Privacy Settings

To provide you with the best possible experience, we use cookies and similar technologies. Some cookies are necessary to make our website work and cannot be refused. You can accept or decline the use of additional cookies, which we use only to improve your experience. None of this data will ever be sold or used for marketing. To learn more, read the Global Policy on Use of Cookies and Similar Technologies. You can customize your settings at any time by going to Privacy Settings.

আন্তিয়খিয়াতে পরিত পিতর যিহুদি খস্টানদের সগ খাওয়া-দাওয়া করছন কিন্তু পরজাতীয় খস্টানদের সগ করছন না

ন্যায়বিচার সম্বন্ধে আপনার কি যিহোবার মতো দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে?

ন্যায়বিচার সম্বন্ধে আপনার কি যিহোবার মতো দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে?

“আমি সদাপ্রভুর নাম প্রচার করিব . . . তিনি বিশ্বাস্য ঈশ্বর, তাঁহাতে অন্যায় নাই।” —দ্বিতীয়. ৩২:৩, ৪.

গান সংখ্যা: ১৫, 

১, ২. (ক) নাবোৎ ও তার ছেলেরা কোন অবিচার ভোগ করেছিলেন? (খ) এই প্রবন্ধে আমরা কোন দুটো গুণ সম্বন্ধে বিবেচনা করব?

 দুই জন দুষ্ট লোক একজন ব্যক্তিকে এক গুরুতর অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত করেন। তাদের এই অভিযোগ মিথ্যা। কিন্তু, সেই ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। কল্পনা করে দেখুন, যে-লোকেরা ন্যায়বিচার ভালোবাসে, তারা যখন সেই নির্দোষ ব্যক্তি ও তার ছেলেদের প্রস্তরাঘাতে মৃত্যুবরণ করতে দেখেছিল, তখন তাদের কেমন লেগেছিল! এটা নিছক কোনো গল্প নয়। এই ঘটনা নাবোৎ নামে যিহোবার একজন বিশ্বস্ত দাসের প্রতি সত্যিই ঘটেছিল, যিনি ইস্রায়েলের রাজা আহাবের শাসনের সময়ে বেঁচে ছিলেন।—১ রাজা. ২১:১১-১৩; ২ রাজা. ৯:২৬.

এই প্রবন্ধে আমরা নাবোতের প্রতি কী ঘটেছিল, তা নিয়ে আলোচনা করব। এ ছাড়া, আমরা প্রথম শতাব্দীর একজন বিশ্বস্ত প্রাচীনের এক গুরুতর ভুল নিয়েও আলোচনা করব। এই দুটো উদাহরণ আমাদের বুঝতে সাহায্য করবে, আমরা যদি ন্যায়বিচার সম্বন্ধে যিহোবার দৃষ্টিভঙ্গি অনুকরণ করতে চাই, তা হলে কেন নম্রতা ও ক্ষমা করার মনোভাব অত্যন্ত জরুরি।

এক চরম অবিচার

৩, ৪. নাবোৎ কী ধরনের ব্যক্তি ছিলেন এবং কেন তিনি রাজা আহাবের কাছে তার দ্রাক্ষাক্ষেত্র বিক্রি করার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন?

নাবোৎ এমনকী সেইসময়ও যিহোবার প্রতি বিশ্বস্ততা বজায় রেখেছিলেন, যখন বেশিরভাগ ইস্রায়েলীয় রাজা আহাব ও তার স্ত্রী, দুষ্ট রানি ঈষেবলের মন্দ উদাহরণ অনুসরণ করছিল। তারা মিথ্যা দেবতা বালের উপাসনা করত। আর যিহোবা ও তাঁর আইনের প্রতি তাদের কোনো সম্মানই ছিল না। কিন্তু, নাবোৎ যিহোবার সঙ্গে তার সম্পর্ককে এমনকী নিজের জীবনের থেকেও মূল্যবান বলে গণ্য করেছিলেন।

প্রথম রাজাবলি ২১:১-৩ পদ পড়ুন। আহাব যখন নাবোতের কাছ থেকে তার দ্রাক্ষাক্ষেত্র ক্রয় করার কিংবা সেটার পরিবর্তে তাকে এক উত্তম দ্রাক্ষাক্ষেত্র দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তখন নাবোৎ সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। কেন? তিনি সম্মানের সঙ্গে ব্যাখ্যা করেছিলেন: “আমি যে আপন পৈতৃক অধিকার আপনাকে দিই, সদাপ্রভু ইহা নিবারণ করুন।” নাবোৎ রাজা আহাবের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন কারণ ইস্রায়েলীয়দের জন্য তাদের পৈতৃক অধিকার স্থায়ীভাবে বিক্রি করে দেওয়া যিহোবার আইনের বিরুদ্ধে ছিল। (লেবীয়. ২৫:২৩; গণনা. ৩৬:৭) স্পষ্টতই, নাবোৎ যিহোবার প্রতি বাধ্য ছিলেন।

৫. নাবোতের দ্রাক্ষাক্ষেত্র লাভ করার জন্য ঈষেবল কী করেছিলেন?

নাবোৎ যখন তার দ্রাক্ষাক্ষেত্র বিক্রি করার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, তখন রাজা আহাব ও তার স্ত্রী এক ভয়ানক কাজ করেছিলেন। সেই দ্রাক্ষাক্ষেত্র লাভ করার জন্য রানি ঈষেবল দুই জন লোককে আদেশ দিয়েছিলেন, যেন তারা নাবোৎকে এমন অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত করেন, যা আসলে তিনি করেননি। ফল স্বরূপ, নাবোৎ ও তার ছেলেদের হত্যা করা হয়েছিল। এই চরম অবিচার দেখে যিহোবা কী করেছিলেন?

ঈশ্বরের ন্যায়বিচার

৬, ৭. কীভাবে যিহোবা দেখিয়েছিলেন যে, তিনি ন্যায়বিচার ভালোবাসেন এবং কেন এটা দেখে নাবোতের পরিবার ও বন্ধুবান্ধব অনেক সান্ত্বনা লাভ করেছিল?

যিহোবা সঙ্গেসঙ্গে এলিয়কে রাজা আহাবের কাছে পাঠিয়েছিলেন। এলিয় আহাবকে বলেছিলেন যে, তিনি একজন নরঘাতক ও চোর। এই বিষয়ে যিহোবার সিদ্ধান্ত কী ছিল? আহাব, তার স্ত্রী ও তার ছেলেদের হত্যা করা হবে, ঠিক যেমন নাবোৎ ও তার ছেলেদের হত্যা করা হয়েছিল।—১ রাজা. ২১:১৭-২৫.

আহাব যে-ভয়ানক কাজ করেছিলেন, সেটা দেখে নাবোতের পরিবার ও বন্ধুবান্ধব শোক করেছিল। কিন্তু, যিহোবা সেই অবিচার লক্ষ করেছিলেন এবং দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। এই বিষয়টা দেখে তারা নিশ্চয়ই অনেক সান্ত্বনা লাভ করেছিল। কিন্তু, এরপর যা ঘটেছিল, সেটা দেখে তাদের নম্রতা ও যিহোবার প্রতি তাদের আস্থা সম্ভবত পরীক্ষিত হয়েছিল।

৮. আহাব যখন যিহোবার বার্তা জানতে পেরেছিলেন, তখন তিনি কেমন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন এবং এর ফল কী হয়েছিল?

আহাব যখন তার বিষয়ে যিহোবার সিদ্ধান্ত সম্বন্ধে জানতে পেরেছিলেন, তখন তিনি “আপন বস্ত্র ছিঁড়িলেন, এবং গায়ে চট বাঁধিয়া উপবাস করিলেন, চটে শয়ন করিলেন, এবং ধীরে ধীরে বেড়াইলেন।” আহাব নিজেকে অবনত করেছিলেন! এর ফল কী হয়েছিল? যিহোবা এলিয়কে বলেছিলেন, “সে আমার সাক্ষাতে আপনাকে অবনত করিয়াছে, এই জন্য আমি তাহার জীবনকালে ঐ অমঙ্গল ঘটাইব না, কিন্তু তাহার পুত্ত্রের জীবনকালে তাহার কুলের উপরে সেই অমঙ্গল উপস্থিত করিব।” (১ রাজা. ২১:২৭-২৯; ২ রাজা. ১০:১০, ১১, ১৭) যিহোবা, যিনি “চিত্তের পরীক্ষা করেন” অর্থাৎ আমাদের সম্বন্ধে ভালোভাবে জানেন, আহাবের প্রতি করুণা দেখিয়েছিলেন।—হিতো. ১৭:৩.

নম্রতা এক সুরক্ষা হিসেবে কাজ করে

৯. কেন নম্র মনোভাব হয়তো নাবোতের পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের জন্য এক সুরক্ষা হিসেবে কাজ করেছিল?

নাবোতের পরিবার ও বন্ধুবান্ধব যখন জানতে পেরেছিল, আহাবের জীবনকালে তার পরিবার শাস্তি পাবে না, তখন ঈশ্বরের প্রতি তাদের বিশ্বাস হয়তো পরীক্ষিত হয়েছিল। কিন্তু, নম্র মনোভাব হয়তো তাদের বিশ্বাসকে রক্ষা করতে সাহায্য করেছিল। কেন? তারা যদি নম্রতা দেখিয়ে থাকে, তা হলে তারা হয়তো যিহোবার উপাসনা করে গিয়েছিল এবং এই আস্থা রেখেছিল যে, যিহোবার পক্ষে অন্যায় করা অসম্ভব। (পড়ুন, দ্বিতীয় বিবরণ ৩২:৩, ৪.) ভবিষ্যতে নাবোতের পরিবার পুনরুত্থানে তাদের প্রিয়জনদের দেখার আশীর্বাদ লাভ করবে। এটা হবে নাবোৎ ও তার ছেলেদের জন্য এক নিখুঁত ন্যায়বিচার। (ইয়োব ১৪:১৪, ১৫; যোহন ৫:২৮, ২৯) একজন নম্র ব্যক্তি জানেন, “ঈশ্বর সমস্ত কর্ম্ম এবং ভাল হউক, কি মন্দ হউক, সমস্ত গুপ্ত বিষয়, বিচারে আনিবেন।” (উপ. ১২:১৪) যিহোবা এমন সমস্ত বিষয় বিবেচনা করেন, যেগুলো আমরা জানি না। তাই, নম্রতা যিহোবার প্রতি আমাদের বিশ্বাস হারিয়ে না ফেলার জন্য সুরক্ষা হিসেবে কাজ করে।

১০, ১১. (ক) কোন পরিস্থিতিগুলো ন্যায়বিচার সম্বন্ধে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে পরীক্ষায় ফেলতে পারে? (খ) কোন কোন উপায়ে নম্রতা আমাদের জন্য সুরক্ষা হিসেবে কাজ করবে?

১০ প্রাচীনরা যদি এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেন, যেটা আপনি বুঝতে পারেন না অথবা যেটার সঙ্গে আপনি একমত নন, তা হলে আপনি কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাবেন? উদাহরণ স্বরূপ, আপনি অথবা আপনার কোনো প্রিয়জন যদি যিহোবার সেবায় কোনো কার্যভার হারিয়ে ফেলেন, তা হলে আপনি কী করবেন? আপনার বিবাহসাথি, আপনার ছেলে অথবা মেয়ে কিংবা আপনার কোনো ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে যদি সমাজচ্যুত করা হয় এবং আপনি প্রাচীনদের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত না হন, তা হলে? আপনি যদি মনে করেন, পাপ করেছেন এমন একজন ব্যক্তির প্রতি করুণা দেখানো প্রাচীনদের জন্য ভুল হয়েছে, তা হলে আপনি কী করবেন? এই পরিস্থিতিগুলো যিহোবার প্রতি ও সেইসঙ্গে বর্তমানে মণ্ডলীকে তিনি যেভাবে সংগঠিত করেছেন, সেটার প্রতি আমাদের বিশ্বাসকে পরীক্ষায় ফেলতে পারে। এই পরিস্থিতিগুলোর মধ্যে কোনো একটার কারণে যদি আপনি পরীক্ষিত হন, তা হলে নম্রতা কীভাবে আপনার জন্য সুরক্ষা হিসেবে কাজ করতে পারে? আসুন, আমরা দুটো উপায় বিবেচনা করি।

মডলীতে পাচীনদের একটা সিদ্ধান্ত পড়ে শোনানো হচ্ছ আর তা শুনে একজন ভাই কিছুটা অবাক হয়ে যান

প্রাচীনরা যদি এমন কোনো সিদ্ধান্ত সম্বন্ধে ঘোষণা করেন, যেটার সঙ্গে আপনি একমত নন, তা হলে আপনি কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাবেন? (১০, ১১ অনুচ্ছেদ দেখুন)

১১ প্রথমত, আমরা যদি নম্রতা দেখাই, তা হলে আমরা এই বিষয়ে একমত হব যে, আমরা সমস্ত তথ্য জানি না। এমনকী যদিও আমাদের মনে হতে পারে যে, একটা পরিস্থিতি সম্বন্ধে আমরা সমস্ত কিছু জানি কিন্তু একমাত্র যিহোবাই জানেন, একজন ব্যক্তির হৃদয়ে আসলে কী রয়েছে। (১ শমূ. ১৬:৭) আমরা যখন এই বিষয়টা মনে রাখব, তখন আমরা নম্রভাবে স্বীকার করব যে, আমাদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে এবং আমাদের চিন্তাভাবনায় রদবদল করতে হবে। দ্বিতীয়ত, আমরা যদি কোনো অবিচার লক্ষ করি অথবা ভোগ করি, তা হলে নম্রতা আমাদের বাধ্য হতে ও ধৈর্যশীল মনোভাব দেখাতে এবং পরিস্থিতি সংশোধন করার জন্য যিহোবাতে অপেক্ষা করতে সাহায্য করবে। বাইবেল বলে: “ঈশ্বর-ভীত লোকদের . . . মঙ্গল হইবে।” বাইবেল এও বলে: “কিন্তু দুষ্ট লোকের মঙ্গল হইবে না, ও সে দীর্ঘকাল থাকিবে না।” (উপ. ৮:১২, ১৩) আমরা যদি নম্র মনোভাব বজায় রাখি, তা হলে এর সঙ্গে জড়িত আমরা প্রত্যেকেই উপকার লাভ করব।—পড়ুন, ১ পিতর ৫:৫.

মণ্ডলীতে কপটতার এক ঘটনা

১২. আমরা এখন কোন বিবরণ বিবেচনা করব এবং কেন?

১২ প্রথম শতাব্দীতে সুরিয়ার আন্তিয়খিয়ার খ্রিস্টানরা এমন একটা পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিল, যা তাদের নম্রতা ও সেইসঙ্গে ক্ষমা করার মনোভাবকে পরীক্ষার মুখে ফেলেছিল। আসুন আমরা সেই বিবরণটা বিবেচনা করি এবং ক্ষমা করার বিষয়ে আমাদের মনোভাব পরীক্ষা করার জন্য সেটা ব্যবহার করি। এটা হয়তো আমাদের বুঝতে সাহায্য করবে যে, কেন যিহোবা তাঁর ন্যায়বিচারের মানকে খর্ব না করেই অসিদ্ধ মানুষদের ব্যবহার করতে পারেন।

১৩, ১৪. প্রেরিত পিতর কোন কোন কার্যভার লাভ করেছিলেন এবং কীভাবে তিনি সাহসী মনোভাব দেখিয়েছিলেন?

১৩ প্রেরিত পিতর এমন একজন প্রাচীন ছিলেন, যিনি প্রথম শতাব্দীর বেশিরভাগ খ্রিস্টানের কাছে খুবই পরিচিত ছিলেন। তিনি যিশুর একজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন এবং তাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কার্যভার দেওয়া হয়েছিল। (মথি ১৬:১৯) উদাহরণ স্বরূপ, ৩৬ সালে পিতরকে কর্ণীলিয় ও সেইসঙ্গে তার পরিবারের প্রত্যেকের কাছে প্রচার করার কার্যভার দেওয়া হয়েছিল। কেন এটা এক বিশেষ কার্যভার ছিল? কারণ কর্ণীলিয় যিহুদি ছিলেন না; তিনি ছিলেন একজন অচ্ছিন্নত্বক পরজাতীয় ব্যক্তি। কর্ণীলিয় এবং তার পরিবারের প্রত্যেকে যখন পবিত্র আত্মা লাভ করেছিলেন, তখন পিতর উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন যে, তারা খ্রিস্টান হিসেবে বাপ্তিস্ম নিতে পারেন। তিনি বলেছিলেন: “এই যে লোকেরা আমাদেরই ন্যায় পবিত্র আত্মা প্রাপ্ত হইয়াছেন, কেহ কি জল নিবারণ করিয়া ইহাঁদের বাপ্তাইজিত হইবার বাধা দিতে পারে?”—প্রেরিত ১০:৪৭.

১৪ উনপঞ্চাশ সালে, প্রেরিতরা এবং যিরূশালেমের প্রাচীনরা এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য একত্রিত হয়েছিলেন যে, পরজাতীয় খ্রিস্টানদের ত্বকচ্ছেদ করার প্রয়োজন আছে কি না। এই সভায় পিতর সাহসের সঙ্গে ভাইদের মনে করে দিয়েছিলেন যে, তিনি নিজে অচ্ছিন্নত্বক পরজাতীয়দের পবিত্র আত্মা লাভ করতে দেখেছেন। পিতরের এই অভিজ্ঞতাই পরিচালোকগোষ্ঠীকে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করেছিল। (প্রেরিত ১৫:৬-১১, ১৩, ১৪, ২৮, ২৯) পিতর সাহসের সঙ্গে সেই তথ্যগুলো তুলে ধরেছিলেন বলে, যিহুদি এবং পরজাতীয় খ্রিস্টান উভয়ই নিশ্চয়ই অনেক কৃতজ্ঞ হয়েছিলেন। প্রথম শতাব্দীর সেই খ্রিস্টানদের পক্ষে ওই বিশ্বস্ত ও পরিপক্ব ব্যক্তির প্রতি আস্থা গড়ে তোলা নিশ্চয়ই খুব সহজ হয়ে উঠেছিল!—ইব্রীয় ১৩:৭.

১৫. সুরিয়ার আন্তিয়খিয়াতে থাকাকালীন পিতর কোন ভুল করেছিলেন? (শুরুতে দেওয়া ছবিটা দেখুন।)

১৫ যিরূশালেমে সেই সভার কিছুদিন পরেই, পিতর সুরিয়ার আন্তিয়খিয়াতে গিয়েছিলেন। সেখানে থাকাকালীন তিনি পরজাতীয় ভাই-বোনদের সঙ্গে সময় কাটিয়েছিলেন। আমরা কল্পনা করতে পারি, সেই ভাই-বোনেরা পিতরের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা লাভ করে কতটা আনন্দিত হয়েছিল! কিন্তু, পিতর যখন হঠাৎ করে তাদের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করা বন্ধ করে দিয়েছিলেন, তখন তারা নিশ্চয়ই খুবই অবাক হয়েছিল এবং দুঃখ পেয়েছিল। পিতর বার্ণবা-সহ অন্যান্য যিহুদি খ্রিস্টানদের একই বিষয় করার জন্য প্রভাবিত করেছিলেন। কেন এই পরিপক্ব খ্রিস্টান প্রাচীন এইরকম এক গুরুতর ভুল করেছিলেন, যেটা কিনা মণ্ডলীকে বিভক্ত করে দিতে পারত? আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, এই ঘটনা থেকে আমরা কী শিখতে পারি, যেটা আমাদের সেইসময় সাহায্য করতে পারে, যখন আমরা কোনো প্রাচীনের কথা বা কাজের কারণে দুঃখ পাই?

১৬. কীভাবে পিতরকে সংশোধন করা হয়েছিল এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে কোন প্রশ্নগুলো উত্থাপিত হয়?

১৬ গালাতীয় ২:১১-১৪ পদ পড়ুন। পিতর লোকেদের ভয়ের কারণে এমনটা করেছিলেন। (হিতো. ২৯:২৫) পিতর জানতেন, পরজাতীয়দের সম্বন্ধে যিহোবা কেমন বোধ করেন। তা সত্ত্বেও, তিনি এই ভেবে ভয় পেয়েছিলেন যে, তাকে পরজাতীয় খ্রিস্টানদের সঙ্গে মেলামেশা করতে দেখে যিরূশালেম থেকে আসা ছিন্নত্বক যিহুদি খ্রিস্টানরা তাকে নীচু চোখে দেখবে। প্রেরিত পৌল পিতরকে বলেছিলেন যে, তিনি একজন কপট ব্যক্তির মতো ব্যবহার করছেন। কেন? কারণ ৪৯ সালে যিরূশালেমের সভায় পৌল নিজে পিতরকে পরজাতীয়দের পক্ষে কথা বলতে শুনেছিলেন। (প্রেরিত ১৫:১২) যে-পরজাতীয় খ্রিস্টানদের পিতর অসন্তুষ্ট করেছিলেন, তারা কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাবে? তারা কি সেটাকে বিঘ্ন পাওয়ার কারণ হতে দেবে? পিতর কি তার এই ভুলের কারণে তার সব কার্যভার হারাবেন?

ক্ষমাশীল হোন

১৭. পিতর কীভাবে যিহোবার ক্ষমা থেকে উপকার লাভ করেছিলেন?

১৭ পিতর নম্র ছিলেন আর তাই তিনি পৌলের সংশোধন মেনে নিয়েছিলেন। শাস্ত্রে এমন কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায় না যে, পিতর তার কোনো কার্যভার হারিয়েছিলেন। বরং, পরবর্তী সময়ে ঈশ্বর তাকে দুটো চিঠি লেখার জন্য অনুপ্রাণিত করেছিলেন, যেগুলো পরে বাইবেলের অংশ হয়ে উঠেছিল। তার দ্বিতীয় চিঠিতে তিনি এমনকী পৌলকে “আমাদের প্রিয় ভ্রাতা” বলে উল্লেখ করেছিলেন। (২ পিতর ৩:১৫) পিতরের ভুলের কারণে পরজাতীয় খ্রিস্টানরা নিশ্চয়ই অনেক দুঃখ পেয়েছিল। কিন্তু, মণ্ডলীর মস্তক যিশু তাকে ব্যবহার করে গিয়েছিলেন। (ইফি. ১:২২) মণ্ডলীর ভাই-বোনেরা পিতরকে ক্ষমা করার মাধ্যমে যিশু ও তাঁর পিতাকে অনুকরণ করার সুযোগ লাভ করেছিল। আমরা আশা করতে পারি, কেউই সেই অসিদ্ধ মানুষের ভুলকে নিজেদের বিঘ্নের কারণ হতে দেয়নি।

১৮. কখন আমাদের হয়তো ন্যায়বিচার সম্বন্ধে যিহোবার দৃষ্টিভঙ্গি অনুকরণ করতে হবে?

১৮ প্রথম শতাব্দীতে খ্রিস্টীয় মণ্ডলীতে যেমন কোনো প্রাচীনই সিদ্ধ ছিলেন না, তেমনই বর্তমানেও খ্রিস্টীয় মণ্ডলীতে কোনো প্রাচীনই সিদ্ধ নন। বাইবেল বলে, “আমরা সকলে অনেক প্রকারে উছোট খাই” বা ভুল করে থাকি। (যাকোব ৩:২) যদিও এটা স্বীকার করা খুবই সহজ, কিন্তু কোনো ভাইয়ের অসিদ্ধতার কারণে যখন আমরা ব্যক্তিগতভাবে কষ্ট পাব, তখন আমরা কী করব? আমরা কি ন্যায়বিচার সম্বন্ধে যিহোবার দৃষ্টিভঙ্গি অনুকরণ করব? উদাহরণ স্বরূপ, কোনো প্রাচীন যদি এমন এক মন্তব্য করেন, যেটার মধ্যে পক্ষপাতিত্বের মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে বলে আমরা মনে করি, তা হলে আমরা কী করব? কোনো প্রাচীন যদি বিবেচনাহীনভাবে এমন কিছু বলেন, যেটা আপনাকে অসন্তুষ্ট করে অথবা দুঃখ দেয়, তা হলে সেটাকে কি আপনি বিঘ্নের কারণ হতে দেবেন? সেই ভাই আর প্রাচীন হিসেবে সেবা করার যোগ্য নন, দ্রুত এইরকম চিন্তা করার পরিবর্তে, আপনি কি ধৈর্য ধরে মণ্ডলীর মস্তক যিশুতে অপেক্ষা করবেন? সেই ভুলের উপর মনোযোগ দেওয়ার পরিবর্তে, আপনি কি সেই ভাইয়ের বহু বছরের বিশ্বস্ত সেবার কথা মনে করবেন? আপনার বিরুদ্ধে পাপ করেছেন, এমন একজন ভাই যদি প্রাচীন হিসেবে সেবা করে চলেন অথবা এমনকী আরও কার্যভার লাভ করেন, তা হলে আপনি কি তাকে দেখে খুশি হবেন? আপনার যদি ক্ষমা করার মনোভাব থাকে, তা হলে এর মাধ্যমে আপনি দেখাবেন যে, আপনি ন্যায়বিচার সম্বন্ধে যিহোবার দৃষ্টিভঙ্গি অনুকরণ করছেন।—পড়ুন, মথি ৬:১৪, ১৫.

১৯. কী করার জন্য আমাদের দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হওয়া উচিত?

১৯ যেহেতু আমরা ন্যায়বিচার ভালোবাসি, তাই আমরা সেই দিনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে আছি, যখন শয়তান ও তার দুষ্ট বিধিব্যবস্থার কারণে ঘটা সমস্ত অবিচার যিহোবা পুরোপুরিভাবে দূর করে দেবেন। (যিশা. ৬৫:১৭) সেই সময় না আসা পর্যন্ত, আমরা যখন অবিচার ভোগ করি, তখন আসুন আমরা নম্রভাবে এই বিষয়টা স্বীকার করি যে, আমরা হয়তো সমস্ত তথ্য জানি না। এ ছাড়া, আসুন আমরা সেই ব্যক্তিদের উদারভাবে ক্ষমা করি, যারা আমাদের বিরুদ্ধে পাপ করে। আমরা যদি তা করি, তা হলে আমরা ন্যায়বিচার সম্বন্ধে যিহোবার দৃষ্টিভঙ্গি অনুকরণ করব।