সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

“আগ্রহপূর্ব্বক” সঠিক জ্ঞানে বৃদ্ধি লাভ করুন

“আগ্রহপূর্ব্বক” সঠিক জ্ঞানে বৃদ্ধি লাভ করুন

“আগ্রহপূর্ব্বক” সঠিক জ্ঞানে বৃদ্ধি লাভ করুন

 যিহোবার সকল দাসই তাঁর অনুমোদন লাভের চেষ্টা করে। এইরকম আকাঙ্ক্ষা থাকায়, আমরা আমাদের বিশ্বাসের গুণগত মানকে উন্নত করতে এবং উদ্যমের সঙ্গে পবিত্র সেবা প্রদান করতে উৎসুক। কিন্তু, প্রেরিত পৌল সম্ভাব্য এক বিপদের দিকে আমাদের মনোযোগ আকর্ষণ করেন, যা তার সময়ের কিছু যিহুদিকে প্রভাবিত করেছিল: “ঈশ্বরের বিষয়ে তাহাদের উদ্যোগ আছে, কিন্তু তাহা জ্ঞানানুযায়ী [‘যথার্থ জ্ঞানে,’ বাংলা জুবিলী বাইবেল] নয়।” (রোমীয় ১০:২) স্পষ্টতই, যিহোবার প্রতি আমাদের বিশ্বাস ও উপাসনা নিছক আবেগের ওপর ভিত্তি করে হওয়া উচিত নয়। সৃষ্টিকর্তা ও তাঁর ইচ্ছা সম্বন্ধে আমাদের সঠিক জ্ঞান থাকতে হবে।

তার লেখার অন্যান্য জায়গায় পৌল, ঈশ্বর অনুমোদিত আচরণকে, উৎসুকভাবে জ্ঞান আহরণের সঙ্গে যুক্ত করেছেন। তিনি প্রার্থনা করেছিলেন যে, খ্রিস্টের অনুসারীরা যেন ঈশ্বরের ইচ্ছার ‘তত্ত্বজ্ঞানে পূর্ণ হয় আর তদ্দ্বারা প্রভুর [“যিহোবার,” NW] যোগ্যরূপে সর্ব্বতোভাবে প্রীতিজনক আচরণ করে, সমস্ত সৎকর্ম্মে ফলবান্‌ ও ঈশ্বরের তত্ত্বজ্ঞানে বর্দ্ধিষ্ণু হয়।’ (কল. ১:৯, ১০) ‘তত্ত্বজ্ঞান’ বা সঠিক জ্ঞান লাভ করা আমাদের জন্য কেন এত গুরুত্বপূর্ণ? আর কেন আমাদের এই ধরনের জ্ঞানে বৃদ্ধি লাভ করা উচিত?

বিশ্বাসের চাবিকাঠি

বাইবেলে যেমন প্রকাশিত হয়েছে, ঈশ্বর ও তাঁর ইচ্ছা সম্বন্ধে সঠিক জ্ঞান হচ্ছে আমাদের বিশ্বাসের ভিত্তি। এই ধরনের নির্ভরযোগ্য জ্ঞান ছাড়া, যিহোবার প্রতি আমাদের বিশ্বাস এক তাসের ঘরের মতো হবে, যা মৃদু বাতাসেই ভেঙে পড়তে পারে। পৌল আমাদের উৎসাহিত করেন যে, আমরা যেন আমাদের “চিত্ত-সঙ্গত আরাধনা [“যুক্তি করার ক্ষমতা,” NW]” সহকারে ঈশ্বরকে আমাদের পবিত্র সেবা প্রদান করি এবং “মনের নূতনীকরণ” করি। (রোমীয় ১২:১, ২) নিয়মিত বাইবেল অধ্যয়ন আমাদের এই ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে।

ইভা নামে পোল্যান্ডের একজন নিয়মিত অগ্রগামী স্বীকার করেন: “আমি যদি নিয়মিতভাবে ঈশ্বরের বাক্য অধ্যয়ন না করতাম, তাহলে আমি যিহোবা সম্বন্ধে সঠিক জ্ঞানে বৃদ্ধি লাভ করতাম না। শীঘ্রই আমার খ্রিস্টীয় পরিচয়ের অবনতি ঘটত এবং ঈশ্বরের প্রতি আমার বিশ্বাস দুর্বল হয়ে যেত—আমি আধ্যাত্মিকভাবে নিঃস্ব হওয়ার দিকে এগিয়ে যেতাম।” এটা যেন আমাদের প্রতি কখনোই না ঘটে! একজন ব্যক্তির উদাহরণ বিবেচনা করুন, যিনি যিহোবা সম্বন্ধে সঠিক জ্ঞানে বৃদ্ধি লাভ করেছিলেন আর এর ফলস্বরূপ তাঁর অনুমোদন লাভ করেছিলেন।

“আমি তোমার ব্যবস্থা কেমন ভালবাসি!”

আমাদের বাইবেলের গীতসংহিতার ১১৯ গীতে লিপিবদ্ধ কাব্যিক গান যিহোবার ব্যবস্থা, সাক্ষ্যকলাপ বা অনুস্মারক, নির্দেশমালা, আজ্ঞা ও শাসনকলাপ সম্বন্ধে গীতরচকের অনুভূতি প্রকাশ করে। গীতরচক লিখেছিলেন: “আমি তোমার বিধিকলাপে হর্ষিত হইব, . . . তোমার সাক্ষ্যকলাপ আমার হর্ষজনক।” তিনি আরও লিখেছিলেন: “আমি তোমার ব্যবস্থা কেমন ভালবাসি! তাহা সমস্ত দিন আমার ধ্যানের [“চিন্তার,” NW] বিষয়।”—গীত. ১১৯:১৬, ২৪, ৪৭, ৪৮, ৭৭, ৯৭.

‘হর্ষ’ ও ‘চিন্তা’ অভিব্যক্তিগুলো ঈশ্বরের বাক্য নিয়ে ধ্যান করাকে, বস্তুতপক্ষে, এই ধরনের ধ্যান করে আনন্দিত হওয়াকে ইঙ্গিত করে। এই অভিব্যক্তিগুলো ঐশিক আইন সম্বন্ধে অধ্যয়ন করার জন্য গীতরচকের যে-সুস্পষ্ট ভালবাসা ছিল, সেটার ওপর জোর দেয়। সেই ভালবাসা কেবল গীতরচকের হৃদয় থেকে উপচে পড়া আবেগ নয়। এর পরিবর্তে, যিহোবার বাক্যের অন্তর্দৃষ্টি লাভ করার জন্য ব্যবস্থা নিয়ে ‘তার চিন্তা’ করার আন্তরিক আকাঙ্ক্ষা ছিল। তার মনোভাব থেকে আমরা লক্ষ করি যে, তিনি ঈশ্বরকে এবং তাঁর ইচ্ছাকে যথাসম্ভব সঠিকভাবে জানতে চেয়েছিলেন।

এটা স্পষ্ট যে, ঈশ্বরের বাক্যের জন্য গীতরচকের ভালবাসা তার হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে উদ্ভূত হয়েছিল। আমরা নিজেদের জিজ্ঞেস করতে পারি: ‘আমার বেলায়ও কি সেটা সত্য? প্রতিদিন বাইবেলের কিছু অংশ পড়ে ও বিশ্লেষণ করে আমি কি আনন্দিত হই? আমি কি অধ্যবসায়ের সঙ্গে এবং প্রার্থনাপূর্বক ঈশ্বরের বাক্য পড়ি?’ যদি আমরা এই প্রশ্নগুলোর উত্তরে হ্যাঁ বলতে পারি, তাহলে আমরা “ঈশ্বরের তত্ত্বজ্ঞানে বর্দ্ধিষ্ণু” হচ্ছি।

ইভা মন্তব্য করেন: “আমি সবসময় আমার ব্যক্তিগত অধ্যয়নের গুণগত মানকে উন্নত করার চেষ্টা করি। ‘সেই উত্তম দেশ দেখুন’ (ইংরেজি) ব্রোশারটি পাওয়ার পর থেকে, আমি অধ্যয়নের সময় প্রায় প্রত্যেক বারই এটি ব্যবহার করেছি। আমি বিভিন্ন বিষয় সম্বন্ধে শাস্ত্রের প্রতি অন্তর্দৃষ্টি (ইংরেজি) বই এবং প্রয়োজন অনুযায়ী অন্যান্য রেফারেন্স থেকে পরীক্ষা করার জন্য আরও বেশি চেষ্টা করছি।”

এ ছাড়া, ভইচেখ ও মাউগঝাটার উদাহরণ বিবেচনা করুন, যাদের বেশ কিছু পারিবারিক দায়িত্ব রয়েছে। কীভাবে তারা তাদের তালিকায় ব্যক্তিগত বাইবেল অধ্যয়নকে অন্তর্ভুক্ত করে থাকে? “আমরা যখন পারি, তখন আলাদা আলাদাভাবে ঈশ্বরের বাক্য অধ্যয়নের জন্য সময় করে নিই। এরপর, আমাদের পারিবারিক অধ্যয়নের সময় এবং আমাদের রোজকার কথাবার্তার সময়, আমাদের কাছে যে-বিষয়গুলো আগ্রহজনক বা প্রেরণাদায়ক বলে মনে হয়েছে, সেগুলোর বিষয়ে আমরা কথা বলি।” গভীর ব্যক্তিগত অধ্যয়ন তাদের জন্য প্রচুর আনন্দ নিয়ে এসেছে এবং তাদেরকে ‘তত্ত্বজ্ঞানে বর্দ্ধিষ্ণু হইতে’ সাহায্য করেছে।

গ্রহণ করতে ইচ্ছুক মন নিয়ে অধ্যয়ন করুন

খ্রিস্টান হিসেবে আমরা বিশ্বাস করি যে, ঈশ্বরের ইচ্ছা “এই, যেন সমুদয় মনুষ্য পরিত্রাণ পায়, ও সত্যের তত্ত্বজ্ঞান পর্য্যন্ত পঁহুছিতে পারে।” (১ তীম. ২:৩, ৪) এই বিষয়টা বাইবেল পড়ার এবং তা ‘বুঝিতে’ চেষ্টা করার মূল্য সম্বন্ধে জোর দেয়। (মথি ১৫:১০) সেই লক্ষ্যে একটা সহায়ক হল গ্রহণ করতে ইচ্ছুক মন নিয়ে অধ্যয়ন করা। যখন পৌল প্রাচীন বিরয়াবাসীদের সুসমাচার জানিয়েছিলেন, তখন তারা এই মনোভাবই প্রদর্শন করেছিল: “ইহারা সম্পূর্ণ আগ্রহপূর্ব্বক” বা উৎসুক মন নিয়ে “বাক্য গ্রহণ করিল, আর এ সকল বাস্তবিকই এইরূপ কি না, তাহা জানিবার জন্য প্রতিদিন শাস্ত্র পরীক্ষা করিতে লাগিল।”—প্রেরিত ১৭:১১.

আপনি কি উৎসুক মন থাকার বিষয়ে বিরয়াবাসীদের উদাহরণ অনুসরণ করেন এবং বাইবেল অধ্যয়ন করার সময় আপনার মনকে অপ্রয়োজনীয় বিক্ষেপগুলো থেকে মুক্ত রাখেন? বিরয়াবাসীদের অনুকরণ করার জন্য একজন খ্রিস্টান কাজ করতে পারেন, এমনকি যদিও অতীতে অধ্যয়ন করার বিষয়টাকে তিনি ততটা আনন্দদায়ক বলে মনে না-ও করে থাকেন। অধিকন্তু, বয়স হয়ে গেলে যদিও কিছু লোকের পড়ার ও অধ্যয়ন করার প্রবণতা কমে যায় কিন্তু একজন খ্রিস্টান এই প্রবণতা দেখাবেন না। একজনের বয়স যা-ই হোক না কেন, বিক্ষেপগুলো এড়িয়ে চলার জন্য কাজ করা সম্ভব। আর পড়ার সময় আপনি উৎসুকভাবে তথ্য খুঁজতে পারেন, যাতে আপনি অন্যদেরকেও সেগুলো জানাতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, অধ্যয়নের সময় আপনি যা পড়েছেন বা শিখেছেন, সেটা আপনার সাথি কিংবা কোনো খ্রিস্টান বন্ধুর কাছে বলাকে কি আপনার অভ্যাসে পরিণত করতে পারেন? তা করার ফলে সেই বিষয়গুলো আপনার মন ও হৃদয়ে কার্যকারীভাবে গেঁথে যাবে আর সেইসঙ্গে অন্যদের ওপরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

অধ্যয়নের সময় ঈশ্বরের প্রাচীন দাস ইষ্রার উদাহরণ অনুসরণ করুন, যিনি ‘সদাপ্রভুর ব্যবস্থা অনুশীলন করিতে আপন অন্তঃকরণ সুস্থির করিয়াছিলেন’ বা তৈরি করেছিলেন। (ইষ্রা ৭:১০) আপনি কীভাবে তা করতে পারেন? আপনি অধ্যয়নের উপযোগী এক পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারেন। এরপর, বসুন এবং যিহোবার নির্দেশনা ও জ্ঞান বা প্রজ্ঞার জন্য তাঁর কাছে প্রার্থনা করুন। (যাকোব ১:৫) নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, ‘এই অধ্যয়নের সময় আমি কী শেখার আশা করছি?’ পড়ার সময় মূল ধারণাগুলোর প্রতি সতর্ক থাকুন। আপনি হয়তো এই বিষয়গুলো নোট করে রাখতে চাইতে পারেন অথবা সেই অংশটুকু দাগ দিয়ে রাখতে চাইতে পারেন, যে-অংশটুকু বিশেষভাবে আপনি মনে রাখতে চান। বিবেচনা করুন যে, কীভাবে আপনি এই বিষয়বস্তু প্রচারের সময়, সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় কিংবা সহবিশ্বাসীদের উৎসাহিত করার সময় ব্যবহার করতে পারেন। অধ্যয়নের শেষের দিকে, আপনি যতটুকু বিষয় পড়েছেন, সংক্ষেপে সেটার পুনরালোচনা করুন। সেটা আপনাকে আপনি যা শিখেছেন, তা মনে রাখতে সমর্থ করবে।

ইভা নিজের অধ্যয়নের পন্থা সম্বন্ধে এভাবে বর্ণনা করেন: “বাইবেল পড়ার সময় আমি ক্রস-রেফারেন্স, ওয়াচ টাওয়ার পাবলিকেশনস্‌ ইনডেক্স এবং সিডি-রম-এ ওয়াচটাওয়ার লাইব্রেরি ব্যবহার করি। আমি পরিচর্যায় ব্যবহার করার চিন্তা নিয়ে নিজের জন্য নোট লিখে রাখি।”

কেউ কেউ অনেক বছর ধরে গভীরভাবে অধ্যয়ন করা উপভোগ করেছে, আধ্যাত্মিক বিষয়গুলোতে নিবিষ্ট রয়েছে। (হিতো. ২:১-৫) যদিও, তাদের অনেক দায়িত্ব রয়েছে এবং ব্যক্তিগত অধ্যয়নের জন্য সময় আলাদা রাখা তাদের পক্ষে কঠিন। আপনার বেলায় যদি তা সত্য হয়ে থাকে, তাহলে আপনার তালিকা তৈরি করার সময় আপনি কোন রদবদলগুলো করতে পারেন?

কীভাবে আমি সময় বের করতে পারি?

আপনি সম্ভবত একমত হবেন যে, আপনি যে-বিষয়গুলো পছন্দ করেন, সেগুলোর জন্য সময় বের করা অপেক্ষাকৃত সহজ। অনেকে দেখেছে যে, ব্যক্তিগত অধ্যয়নে নিবিষ্ট থাকার জন্য এক সহায়ক হচ্ছে বাস্তবসম্মত লক্ষ্য যেমন, পুরো বাইবেল পড়ার লক্ষ্য স্থাপন করা। এটা ঠিক যে, দীর্ঘ বংশবৃত্তান্ত, প্রাচীন মন্দিরের বিস্তারিত বর্ণনা কিংবা দুর্বোধ্য ভবিষ্যদ্বাণীগুলো পড়া অনেক কঠিন বলে মনে হতে পারে, যেগুলোকে আমাদের রোজকার জীবনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বলে মনে হয় না। আপনার লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য ব্যবহারিক পদক্ষেপগুলো নেওয়ার চেষ্টা করুন। উদাহরণস্বরূপ, কঠিন বলে মনে হয় বাইবেলের এমন কোনো অংশ পরীক্ষা করার আগে, আপনি সেই অংশের ঐতিহাসিক পটভূমি অথবা ব্যবহারিক প্রয়োগ সম্বন্ধে পড়তে পারেন। এই ধরনের তথ্য ‘ঈশ্বর-নিশ্বসিত প্রত্যেক শাস্ত্রলিপি উপকারী’ (ইংরেজি) বইয়ে পাওয়া যেতে পারে, যে-বইটি প্রায় ৫০টা ভাষায় পাওয়া যাচ্ছে।

বাইবেল পড়ার সময় আপনার কল্পনাশক্তিকে ব্যবহার করা উদ্দীপনামূলক। এটা আপনার মনে এর সঙ্গে যুক্ত চরিত্র ও ঘটনাগুলোর এক ছবি আঁকতে সাহায্য করতে পারে। শুধুমাত্র এই অল্প কয়েকটা পরামর্শ প্রয়োগ করাই সম্ভবত আপনার অধ্যয়ন পর্বকে আরও উপভোগ্য ও পরিতৃপ্তিদায়ক করে তুলতে পারে। ফলস্বরূপ, আপনি অধ্যয়ন করার জন্য সময় বের করতে আরও বেশি উৎসুক হবেন। প্রতিদিন বাইবেল পড়ার অভ্যাস বজায় রাখা আরও বেশি সহজ হবে।

যদিও উপরোক্ত পরামর্শগুলো আমাদেরকে আলাদা আলাদা ব্যক্তি হিসেবে সাহায্য করতে পারে কিন্তু এক ব্যস্ত পরিবার কী করতে পারে? পারিবারিক অধ্যয়নের সম্ভাব্য উপকারগুলো সম্বন্ধে খোলাখুলিভাবে আলোচনা করার জন্য একসঙ্গে বসুন না কেন? সেই আলোচনা থেকে হয়তো বিভিন্ন ব্যবহারিক চিন্তাভাবনা বের হয়ে আসতে পারে যেমন, বাইবেলের কোনো অংশ বিবেচনা করার জন্য প্রতিদিন কিংবা নির্দিষ্ট দিনে কয়েক মিনিট আগে ঘুম থেকে ওঠা। অথবা আপনার আলোচনা হয়তো পারিবারিক তালিকার রদবদলের প্রয়োজনীয়তা সম্বন্ধে তুলে ধরবে। উদাহরণস্বরূপ, কিছু পরিবার একসঙ্গে খাওয়াদাওয়ার পর দৈনিক শাস্ত্রপদ আলোচনা করাকে অথবা বাইবেলের কোনো অংশ পড়াকে ব্যবহারিক বলে মনে করেছে। কেউ টেবিল পরিষ্কার করতে শুরু করার অথবা অন্য কোনো কাজ করার জন্য টেবিল ছেড়ে চলে যাওয়ার আগেই, সেই পরিবার ১০ বা ১৫ মিনিট শাস্ত্র থেকে আলোচনা করে কিংবা বাইবেল থেকে নির্ধারিত অংশ পড়ে থাকে। প্রথম প্রথম, এটা হয়তো কিছুটা কঠিন বলে মনে হতে পারে কিন্তু শীঘ্রই তা পরিবারের জন্য স্বাভাবিক ও খুবই আনন্দদায়ক বিষয় হয়ে উঠতে পারে।

কোন বিষয়টা তাদের পরিবারকে সাহায্য করেছে, সেই সম্বন্ধে ভইচেখ ও মাউগঝাটা ব্যাখ্যা করে: “আগে গুরুত্বহীন ও তুচ্ছ কাজগুলো আমাদের সময় কেড়ে নিত। আমরা ই-মেইল পাঠানোর পিছনে যে-সময় ব্যয় করতাম, তা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এ ছাড়া, আমরা আমাদের বিনোদনের সময়কেও কিছুটা কাটছাঁট করেছিলাম এবং গভীর অধ্যয়ন করার জন্য নির্দিষ্ট দিন ও সময় আলাদা করে রেখেছিলাম।” নিশ্চিতভাবেই এই পরিবার ওই রদবদলগুলোর কারণে আক্ষেপ করে না আর আপনিও আপনার পরিবারের ক্ষেত্রে একই বিষয় সত্য হতে দেখতে পারেন।

সঠিক জ্ঞানে বৃদ্ধি লাভ করা উপকারজনক!

ঈশ্বরের বাক্যের গভীর অধ্যয়ন করা “সৎকর্ম্মে ফলবান্‌” হতে পারে। (কল. ১:১০) তা আপনার জীবনে প্রমাণিত হলে, আপনার উন্নতি সকলের প্রত্যক্ষ হবে। আপনি বাইবেলের সত্যগুলো সম্বন্ধে পুরোপুরি বোধগম্যতাসহ এক আধ্যাত্মিকমনা ব্যক্তি হয়ে উঠবেন। আপনার সিদ্ধান্তগুলো আরও বেশি ভারসাম্যপূর্ণ হবে এবং অন্যদেরকে সাহায্য করার জন্য আপনি আরও দক্ষ হয়ে উঠবেন, চরমে যাওয়া থেকে মুক্ত হবেন, যা প্রায়ই সেই ব্যক্তিদের বৈশিষ্ট্য, যাদের জ্ঞান নেই। সর্বোপরি, আপনি ঈশ্বরের আরও নিকটবর্তী হবেন। তাঁর গুণাবলি সম্বন্ধে আপনার উপলব্ধিবোধ আরও গভীর হবে এবং সেটা আপনি তাঁর সম্বন্ধে অন্যদের কাছে বলার সময়ে স্পষ্ট হয়ে উঠবে।—১ তীম. ৪:১৫; যাকোব ৪:৮.

আপনার বয়স বা অভিজ্ঞতা যা-ই হোক না কেন, ক্রমাগত ঈশ্বরের বাক্যে আনন্দ খুঁজে নেওয়ার এবং গ্রহণ করতে ইচ্ছুক মন নিয়ে গভীর অধ্যয়নে রত থাকার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করুন। আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন যে, যিহোবা আপনার প্রচেষ্টাগুলোকে ভুলে যাবেন না। (ইব্রীয় ৬:১০) তিনি আপনার ওপর তাঁর প্রচুর আশীর্বাদ বর্ষণ করবেন।

[১৩ পৃষ্ঠার বাক্স]

আমরা যখন ‘তত্ত্বজ্ঞানে বর্দ্ধিষ্ণু হই,’ তখন . . .

আমরা ঈশ্বরের প্রতি আমাদের বিশ্বাসকে শক্তিশালী করি এবং “প্রভুর [“যিহোবার,” NW]” যোগ্যরূপে চলি।—কল. ১:৯, ১০

আমরা জ্ঞান বা অন্তর্দৃষ্টি লাভ করি, বিচক্ষণতাকে ব্যবহার করতে সমর্থ হই এবং ব্যবহারিক সিদ্ধান্তগুলো গ্রহণ করি।—গীত. ১১৯:৯৯

আমরা অন্যদেরকে যিহোবার নিকটবর্তী হতে সাহায্য করে আরও বেশি আনন্দ লাভ করি।—মথি ২৮:১৯, ২০

[১৪ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

অধ্যয়নের সহায়ক পরিবেশ খুঁজে পাওয়া কঠিন হতে পারে, তবে তা কাম্য

[১৫ পৃষ্ঠার চিত্র]

কিছু পরিবার খাওয়াদাওয়ার পর বাইবেলের কোনো অংশ পড়ে থাকে