Privacy Settings

To provide you with the best possible experience, we use cookies and similar technologies. Some cookies are necessary to make our website work and cannot be refused. You can accept or decline the use of additional cookies, which we use only to improve your experience. None of this data will ever be sold or used for marketing. To learn more, read the Global Policy on Use of Cookies and Similar Technologies. You can customize your settings at any time by going to Privacy Settings.

গল্প ৩৩

সূফসাগর পার হওয়া

সূফসাগর পার হওয়া

দেখো কী হচ্ছে! মোশি সূফসাগরের ওপর তার লাঠি ধরে আছেন। অন্য পাশে তার সঙ্গে নিরাপদে দাঁড়িয়ে থাকা ওই লোকেরা হল ইস্রায়েলীয়রা। কিন্তু ফরৌণ আর তার সৈন্যবাহিনী সাগরে ডুবে যাচ্ছে। চলো দেখি কীভাবে তা হল।

আমরা যেমন শিখেছি, ঈশ্বর মিশরীয়দের ওপর দশম আঘাত নিয়ে আসার পর ফরৌণ ইস্রায়েলীয়দেরকে মিশর ছেড়ে চলে যেতে বলেছিলেন। প্রায় ছয় লক্ষ ইস্রায়েলীয় পুরুষ ও সেইসঙ্গে অনেক নারী এবং ছেলে-মেয়ে সেই দেশ ছেড়ে চলে এসেছিল। এ ছাড়া, আরও বিরাটসংখ্যক লোক, যারা যিহোবার প্রতি বিশ্বাস করেছিল, তারাও ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে চলে এসেছিল। তারা সকলে তাদের সঙ্গে করে তাদের মেষ, ছাগল ও গরু নিয়ে এসেছিল।

ইস্রায়েলীয়রা চলে আসার আগে মিশরীয়দের কাছে জামাকাপড় এবং সোনা ও রুপোর তৈরি জিনিসপত্র চেয়েছিল। মিশরীয়রা তাদের ওপর আসা শেষ আঘাতটার কারণে অনেক ভয় পেয়ে গিয়েছিল। তাই, ইস্রায়েলীয়রা যা যা চেয়েছিল, সেগুলোর সমস্তই তারা তাদেরকে দিয়েছিল।

কয়েক দিন পর ইস্রায়েলীয়রা সূফসাগরের কাছে এসে পৌঁছায়। সেখানেই তারা বিশ্রাম নেয়। ইতিমধ্যে, ফরৌণ ও তার লোকেরা ইস্রায়েলীয়দের চলে যেতে দিয়েছে বলে আপশোস করতে শুরু করে। ‘আমরা যে কেন আমাদের দাসদের চলে যেতে দিলাম!’ তারা বলে।

তাই, ফরৌণ আরও এক বার তার মন পরিবর্তন করেন। তিনি শীঘ্র তার যুদ্ধের রথ ও সৈন্যবাহিনীকে প্রস্তুত করেন। এরপর তিনি বিশেষ ছয়-শো রথ ও সেইসঙ্গে মিশরের অন্যান্য সমস্ত রথ নিয়ে ইস্রায়েলীয়দের পিছু পিছু তাড়া করতে শুরু করেন।

ইস্রায়েলীয়রা যখন তাদের পিছন পিছন ফরৌণ ও সৈন্যবাহিনীকে আসতে দেখেছিল, তখন তারা অনেক ভয় পেয়ে যায়। তাদের পালিয়ে যাওয়ার কোনো রাস্তাই ছিল না। তাদের এক দিকে ছিল সূফসাগর আর অন্য দিক থেকে আসছিল মিশরীয়রা। কিন্তু, যিহোবা তাঁর প্রজা ও মিশরীয়দের মাঝখানে একটা মেঘস্থাপন করেন। তাই, মিশরীয়রা আক্রমণ করার জন্য ইস্রায়েলীয়দের দেখতে পাচ্ছিল না।

এরপর, যিহোবা মোশিকে হাত বাড়িয়ে তার লাঠিটা সূফসাগরের ওপর তুলে ধরতে বললেন। তিনি যখন তা করেন, তখন যিহোবা এক প্রবল পূর্বীয় বায়ু প্রবাহিত করেন। সাগরের জল দু-ভাগ হয়ে দু-দিকে আটকে যায়।

তখন ইস্রায়েলীয়রা সাগরের মাঝখানে শুকনো পথ দিয়ে হেঁটে যেতে শুরু করে। লক্ষ লক্ষ লোকের তাদের সমস্ত পশুপাখি নিয়ে নিরাপদে সাগরের অন্য পারে পৌঁছাতে বেশ কয়েক ঘন্টা সময় লাগে। অবশেষে, মিশরীয়রা ইস্রায়েলীয়দের দেখতে পেয়েছিল। ওই তো তাদের দাসেরা পালিয়ে যাচ্ছে! তাই, তারা তাড়াহুড়ো করে তাদের পিছন পিছন সাগরে নেমে যায়।

তারা যখন তা করে, তখন ঈশ্বর তাদের রথের চাকা খুলে দিলেন। মিশরীয়রা তখন খুবই ভয় পেয়ে যায় এবং আর্তনাদ করে বলে: ‘যিহোবা ইস্রায়েলীয়দের পক্ষ নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন। চলো এখান থেকে পালিয়ে যাই!’ কিন্তু তখন, অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।

ঠিক তখনই যিহোবা মোশিকে আবারও হাত বাড়িয়ে তার লাঠিটা সাগরের ওপর ধরতে বললেন, যেমনটা তুমি ছবিতে দেখেছ। আর যখনই মোশি তা করেন, তখন জলের দেওয়াল ফিরে আসতে শুরু করে এবং মিশরীয়দের ও তাদের রথগুলো ডুবিয়ে দেয়। পুরো সৈন্যদলই ইস্রায়েলীয়দের পিছন পিছন সাগরে নেমেছিল। আর তাই একজন মিশরীয়ও জীবিত থাকে না!

ঈশ্বরের প্রজারা রক্ষা পেয়েছে বলে কতই-না খুশি হয়েছিল! পুরুষেরা যিহোবাকে ধন্যবাদ জানিয়ে এক গান গেয়েছিল: ‘যিহোবা মহান বিজয়ী। তিনি অশ্ব ও অশ্বারোহীদের সাগরে নিক্ষেপ করেছেন।’ মোশির বোন মরিয়মও তার মৃদঙ্গ নিয়েছিলেন আর তার সঙ্গে সঙ্গে অন্য সমস্ত মহিলাও মৃদঙ্গ নিয়েছিল। আর তারা আনন্দে নেচে নেচে সেই একই গান গেয়েছিল, যা পুরুষরাও গাইছিল: ‘যিহোবা মহান বিজয়ী। তিনি অশ্ব ও অশ্বারোহীদের সাগরে নিক্ষেপ করেছেন।’

যাত্রাপুস্তক ১২ থেকে ১৫ অধ্যায়।