিন্তু যিশু, যিহোবার প্রতি বিশ্বস্ত ছিলেন। চূড়ান্ত পরীক্ষা চলাকালীন প্রত্যেক সিদ্ধ ব্যক্তির কাছে এটা প্রমাণ করার সুযোগ থাকবে যে, তারা যিহোবার প্রতি বিশ্বস্ত থাকবে কি না। সেইসময় যারা যিহোবার প্রতি বিশ্বস্ত থাকবে, তারা অনন্তজীবন এবং প্রকৃত স্বাধীনতা লাভ করবে। (রোমীয় ৮:২১) কিন্তু, যারা বিশ্বস্ত থাকবে না, তাদের শয়তান এবং তার মন্দ স্বর্গদূতদের সঙ্গে চিরকালের জন্য ধ্বংস করে দেওয়া হবে।—প্রকা. ২০:৮-১০.

২০. প্রকাশিত বাক্যে দেওয়া ভবিষ্যদ্‌বাণীগুলোর বিষয়ে চিন্তা করে আপনার কেমন লাগে?

২০ প্রকাশিত বাক্য বই আলোচনা করে আপনার কেমন লেগেছে? যখন আপনি চিন্তা করেছেন, এই বইয়ে দেওয়া ভবিষ্যদ্‌বাণীগুলো কীভাবে পরিপূর্ণ হবে আর আপনিও সেখানে থাকবেন, তখন আপনি কি রোমাঞ্চিত হননি? আপনি কি অন্যদের উৎসাহিত করার জন্য উদ্যোগী হননি, যেন তারাও যিহোবার উপাসনা করে? (প্রকা. ২২:১৭) নিশ্চয়ই! আমরা সবাই এমনটাই অনুভব করেছি আর প্রেরিত যোহনের মতো আমরাও বলতে চাই: “আমেন! প্রভু যিশু, এসো।”—প্রকা. ২২:২০.

গান ৯ আমাদের ঈশ্বর যিহোবার প্রশংসা করো!

a এই প্রবন্ধে আমরা প্রকাশিত বাক্য বই থেকে জানব যে, আমাদের ভবিষ্যৎ কেমন হবে। যারা যিহোবার প্রতি বিশ্বস্ত থাকবে এবং তাঁর শাসনকে সমর্থন করবে, তারা ভবিষ্যতে অনেক আশীর্বাদ লাভ করবে। কিন্তু, যারা তাঁর বিরোধিতা করবে এবং তাঁর শাসনের বিরুদ্ধে যাবে, তাদের ধ্বংস করে দেওয়া হবে।